২৩ দিনে চাকরি ছাড়লেন গাত্তুসো
কোচ হিসেবে মার্সেলো বিয়েলসার সঙ্গে জেনারো গাত্তুসোর তুলনা টানা বাড়াবাড়ি। একজন এখনো কোচিং ক্যারিয়ারের শুরুতে আছেন বলেই যে তুলনা টানা অসম্ভব, তা নয়। ফুটবলকে দুজন যতটা ভিন্নদৃষ্টিতে দেখেন; সেটিই এ দুজনের মাঝে যোজন–যোজন ফারাক সৃষ্টি করে রাখছে। খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ জিতলেও ফুটবল ম্যানেজার হিসেবে ইতালির সাবেক মিডফিল্ডার কখনোই বিয়েলসার সঙ্গে তুলনীয় হতে পারবেন না।
আজ আচমকা এ দুজনের মধ্যে তুলনাটা চলে এল। ২০১৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে লাৎসিওর দায়িত্ব নিয়েছিলেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি কোচ। ৪৮ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই চাকরি ছেড়ে দিয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন বিয়েলসা। গাত্তুসো অতটা পারেননি, তবে স্বল্পস্থায়ী চাকরির তালিকায় ওপরের দিকেই থাকার কথা তাঁর। ফিওরেন্তিনার কোচ হওয়ার ২৩ দিনের মধ্যে চাকরি ছাড়লেন গাত্তুসো। দলটির হয়ে এখনো ডাগআউটে দাঁড়ানো হয়নি তাঁর।
এসি মিলান ও ইতালির মাঝমাঠে ভরসা দিয়ে রাখা গাত্তুসোর কোচিং ক্যারিয়ার শুরু হয়েছে ২০১৩ সালে। ফুটবলার ক্যারিয়ারের একদম শেষ দিকে ক্লাবে সতীর্থ হিসেবে জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচকে পেয়েছিলেন গাত্তুসো। কোচিং ক্যারিয়ারে হয়তো এটাই প্রভাব ফেলছে। কারণ, খেলোয়াড় ইব্রার মতোই যাযাবর হয়ে ঘুরে ফিরছেন কোচ গাত্তুসো। কোচিং ক্যারিয়ারের এক দশক এখনো পূর্ণ হয়নি, এর মধ্যেই সাতটি ক্লাবকে বিদায় বলেছেন!
সিওন, পালের্মো, ক্রিট, পিসা, মিলান, নাপোলি হয়ে ২০২১–২২ মৌসুমের জন্য ফিওরেন্তিনার দায়িত্ব পেয়েছিলেন গাত্তুসো। গত ২৫ মে তাঁকে নতুন কোচ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল ফিওরেন্তিনা। আনুষ্ঠানিকভাবে সিরি ‘আ’র ক্লাবটির দায়িত্ব তাঁর নেওয়ার কথা ছিল আগামী ১ জুলাই। কিন্তু গতকালই খবর ছড়িয়ে পড়ে, দলবদল নিয়ে মতের মিল না হওয়ায় চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন গাত্তুসো। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে ফিওরেন্তিনাও জানিয়ে দিয়েছে তাদের ‘বিচ্ছেদে’র কথা।
আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ক্লাব জানিয়েছে, ‘ফিওরেন্তিনা ও জনাব রিনো গাত্তুসো পূর্বস্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী আগামী মৌসুম একসঙ্গে শুরু করার চিন্তা থেকে সরে আসতে যৌথভাবে সম্মত হয়েছে।’ বিবৃতিতে ‘যৌথভাবে’ বলা হলেও সাধারণত কোচদের বিদায়ের ক্ষেত্রে দেখা যায় ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তকে একটু সহনীয়ভাবে প্রকাশ করার জন্য এ শব্দ ব্যবহৃত হয়। তবে গাত্তুসোর বেলায় আক্ষরিক অর্থেই দুই পক্ষ মিলে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ইতালিয়ান সংবাদমাধ্যমের দাবি, ক্লাবের দলবদল নীতি মানতে চাচ্ছিলেন না গাত্তুসো। ক্লাব চাচ্ছিল কম খরচ করে অপেক্ষাকৃত তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য দল গঠন করতে। কিন্তু গাত্তুসো এত অপেক্ষা করতে রাজি ছিলেন না। পরিণত খেলোয়াড় কেনার জন্য আরও বেশি অর্থ ব্যয়ের পক্ষপাতী ছিলেন এই কোচ। শেষ পর্যন্ত একমত হতে না পেরে উভয় পক্ষ ভিন্ন পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।