আগামীকাল হকির প্লে–অফ হচ্ছে না, পরে হলে আপত্তি নেই আবাহনী-মেরিনার্সের
ঘটনাবহুল প্রিমিয়ার হকি লিগের শিরোপার নিষ্পত্তি হয়ে যেতে পারত গতকালই। লিগের নির্ধারিত শেষ দিনে আবাহনীকে হারালেই চ্যাম্পিয়ন হতো মোহামেডান। ২ গোলে পিছিয়ে সাদা–কালোরা ৩–২ গোলে এগিয়ে গিয়ে জয়ও দেখছিল। কিন্তু এরপরই মারামারির সূত্রপাত। তারই জেরে ওমানের আম্পায়ার আবাহনীর একজনকে এবং মোহামেডানের দুজনকে লাল কার্ড দেন। কিন্তু মোহামেডান দুজনের লাল কার্ড মানেনি। এ নিয়ে শেষ পর্যন্ত মোহামেডান খেলতে অস্বীকৃতি জানালে ১৭ মিনিট আগেই পরিত্যক্ত হয়ে ম্যাচ। ৫-০ গোলে জয়ী ঘোষণা করা হয় আবাহনীকে।
আবাহনী ও মেরিনার্সের পয়েন্ট সমান ৩৭ হয়ে যাওয়ায় শিরোপা নিষ্পত্তির প্রশ্নে বাইলজ অনুযায়ী এই দুই দলের মধ্যে প্লে-অফ হওয়ার কথা। আগামীকাল বিকেল চারটায় সেই প্লে-অফ খেলার জন্য গতরাতেই দুই ক্লাবকে চিঠি দেয় ফেডারেশন। কিন্তু আগামীকাল যে প্লে-অফ হচ্ছে না, তা একরকম নিশ্চিতই। কারণ, দুই ক্লাবের ৬ জন খেলোয়াড় আগামীকালই বিমানবাহিনীর হয়ে ভারত সফরে যাচ্ছেন। ১ মে তাঁরা ফিরে এলে ম্যাচটি খেলতে আপত্তি নেই দুই ক্লাবেরই।
যোগাযোগ করলে আবাহনীর ম্যানেজার মাহবুব হারুন আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ফেডারেশনকে চিঠি দিচ্ছি, আগামীকাল আমাদের পক্ষে খেলা সম্ভব নয়। কারণ, আমাদের দুই গোলকিপারসহ চারজন খেলোয়াড় বিমানবাহিনীর সঙ্গে আগামীকালই ভারতে প্রীতি ম্যাচ খেলতে যাবে। ওই চারজন বিমানবাহিনীর সদস্য। তাতে আছে দুই গোলকিপার বিপ্লব কুজুর আর সজীবুর রহমান। তাঁদের ছাড়া আমরা ম্যাচ খেলব কীভাবে!’
তবে আবাহনী বলছে না যে একেবারেই খেলবে না প্লে-অফ। বিমানবাহিনী ১ মে ফিরে এলে যেকোনো দিন প্লে-অফটি খেলতে আবাহনী রাজি। এমনটা জানিয়ে মাহবুব হারুন বলেছেন, ‘আমরা কিন্তু বিদেশিদের ছাড়িনি। চার খেলোয়াড় বিমানবাহিনীর সঙ্গে ভারত না গেলে এখনই খেলতে পারতাম। তবে ওরা ফিরে এলে প্লে-অফ আয়োজন করলে আমরা খেলব। আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা বাইলজ অনুযায়ী চলব।’
বিমানবাহিনীর হয়ে মেরিনার্সের দুজন খেলোয়াড়ও ভারত যাচ্ছেন। যার মধ্যে আছেন ৩৯ গোল করে লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা সোহানুর রহমানও। মেরিনার্সের সাধারণ সম্পাদক হাসান উল্লাহ খান এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে আজ বলেছেন, ‘আমাদের চার বিদেশি পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী গতরাতেই দেশে ফিরে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতে বিদেশি আম্পায়ারও পাওয়া যাবে না। তবে প্লে-অফটি বাতিল করে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করলে আপত্তি করব না আমরা।’
যদিও ফেডারেশনের লিগ কমিটির সম্পাদককে দেওয়া চিঠিতে কোথাও যৌথ চ্যাম্পিয়নের দাবি করেনি মেরিনার্স। ম্যাচটি পরবর্তী যেকোনো সময় আয়োজনের অনুরোধ করা হয়েছে।
যৌথ চ্যাম্পিয়ন হকি লিগের বাইলজে নেই। তবে হকিতে বাইলজের তোয়াক্কা খুব কমই হয়! ১৯৯৮ সালে প্রিমিয়ার লিগ চালুর পর দুবার যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০১০ সালে আবাহনী-মোহামেডান, ২০১৪ সালে আবাহনী-উষা। অতীতে হলে এখন কেন নেয়? এই প্রশ্ন মেরিনার্সের আছে।
বল এখন হকি ফেডারেশনের কোর্টে। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদ বলেছেন, নিয়ম অনুযায়ী আমরা প্লে-অফ খেলতে বলেছি। এখন দুই ক্লাব চিঠিতে কী বলে দেখব। তারপর আমরা আজই সভায় বসে সিদ্ধান্ত নেব।’
তবে দুই ক্লাবের সমস্যার কারণে আগামীকাল যে প্লে-অফ হচ্ছে না, ফেডারেশনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে তা এখনই বলে দেওয়া যায়।