সাফ ফুটবলে পাঁচ ম্যাচেই অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। আরও ছয়জন খেলেছেন বদলি হিসেবে। ছয়জন মাঠে নামার সুযোগ পাননি। তারপরও সবাই এই বিজয়ের অংশীদার। সাফজয়ী বাংলাদেশ দলের ২৩ খেলোয়াড়ের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি লিখেছেন বদিউজ্জামান
কিছুদিন আগেও গোলরক্ষক রুপনা চাকমার একটা বাজে অভ্যাস ছিল। ডিফেন্ডারদের ওপর আস্থা রাখতে পারতেন না। হুটহাট করেই জায়গা ছেড়ে বেরিয়ে আসতেন। আর এমন অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে ভুগতে হতো বাংলাদেশ দলকে।
অথচ সেই রুপনাই যেন একেবারে বদলে গেলেন এবারের সাফে। বক্সের মধ্যে বল ধরবেন কি ধরবেন না, সেটা নিয়ে একসময় সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতেন। কিন্তু নেপালে অনুষ্ঠিত সাফে পোস্টের নিচে প্রতিটি ম্যাচেই ছিলেন শান্ত। পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলেছেন। কখনো ফিস্ট করে, কখনো জায়গায় দাঁড়িয়ে লাফিয়ে বল লুফে নিয়েছেন। যার ফলে পুরো টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ প্রতিপক্ষের জালে ২৩ গোল দিলেও হজম করেছে মাত্র ১ গোল! ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো রুপনা জিতে নিয়েছেন সাফে সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার।
ফাইনালের আগে বলই ঢোকেনি বাংলাদেশের জালে। রুপনা জিতে নিয়েছেন সাফে সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার।
রুপনার বাবা নেই। মা কালাসোনা চাকমা তাঁকে ফুটবল খেলতে উৎসাহ জুগিয়েছেন। ২০১১ সালে প্রথমবার রাঙামাটি জেলা স্টেডিয়াম মাঠে রুপনার খেলা দেখে মুগ্ধ হন স্থানীয় মগাছড়ি স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক বীর সেন।
ওই সময় রুপনা পড়তেন রাঙামাটির নানিয়ারচরের ভুয়াদম গ্রামের স্কুলে। বীর সেন রুপনার মাকে রাজি করিয়ে মগাছড়ি স্কুলে ভর্তি করিয়ে নেন। রুপনার পড়ালেখা ও ভরণপোষণের দায়িত্ব নেন স্থানীয় কোচ শান্তিমনি ও সুইহ্লা মং। স্কুলের একটি কক্ষে অন্য মেয়েদের সঙ্গে আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়। স্কুল টুর্নামেন্টে নিজেকে প্রমাণ করে বয়সভিত্তিক অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় দলে ২০১৮ সালে প্রথম খেলেন রুপনা। এরপর টানা চার বছর খেলছেন বয়সভিত্তিক ও জাতীয় দলে।