বিশ্বকাপ সূচি না বদলালে পাকিস্তানের ম্যাচে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে পারবে না ভারতের পুলিশ
সূচি নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায় বিশ্বকাপকে এরই মধ্যে তামাশায় পরিণত করেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। নবরাত্রি ও কালীপূজার সঙ্গে ম্যাচের সূচি সাংঘর্ষিক হওয়ায় গুজরাট ও বেঙ্গল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের অনুরোধে দুই দফা বিশ্বকাপ সূচিতে বদল এনেছে বিসিসিআই। জটিলতা সামাল দিতে গিয়ে সব মিলিয়ে ৯ ম্যাচের সূচিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ‘ভুক্তভোগী’ বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড। এই তিন দলের তিনটি করে ম্যাচের দিনক্ষণ বদলে গেছে।
কিন্তু নতুন যা খবর, তাতে পাকিস্তানের আরেকটি ম্যাচের দিনক্ষণ বদলাতে পারে। গত ৯ আগস্ট বিসিসিআই বিশ্বকাপের সূচি আর না বদলানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলেও এখনো বেঁকে বসে আছে হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (এইচসিএ)। সংস্থাটি এবার শুধু মূল পর্বের ম্যাচ নয়; প্রস্তুতি ম্যাচেরও সূচি বদলানোর অনুরোধ জানিয়েছে। যে ম্যাচগুলোর সূচি পাল্টানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে, সবই পাকিস্তানের। আহমেদাবাদ ও কলকাতার সূচি বদলের একমাত্র কারণ ধর্মীয় উৎসব হলেও হায়দরাবাদে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে টানা দুই দিন ম্যাচের চাপ।
হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে ২৯ সেপ্টেম্বর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা পাকিস্তানের। তবে ২৬ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো ঈদে মিলাদুন্নবীর অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। পরদিন ২৮ সেপ্টেম্বর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের গণেশ বিসর্জন অনুষ্ঠান। টানা দুই দিন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে দায়িত্ব পালনের পরদিনই পাকিস্তানের ম্যাচে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে হায়দরাবাদ পুলিশ।
শুধু তাই নয়, বিশ্বকাপের মূল পর্বেও পাকিস্তানের ম্যাচে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিজেদের অক্ষমতার কথা জানিয়েছে হায়দরাবাদ পুলিশ। এ ক্ষেত্রে কারণ হিসেবে তারা দেখিয়েছে টানা ম্যাচের চাপ। রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে আগামী ৯ অক্টোবর নিউজিল্যান্ড-নেদারল্যান্ডস ও পরদিন ১০ অক্টোবর পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের সূচি রাখা হয়েছে। দুটি ম্যাচই দিবারাত্রির।
এর অর্থ হলো, ম্যাচ খেলতে নিউজিল্যান্ড-নেদারল্যান্ডস দল হোটেল থেকে স্টেডিয়ামে আসা থেকে ম্যাচ শেষে হোটেলে ফেরা পর্যন্ত গভীর রাত হয়ে যাবে। এতক্ষণ দায়িত্ব পালনের পরও খুব একটা বিশ্রামের সুযোগ পাবেন না নিরাপত্তাকর্মীরা। পরদিন সকাল থেকে আবারও গভীর রাত পর্যন্ত পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা দলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রতিটি ম্যাচের জন্য প্রায় ৩ হাজার পুলিশ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকার কথা। পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে বেশির ভাগ পুলিশ সদস্যই বাবর-রিজওয়ান-আফ্রিদিদের হোটেলে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। তাঁদের পক্ষে হোটেল থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত যাত্রাপথে ও মাঠে নিরাপত্তা জোরদার করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে হায়দরাবাদ পুলিশ।
তাই হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন সূচি পাল্টাতে আবারও বিসিসিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে। কিন্তু বোর্ডের কেউ সেভাবে সাড়া না দেওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। শুধু তাই নয়, তাদের অভিযোগের চূড়ান্ত সূচি ঘোষণার পর থেকে বোর্ডের কেউই আর যোগাযোগ করেনি।
২৫ আগস্ট বিশ্বকাপের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। ক্রিকেটপ্রেমীরা চূড়ান্ত সূচি ধরেই টিকিট কিনে ফেলেছেন। এখন সূচি পাল্টালে টিকিট–সংক্রান্ত ঝামেলাতেও পড়তে হবে বিসিসিআইকে। তাই হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের অনুরোধ বিসিসিআই রাখবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।