রাশিয়ার জেল থেকে অলিম্পিকে, প্রশংসায় ভাসছেন মার্কিন বাস্কেটবল তারকা
বিদেশ–বিভুঁইয়ে গিয়ে কী বিপদেই না পড়েছিলেন ব্রিটন গ্রিনার। মার্কিন নারী বাস্কেটবল খেলোয়াড় রাশিয়ায় গিয়ে মাদক মামলায় ফেসে গিয়েছিলেন। ৯ বছর জেলও হয় তাঁর।
গ্রিনার ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিশেষ ব্যবস্থায় ছাড়া পান। দুই বছর যেতে না যেতেই সেই গ্রিনার এখন অলিম্পিকে অংশ নিতে প্যারিসে। দুঃস্বপ্নকে পেছনে ফেলে কীভাবে ফিরে এলেন গ্রিনার, সেটি ভেবেই আপ্লুত তাঁর সতীর্থ ডায়ানা টাউরাসি।
অলিম্পিকে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে দুবার সোনা জেতা গ্রিনার রাশিয়া গিয়েছিলেন বাস্কেটবল লিগ খেলতে। সেখানেই বিপদে পড়েন তিনি। মস্কোর এক বিমানবন্দরে তাঁর লাগেজে ভেপের কার্টিজে তরল ক্যানাবিস (গাঁজা) পাওয়া যায়। আদালতে গ্রিনার তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা মাদক পাচার ও রাখার অভিযোগ স্বীকার করেন।
তিনি দাবি করেন, চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র মেনেই ওষুধ হিসেবে এটি ছিল তাঁর সঙ্গে। কিন্তু এটি যে রাশিয়ার আইনবিরুদ্ধ, সেটি তিনি বুঝে উঠতে পারেননি। তাঁর যুক্তি মানেননি রুশ আদালত, তাঁকে ৯ বছরের জেলের সাজা দেওয়া হয়। প্রায় ১০ মাস তিনি এ অভিযোগে জেল খাটার পর রাশিয়ার অস্ত্র ব্যবসায়ী ভিক্তর বাউতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দিবিনিময় চুক্তিতে মুক্তি পান। এরপর ২০২৩ সালে মেয়েদের এনবিএ দিয়ে আবার মাঠে ফেরেন।
যুক্তরাষ্ট্রে খেলা না থাকায় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার ক্লাব বাস্কেটবল খেলতে গিয়েছিলেন গ্রিনার। সেখানে মস্কোর একটি বিমানবন্দরে তাঁর লাগেজে গাজার তেলের নির্যাস পাওয়া যায়। যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর কাছে চিকিৎসকের পরামর্শপত্র ছিল। আদালতে গ্রিনার তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা মাদক পাচার ও রাখার অভিযোগ স্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, এটা তিনি না বুঝে করেছেন। কিন্তু এরপরও তাঁর ৯ বছরের জেল হয়। প্রায় ১০ মাস তিনি এ অভিযোগে জেল খেটেছেন।
গ্রিনার বলেছিলেন, অলিম্পিক ছাড়া তিনি পেশাদার বাস্কেটবলে আর দেশের বাইরে খেলবেন না। সেই অলিম্পিকে টানা আটটি সোনা জেতার মিশনে তিনি সাদা–নীল জার্সি পরে মাঠে নামবেন আগামী সোমবার।
তাঁর এই লড়াই নিয়ে সতীর্থ টাউরাসি বলেছেন, ‘গত দুই বছরে গ্রিনারের ওপর দিয়ে যা গিয়েছে, তা অভূতপূর্ব। আবার ফিরতে পারা, লড়াই করতে পারা, দেশের বাইরে আসা—অনেক দিক থেকেই এটা তার জন্য অনেক বড় মুহূর্ত। যে মুহূর্তে ও ফিরেছে, ও দুনিয়ার সবচেয়ে সুখী মানুষ ছিল। কিন্তু সব আবেগকে দূরে সরিয়ে রাখতে পেরেছে, ওই পরিস্থিতি কাটিয়ে সামনে আসতে পেরেছে।’
বন্দিবিনিময় চুক্তিতে বাউতকে মুক্তি দিয়ে গ্রিনারকে ফেরানোর সিদ্ধান্তে সমালোচনা করেছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রীড়ামহল, সাধারণ সমর্থকদের মধ্যে তাঁর ফেরাতে মিলেছিল স্বস্তি।
টাউরাসি বলেছেন, ‘আমরা ওকে আদালতে ভীতসন্ত্রস্ত দেখেছিলাম, কিন্তু এই কথাটা আমি সব সময়ই বলি ওর হৃদয়টা অনেক বড়। এই কারণেই আমার মনে হয় মানুষ তাকে সমর্থন দিয়েছে। তারা জানত, মানুষ হিসেবে গ্রিনার কেমন।’
সম্প্রতি নিজের ফেরা নিয়ে গ্রিনার বলেছেন, ‘যেসব পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমি গিয়েছি, সবাই ভাবছে আমার জন্য আবার দেশের বাইরে আসা কেমন অনুভূতির। আসলেই এটা দুর্দান্ত। এখানে খুব ভালো লাগছে। নিরাপদ বোধ করছি। দুর্দান্ত লাগছে।’
সোমবার যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ম্যাচ খেলবে জাপানের বিপক্ষে।