২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

আফগানিস্তানের সামনে শ্রীলঙ্কার অসহায় আত্মসমর্পণ

শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করেছে আফগানিস্তানএএফপি

এর আগে দুই দল টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয়েছিল একবার, ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। সেবার বেশ সহজ জয়ই পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় দেখায় অবশ্য অন্য আফগানিস্তানকে দেখল তারা। দুবাইয়ে এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে আফগানিস্তান।

শক্তিমত্তার দিক দিয়ে দুই দলই ছিল প্রায় সমান, ব্যাটিংয়ের কারণে হয়তো একটু এগিয়ে ছিল শ্রীলঙ্কাই। দুবাইয়ে এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে লড়াইটা অবশ্য একপেশেই বানিয়ে ফেলল আফগানিস্তান। শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং প্রথমে হুমড়ি খেয়ে পড়ল। ফজলহক ফারুকির পেস, মোহাম্মদ নবী ও মুজিব রহমানের স্পিনের সঙ্গে রানআউটের ঝড়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা গুটিয়ে যায় মাত্র ১০৫ রানেই। পরে দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজের ১৮ বলে ৪০ ও হজরতউল্লাহ জাজাইয়ের ২৮ বলে ৩৭ রানের ইনিংসে আফগানিস্তান সে লক্ষ্য পেরিয়ে যায় ৫৯ বল ও ৮ উইকেট বাকি রেখেই।

রান তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারে এলবিডব্লু হয়েছিলেন গুরবাজ, তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান সে দফা। এরপর আর ফিরে তাকাননি তিনি। প্রথম ৬ ওভারেই গুরবাজ ও জাজাই মিলে তোলেন ৮৩ রান। পাওয়ার প্লেতে এটিই আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ স্কোর, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কোনো দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। হাসারাঙ্গার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন গুরবাজ, পরে জাজাইয়ের শট নন-স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্প ভাঙলে রানআউট হন ইব্রাহিম জাদরান। লঙ্কানদের উল্লাসের উপলক্ষ শেষ তাতেই।

ঝড় তোলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ
এএফপি

এর আগে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দুই দলের দ্বিতীয় দেখায় দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের তরতাজা পিচে টসে জিতে বোলিং নেন আফগান অধিনায়ক নবী। বাঁহাতি পেসার ফজলহক ফারুকি ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ ২ বলে ফেরান কুশল মেন্ডিস ও চারিত আসালাঙ্কাকে। দুজনই হন এলবিডব্লু, এর মধ্যে মেন্ডিসের উইকেটটি আফগানিস্তান পায় রিভিউ নিয়ে। পরের ওভারে নাভিন-উল-হকের বলে কট বিহাইন্ড হন পাতুম নিসাঙ্কা, যদিও সে সিদ্ধান্ত নিয়ে আছে বিতর্ক। মাঠে আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর নিসাঙ্কা রিভিউ নেন। আল্ট্রা-এজে স্পাইক বলতে গেলে ছিলই না, কিন্তু মাঠের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন টেলিভিশন আম্পায়ার জয়ারমন মদনগোপাল। সে সিদ্ধান্তে শ্রীলঙ্কার হতাশা ছিল স্পষ্টই।

৫ রানে ৩ উইকেট নেই, টি-টোয়েন্টিতে এর আগে কখনোই এত কম রানে এতগুলো উইকেট হারায়নি শ্রীলংকা। সে চাপ এরপর সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন দানুশকা গুনাতিলাকা ও ভানুকা রাজাপক্ষে। চতুর্থ ওভারে প্রথম বাউন্ডারির দেখা পায় শ্রীলঙ্কা। ষষ্ঠ ওভারে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ওপর চড়াও হন রাজাপক্ষে ও গুনাতিলাকা, ওই ওভারে আসে ২০ রান, পাওয়ার প্লেতে শ্রীলঙ্কা তোলে ৪১ রান।

আফগান স্পিনের তোপে শ্রীলঙ্কা এরপর খেই হারায় আবার। মুজিব উর রহমানের বলে রিভার্স সুইপ করতে গুনাতিলাকা ধরা পড়লে ভাঙে রাজাপক্ষের সঙ্গে তাঁর ৩২ বলে ৪৪ রানের জুটি। গুনাতিলাকা ক্যাচ দেন করিম জানাতের হাতে, এর আগে কাভারে যিনি ছেড়েছিলেন তাঁর সহজ ক্যাচ। পরের ওভারে মুজিব ফেরান ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে, ইনিংসের অর্ধেক না যেতেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে লঙ্কানরা।

প্রথম ওভারেই ২ উইকেট নেন ফারুকি
এএফপি

নবম ওভারে প্রথম বোলিংয়ে এসেছিলেন রশিদ খান, তাঁকে অবশ্য উইকেট দেয়নি শ্রীলঙ্কা। তবে তাঁরা উইকেট হারায় নিয়মিত বিরতিতেই। নবীর অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে ফেরেন শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক দাসুন শানাকা। অবশ্য এক ওভার পর যা হলো, তাতেই হয়তো রাতে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং দুর্দশার চিত্রটা ফুটে ওঠে। পরপর ২ বলে ২ রানআউটে শ্রীলঙ্কা হারায় রাজাপক্ষে ও মহীশ তিকসানার উইকেট, দুজনই ফেরেন চামিকা করুনারত্নের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে।

মাথিশা পাতিরানা নবীর দ্বিতীয় শিকার হলে শ্রীলঙ্কা ৭৫ রানেই হারায় ৯ উইকেট। নিজেদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন ৮২ রানের স্কোর তখন ভালোভাবেই চোখ রাঙাচ্ছিল লঙ্কানদের। সেটি হয়নি ওই করুনারত্নের সৌজন্যেই, শেষ উইকেট জুটিতে দিলশান মাদুশাঙ্কাকে নিয়ে তিনি যোগ করেন ২৯ বলে ৩০ রান। ওই জুটিতে অবশ্য মাদুশাঙ্কার অবদান ১ রানের। ইনিংসে ২ বল বাকি থাকতে ফারুকির তৃতীয় শিকারে পরিণত হন করুনারত্নে, ৩৮ বলে ৩১ রান করার পর।