ম্যারাডোনার দলের সঙ্গে মেসিদের মিল দেখছেন ক্যানিজিয়া

লিওনেল মেসিছবি: এএফপি

২০১৪ সালে শিরোপা–ছোঁয়া দূরত্বে থেকে ফিরতে হয়েছে আর্জেন্টিনাকে। মারকানার ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে গোল খেয়েছিল লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা।

একই অভিজ্ঞতা হয়েছে ক্লদিও ক্যানিজিয়ারও। ১৯৯০ বিশ্বকাপ ফাইনালে সেই জার্মানির কাছেই ম্যাচের শেষ দিকের পেনাল্টি গোলে হেরে গিয়েছিল ডিয়েগো ম্যারাডোনার দল।

যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৯৪ বিশ্বকাপেও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নেমেছিলেন ম্যারাডোনা–ক্যানিজিয়া। কিন্তু ডোপ কেলেঙ্কারিতে দুই ম্যাচ খেলেই দেশে ফিরতে হয় ২০২০ সালে অনন্তলোকের বাসিন্দা হয়ে যাওয়া ফুটবল কিংবদন্তিকে। আক্রমণভাগের সঙ্গীকে হারিয়ে ক্যানিজিয়া যেন হয়ে পড়েন একা!

আরও পড়ুন

তবে মেসির জীবনটা ম্যারাডোনার মতো এতটা রহস্যে ঘেরা নয়। ২০১৪ সালের পর আরেকটি বিশ্বকাপ খেলেছেন মেসি। এবার কাতারে হয়তো খেলবেন শেষটি। আগামীকাল বিকেলে সৌদি আরব ম্যাচ দিয়ে অভিযান শুরু করবে তাঁর দল।
এবার কি পারবে আর্জেন্টিনা? তিন যুগ অপেক্ষার অবসান হবে কি?

ম্যারাডোনার সঙ্গে ক্যানিজিয়া
ছবি: টুইটার

ম্যারাডোনার সব সুখ–দুঃখের সঙ্গী ক্যানিজিয়া দল নিয়ে বেশ আশাবাদী। কোচ লিওনেল স্কালোনি ও অধিনায়ক মেসির ওপর আস্থা রাখছেন সাবেক এ স্ট্রাইকার।
আর্জেন্টিনার জাতীয় ক্রীড়া দৈনিক ‘ওলে’কে ক্যানিজিয়া বলেছেন, ‘স্কালোনি জানে, কীভাবে দল গড়ে তুলতে হয়। যে পজিশনে যাদের দরকার, তাদেরকেই রেখেছে। সে এমন কজনকে খুঁজে পেয়েছে, যারা কিছুদিন আগেও জাতীয় দলে ছিল না। কিউটি (ক্রিস্তিয়ান) রোমেরো, লিসান্দ্রো মার্তিনেজরা নতুন হলেও দ্রুত মানিয়ে নিয়েছে।’

এখানেই থামেননি ক্যানিজিয়া। প্রশংসাপত্র দিয়েছেন স্কালোনিকে, ‘সামর্থ্যের প্রমাণ সে দিয়েছে। ব্রাজিলে কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতিয়েছে। তার অধীনে টানা ৩০টির বেশি (আসলে ৩৬) ম্যাচ হারিনি আমরা। সে দলে সৌহার্দ্যের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। যে কেউ যে কাউকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’

আজ কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুশীলন করে আর্জেন্টিনা দল
ছবি: এএফপি

মেসিকে নিয়ে ক্যানিজিয়া বলেছেন, ‘ওর খেলার ধরন বদলে গেছে। আগের মতো জ্বলে ওঠে না। আসলে সে নির্ভরযোগ্য সতীর্থদের পেয়ে গেছে। সে কারণে মাঠে ওর ভূমিকাও পাল্টেছে।’

আরও পড়ুন

আগের মেসি আর ওই মেসির মধ্যে পার্থক্য কোথায়, সেটারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন ‘এল পাহারো’ (পাখির সন্তান) খ্যাত তারকা, ‘সেরা সময়ে থাকতে মেসি অনায়াসে দুই–তিনজনকে কাটিয়ে গোল করেছে। একটি নির্দিষ্ট পজিশন থেকে দৌড় শুরু করে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের চেয়ে ৪০ মিটার এগিয়ে থেকেছে। বুঝতেই পারছেন, এখন ওই অবস্থায় নেই। কারণ, ওর বয়স এখন ৩৫। তবে গতি কমলেও অন্য সবকিছু অর্জন করেছে। অভিজ্ঞতা, ম্যাচের পরিস্থিতি পড়তে পারা এসব আরকি।’

ক্যানিজিয়াকে মানুষ আরও অনেক কারণেই মনে রেখেছে। তবে ১৯৯০ বিশ্বকাপে দুটি গোলের কারণে তিনি আলাদাভাবে স্মরণীয় হয়ে আছেন। তাঁর একটি গোলে বিদায়ঘণ্টা বেজেছিল ব্রাজিলের, আরেকটি গোলে সমতা ফিরিয়ে পরে টাইব্রেকারে স্বাগতিক ইতালি ছিটকে পড়েছিল। তবে জার্মানির বিপক্ষে ফাইনালে পেরে ওঠেননি।

আরও পড়ুন

ম্যারাডোনার ওই আর্জেন্টিনা দলটির সঙ্গে এই দলের মিল খুঁজে পাচ্ছেন ক্যানিজিয়া, ‘শরীরী ভাষা দেখে মনে হয়নি সে (ম্যারাডোনা) বিস্ফোরক হতে পারে। ঠিক এখনকার মেসি যেমন। তবে সে–ও দারুণ একটা দল পেয়েছিল। কোচের (কার্লোস বিলার্দো) কথা মেনে চলত। সৌহার্দ্যের পরিবেশ ছিল। ম্যারাডোনা আর কোচের সম্পর্ক বন্ধুর মতো ছিল। এমনকি তারা একসঙ্গে ঘুরতে যেত। দলে অনেক ইতিবাচক দিক ছিল। মনে হতো, এমন পরিবেশ আগে কখনো সৃষ্টি করা সম্ভব হয়নি।’