’৯২–এর নায়কের অভিনন্দন পেলেন বাবর–রিজওয়ানরা
কিছুদিন আগেই রাজনৈতিক সমাবেশে দুর্বৃত্তের গুলিতে আহত হন ইমরান খান। কোনোমতে প্রাণে বেঁচে যাওয়া পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আজ নিশ্চয়ই ৩০ বছর আগের স্মৃতি খুব করেই মনে হয়েছে। বাবর আজম-মোহাম্মদ রিজওয়ান-শাহিন শাহ আফ্রিদিরা ইমরানকে নিয়ে গেছেন তাঁর খেলোয়াড়ি জীবনে। তুখোড় রাজনীতিবিদে পরিণত হওয়া ইমরানের হাত দিয়েই যে পাকিস্তান ক্রিকেট সাক্ষী হয়েছিল সর্বশ্রেষ্ঠ গৌরবের। ১৯৯২ বিশ্বকাপজয়ী পাকিস্তান দলের অধিনায়ক ইমরান তাই তাঁর উত্তরসূরিদের অভিনন্দিত করতে মোটেও দেরি করেননি।
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শুরু থেকেই পাকিস্তান ধুঁকছিল। প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে হারের পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও হেরে বিদায় মোটামুটি নিশ্চিতই করে ফেলেছিল পাকিস্তান। পরে দক্ষিণ আফ্রিকা, নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জিতলেও পাকিস্তানের সেমিফাইনাল-ভাগ্য ঝুলছিল অনিশ্চয়তায়। কিন্তু নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার অভাবনীয় হারে সেমিফাইনালে খেলার রাস্তা পরিষ্কার হয় বাবর আজমদের। সুপার টুয়েলভে নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয় তাদের। ১৯৯২ সালে ইমরান খানের পাকিস্তানও ধুঁকতে ধুঁকতেই সেমিফাইনালে উঠেছিল। এবার যেন বাবর-রিজওয়ানরা ’৯২-এর পুনরাবৃত্তিই ঘটালেন।
১৯৯২ বিশ্বকাপের সঙ্গে আরেক জায়গায় মিল এবারের পাকিস্তানের। সেবারও সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েই ফাইনালে উঠেছিল পাকিস্তান। সেবারও সেমিতে নিউজিল্যান্ডই ছিল ফেবারিট। এমন দৃশ্যপটে ’৯২-এর নায়ক ইমরান খানকে যদি তিন দশক আগের স্মৃতি বেশি করে নাড়া দেয়, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
আজ সিডনিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত হওয়ার পরপরই নিজেদের উত্তরসূরিদের টুইটারে অভিনন্দন জানিয়েছেন ইমরান। তিনি লিখেছেন, ‘বাবর আজম ও তাঁর দলের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য অভিনন্দন।’
ফাইনালে পাকিস্তান মুখোমুখি হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত অথবা ইংল্যান্ডের। কাল অ্যাডিলেডে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ হওয়ার লড়াইয়ে মাঠে নামবে ভারত ও ইংল্যান্ড। ভারত উঠলে আইসিসির কোনো বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার ফাইনালে দ্বিতীয়বারের মতো চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। ইংল্যান্ড উঠলে আবারও ’৯২-এরই পুনঃ চিত্রায়ণ। ৩০ বছর আগেও বিশ্বকাপের সেই ফাইনালে ইমরান খানের পাকিস্তান মুখোমুখি হয়েছিল গ্রাহাম গুচের ইংল্যান্ডের।
১৩ নভেম্বর মেলবোর্নের ফাইনালে এখন বাবর ‘ইমরান খান’ হতে পারবেন কি না, প্রশ্ন সেটিই।