ক্রিকেট বিশ্বকাপ জেতার চেয়ে অলিম্পিকে পদক জেতা অনেক বড় ব্যাপার—বললেন মাশরাফি
এসেছিলেন কাবাডির অনুষ্ঠানে। আবারও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কাবাডি আয়োজন করেছে ফেডারেশন। ২৬ মে থেকে শুরু হতে যাওয়া সেই টুর্নামেন্টের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে অলিম্পিক নিয়ে নিজের স্বপ্নের কথা জানালেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।
তিনি এখন শুধু জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়কই নন, জাতীয় সংসদের অন্যতম হুইপ। টানা দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। জাতীয় সংসদে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়–সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিরও সদস্য তিনি।
অলিম্পিক নিয়ে তাঁর কথা, ‘আমরা যদি অলিম্পিকে একটা পদক জিততে পারি, সেটি হবে খুব বড় একটা ঘটনা। ক্রিকেটে বিশ্বকাপ জেতার চেয়েও অলিম্পিকে একটা পদক জয় অনেক বড় ব্যাপার।’ তিনি ক্রিকেটের বাইরে ছোট–বড় সব খেলাকেই সমান গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন।
অলিম্পিক ভবনে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কাবাডির সংবাদ সম্মেলনের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন মাশরাফি। কাবাডির অনুষ্ঠানে এর আগেও এসেছেন। আজ সংবাদ সম্মেলনের পর বলেছেন, তাঁর মতো অন্য ক্রিকেট তারকাদেরও ছোট খেলাগুলোর প্রচার ও প্রসারে এগিয়ে আসার কথা বলেছেন তিনি, ‘আমাকে কাবাডি ফেডারেশন ডাকে, আমি আসি। আমি যেকোনো খেলাতেই যাব। অন্য খেলারও গুরুত্ব আছে। আমি অন্য ক্রিকেট তারকাদের কথা বলতে পারব না। তবে তারা নিশ্চয়ই ডাকলে এগিয়ে আসবে। এটা বিভিন্ন ফেডারেশনর উদ্যোগের ওপরই নির্ভর করবে।’
ক্রিকেট বাদে অন্য খেলাকে গুরুত্ব কম দেওয়া হয় বলেই অভিযোগ তাঁর, ‘আমি সব সময় সব খেলার পক্ষে। আপনারাই (গণমাধ্যম) ক্রিকেটকে বেশি গুরুত্বের দিক দিয়ে এগিয়ে রাখেন। সব খেলাকেই সমান গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’
এ ব্যাপারে তাঁর বিশ্লেষণ, ‘দেখুন অস্ট্রেলিয়া যখন ক্রিকেটে বিশ্বকাপ জেতে, তখন গোটা বিশ্ব সে সম্পর্কে কোনো খবর রাখে না। ক্রিকেট বিশ্বকাপ জেতার চেয়ে অলিম্পিকে পদক জেতা অনেক বড় ব্যাপার।’
অলিম্পিকে একটা পদকের কথা ভাবতেও পারে না বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন। এমনকি এশিয়ান গেমসেও পদক জেতা বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদদের জন্য দূরের স্বপ্নই। এশিয়াডেই বাংলাদেশের আছে মাত্র একটি ব্যক্তিগত পদক, সেটি ১৯৮৬ সালে সিউল এশিয়ান গেমসের বক্সিংয়ে। মোশাররফ হোসেন পেয়েছিলেন ব্রোঞ্জ।
অলিম্পিকে দেশ পদক জিতবে—এমন স্বপ্ন ভেতরে-ভেতরে লালন করেন মাশরাফি, ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্পোর্টস অলিম্পিক। বাংলাদেশ যদি সেটিতে পদক জিততে পারে, সেটি হবে বিরাট ঘটনা। তবে সেটি অনেক কঠিন। আমরা এখন হিটেই বাদ পড়ে যাচ্ছি। হিট থেকে ফাইনালে উঠতে হবে, এরপর তো পদকের লড়াই।’
দেশের ক্রীড়াঙ্গনে পৃষ্ঠপোষকদের ভূমিকা মাশরাফির মতে অনেক, ‘ক্রিকেট বোর্ড চলে স্পনসরে। কিন্তু ক্রিকেট ছাড়া অন্য খেলাতে স্পনসররা এগিয়ে আসছে না। সবার এগিয়ে আসা উচিত। ফেডারেশনগুলোকেও স্পনসর খুঁজতে হবে। দেশের খেলাধুলার উন্নতিতে অবশ্যই তৃতীয় একটা পক্ষের প্রয়োজন। স্পনসররা হচ্ছে সেই তৃতীয় পক্ষ। তাদের এগিয়ে আসা উচিত।’
ক্রিকেট, ফুটবল বাদে দেশের অন্য খেলোয়াড়দের আর্থিক অবস্থা খুব দুর্বল। অন্য ফেডারেশনগুলোও খেলোয়াড়দের সেভাবে আর্থিক সহায়তা করতে পারে না। খেলোয়াড়দের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও ফেডারেশনের সামর্থ্য বাড়াতে নিজের উদ্যোগ গ্রহণের চেয়ে মিডিয়া ও ফেডারেশনের ওপরই দায়িত্ব দিলেন বেশি।