লাইলসের কথায় খেপেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাস্কেটবল তারকারা
উসাইন বোল্টের বিদায়ের পর কেমন ম্যাড়মেড়ে হয়ে গিয়েছিল বিশ্ব অ্যাথলেটিকস। ট্র্যাকে তো বটেই, ট্র্যাকের বাইরেও ঝড় তোলার মতো চরিত্র যে ছিল না কোনো। সেই শূন্যতা বোধ হয় এবার দূর হচ্ছে। হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে পরশু শেষ হওয়া বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের সব আলো কেড়ে নেওয়া নোয়াহ লাইলস মাঠের বাইরেও যে ঝড় তুলে ফেললেন। ‘ট্রেবল’ জিতে বোল্টের কীর্তি মনে করিয়ে দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের এই স্প্রিন্টার খেপিয়ে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের এনবিএ তারকাদের।
আমাকে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি যন্ত্রণা দেয়, সেটি হলো এনবিএর ফাইনাল দেখা। ওরা নিজেদের ‘‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন’’ দাবি করে। কিসের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন? যুক্তরাষ্ট্রের?
বুদাপেস্টে বিশ্বজয়ের পর লাইলস বিশ্বের ১ নম্বর বাস্কেটবল লিগ এনবিএকে খোঁচা মেরে কথা বলেন। এনবিএ চ্যাম্পিয়ন দলগুলো নিজেদের ‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন’ দাবি করে! এতে যে সত্যিকারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের কীর্তির অবমাননা হয়, সেটিই বলেছিলেন লাইলস, ‘আমাকে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি যন্ত্রণা দেয়, সেটি হলো এনবিএর ফাইনাল দেখা। ওরা নিজেদের ‘‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন’’ দাবি করে। কিসের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন? যুক্তরাষ্ট্রের?’
লাইলস আরও বলেন, ‘আমাকে ভুল বুঝবেন না, আমি যুক্তরাষ্ট্রকে ভালোবাসি। তবে যুক্তরাষ্ট্র তো বিশ্ব নয়। বিশ্ব তো আমরা (অ্যাথলেটিকস)। প্রায় সব দেশই সেখানে অংশ নেয়, লড়াই করে, নিজ দেশের পতাকা ওড়ায়। এনবিএতে পতাকা কোথায়?’
বিশ্বসেরা সব বাস্কেটবল খেলোয়াড়দের মেলা বসে এনবিএতে। ফ্র্যাঞ্চাইজি এই টুর্নামেন্টে মাত্র একটি দলই যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের। টরন্টো র্যাপটরস নামে কানাডার সেই দল মাত্র একবারই যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে নিতে পেরেছে এনবিএর ট্রফিটাকে (২০১৯ সালে)।
সর্বশেষ পাঁচ মৌসুমে এনবিএর মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার বা সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের কেউ। তবে শেষ পর্যন্ত তো এটি যুক্তরাষ্ট্রের ঘরোয়া টুর্নামেন্টই। সেই টুর্নামেন্টের দলগুলো কীভাবে নিজেদের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দাবি করে, সেটিই বুঝতে পারেন না লাইলস।
কিন্তু লাইলসের যুক্তি মানবেন কেন এনবিএ তারকারা। তাঁরা পাল্টা যুক্তি দিয়ে লাইলসকে আক্রমণ করছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তাঁদের যুক্তি—যেহেতু এনবিএতে বিশ্বের সেরা লিগ আর এখানে বাস্কেটবলের সব বড় তারকা খেলে থাকেন, তাই বিশ্বসেরার মর্যাদা তাঁরা পেতেই পারেন।
দুবারের এনবিএ চ্যাম্পিয়ন, দুবার এনবিএ ফাইনালে সেরা খেলোয়াড় ও একবারের এমভিপি কেভিন ডুরান্ড লিখেছেন, ‘কেউ এই ভাইটাকে বোঝান।’
চারবার এনবিএ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পাওয়া ড্রেমন্ড গ্রিন লাইলসের উদ্দেশে লিখেছেন, ‘যখন বুদ্ধিমান মানুষটাও ভুল পথে যায়।’ ফিনিক্স সানসের ডেভিন বুকার শুধু কপালে হাত দেওয়া একটি ইমোজি দিয়েই কাজ সেরেছেন।
এনবিএর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ডেনভার নাগেটসের অ্যারন গর্ডন তো রীতিমতো চ্যালেঞ্জই জানিয়ে বসেছেন লাইলসকে, ‘যা–ই হোক…আমি ২০০ মিটারে এই বন্ধুর সঙ্গে লড়তে চাই।’
যুক্তরাষ্ট্রে অবশ্য শুধু এনবিএ নয়, বেসবল লিগ, মেজর লিগ বেসবল বা এমএলবি চ্যাম্পিয়নরাও নিজেদের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দাবি করে। লিগটির বেস্ট অব সেভেন ফাইনাল তো ওয়ার্ল্ড সিরিজ নামেই পরিচিত।