২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

৫ গোলে মেসির ১১০০

কাল আর কিছু রেকর্ড দখলে নিয়েছেন মেসিছবি: এএফপি

গ্যারি লিনেকার লিওনেল মেসির অনেক বড় ভক্ত। ইংলিশ সাবেক স্ট্রাইকার এটা লুকানোর কোনো চেষ্টাও করেন না। যখনই মেসি অবিশ্বাস্য কিছু করে বসেন, তাঁকে নিয়ে টুইটারে আনন্দে মাতেন লিনেকার। আদর করে যিশুখ্রিষ্টের সঙ্গে মিলিয়ে ডাকেন ‘মেসাইয়া’ বলে। গতকাল রাতে তাঁকে আরও একবার ‘মেসাইয়া’ বলতে বাধ্য করেছেন মেসি। এস্তোনিয়ার বিপক্ষে আর্জেন্টিনার পাঁচ গোলের সব কটি করে রেকর্ড গড়েছেন আলবিসেলেস্তে অধিনায়ক।

মেসির গোলের পরশ মাখতে মাখতে গ্যারি লিনেকার তাই টুইট করেছেন, ‘অসাধারণ, মেসি আজ আর্জেন্টিনার পাঁচ গোলের সব কটি করেছে। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, গোল করার ক্ষমতাই ওকে অন্য কিংবদন্তিদের চেয়ে এগিয়ে রাখে না। পাস দেওয়া বা ড্রিবল করার ক্ষেত্রে এই খেলাটা খেলেছে—এমন যে কারও সঙ্গে ও পাল্লা দিতে পারবে। মেসাইয়া।’

আরও পড়ুন
কাল বারবার মেসির উদ্‌যাপন দেখেছে এস্তোনিয়া
ছবি: এএফপি

এস্তোনিয়ার বিপক্ষে কাল পাঁচ গোল করে রেকর্ডের অনেক পাতায়ই ওলট–পালট এনেছেন মেসি, ৪৭ মিনিটের মধ্যে হ্যাটট্রিক করে ফেলেছেন। আর তাতে ৮১ বছর পুরোনো এক রেকর্ডে ফেরেঙ্ক পুসকাসের পাশে বসেছেন। হাঙ্গেরির হয়ে ৮৫ ম্যাচে ৮৪ গোল করা পুসকাসের সঙ্গে অবশ্য বেশিক্ষণ থাকতে রাজি হননি মেসি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে ৩০তম দেশের বিপক্ষে গোল করা আর্জেন্টিনা অধিনায়ক আধঘণ্টার মধ্যেই আরও দুই গোল করেছেন। আন্তর্জাতিক ফুটবলে মেসির গোল এখন ৮৬টি। তাঁর সামনে এখন শুধু তিনজন।

আরও পড়ুন

প্রথমে কে সেটা না বললেও চলে। তবু আরেকবার বলতে ক্ষতি নেই, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো (১১৭ গোল)। দুই ও তিনে এশিয়ার দুজন। সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড বহুদিন দখলে রাখা ইরানের আলি দাইয়ির (১০৯) রেকর্ডটা রোনালদো ভেঙেছেন বেশি দিন হয়নি, তিনে মালয়েশিয়ার মোখতার দাহারি (৮৯)।

কাল দুর্দান্ত এক রাত কাটিয়েছেন মেসি
ছবি: এএফপি

মেসির পুসকাসকে পেছনে ফেলাটাই প্রথমে নজরে পড়েছে। ওদিকে পেলেকেও কিন্তু ছাড়িয়ে গেছেন মেসি। কাল পর্যন্ত পেশাদার ফুটবলে ৭৬৯তম গোল হয়েছে মেসির। পেলের স্বীকৃত গোল ছিল ৭৬৭টি। অর্থাৎ, কাল চতুর্থ গোল করে আন্তর্জাতিক ফুটবলে পুসকাস ও পেশাদার ফুটবলে পেলেকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। আর পঞ্চম গোলে তো ইতিহাসই হলো।

আরও পড়ুন

পেশাদার ক্যারিয়ারে গতকাল দ্বিতীয়বারের মতো পাঁচ গোল করেছেন মেসি। প্রথমবারের ঘটনা ১০ বছর আগে। ২০১২ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগে বায়ার লেভারকুসেনের বিপক্ষে শেষ ষোলোতে ঘরের মাঠে ৭-১ গোলে জিতেছিল বার্সেলোনা। যার পাঁচটিই করেছিলেন মেসি। ক্লাব ফুটবলে এক ম্যাচে এর চেয়েও বেশি গোল করার রেকর্ড আছে। জাতীয় দলে এক ম্যাচে ১৩ গোলেরও রেকর্ড আছে। কিন্তু দুই ক্ষেত্রেই এক ম্যাচে পাঁচ গোল? এ কীর্তি মেসি অনন্য।

আরও পড়ুন

কাল আরেকটি জায়গায় অনন্য হয়ে গেছেন মেসি। পেশাদার ফুটবলে গোল তাঁর ৭৬৯টি, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন আরও ৩৩১টি। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ১১০০ গোলে অবদান তাঁর। প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ১১০০ গোলে অবদান রাখলেন মেসি। দুইয়ে থাকা নামটি বলার জন্যও কোনো কুইজে পুরস্কার মিলবে না। নামটা জানা সবার, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো (১০৪৫)। তবে রোনালদোর এই অবদান ১১২১ ম্যাচে। আর মেসির ক্ষেত্রে ৯৭৪ ম্যাচেই ১১০০!

আরও পড়ুন
মেসি
ছবি: এএফপি

কীর্তিটা কতটা অবিশ্বাস্য, সেটা বোঝাতে এবার ব্যালন ডি’ অরের আলোচনায় থাকা মো সালাহকে উদাহরণ হিসেবে দেখানো যায়। ক্লাব লিভারপুল ও জাতীয় দল মিসরের হয়ে মৌসুমে সালাহ গোল করেছেন ৩৬টি, করিয়েছেন ১৩টি। অর্থাৎ, গোলে অবদান ৪৯টি। সে হিসাবে মেসির ধারেকাছে পৌঁছাতে হলে সালাহকে এমন মৌসুম কাটাতে হবে টানা ২২ বছর!

মেসির সতীর্থ নিকো গঞ্জালেস তো আর শুধু শুধু বলেননি, ‘অবিশ্বাস্য, তাঁর পায়ে চুম্বক আছে! এক একটা দিন পার হয়, তিনি আমাদের আরও চমক দেখান। তিনি আর্জেন্টাইন, এটা একটা আনন্দের ব্যাপার।’

মেসি ফুটবল খেলেন, এটা ফুটবলের জন্যই আনন্দের।