২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

১২ দিন পর পুলিশের উপলব্ধি, তাদের ভুল হয়ে থাকতে পারে

৩৮ মিনিট দেরিতে শুরু হয়েছে এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালছবি: রয়টার্স

কী একটা দুঃস্বপ্নের মতো কাণ্ডই না ঘটে গেল এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে!

আধা ঘণ্টার বেশি দেরিতে ম্যাচটা শুরু হওয়ার পেছনে সেদিন লিভারপুল সমর্থকদের বিনা টিকিটে মাঠে ঢুকতে চাওয়াকেই দায়ী করেছিল প্যারিসের পুলিশ। ফ্রান্সের ক্রীড়ামন্ত্রীও প্রায় একই সুরে কথা বলেন। কিন্তু স্টেডিয়ামে উপস্থিত থেকে পুলিশের টিয়ার গ্যাস, লাঠিচার্জে দুঃস্বপ্নের শিকার লিভারপুল ও রিয়াল মাদ্রিদের সমর্থকেরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেটির প্রতিবাদ করেন। পরে দুই ক্লাবই লিখিতভাবে প্রতিবাদ জানায়। এরপর থেকেই মূলত সুর বদলাতে শুরু করে ফ্রান্স।

আরও পড়ুন

দেশটির সংসদে এ ঘটনায় নিজেদের পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল কয়েক দিন আগে। এখন পুলিশেরও সুর বদলেছে। চ্যাম্পিয়নস লিগের ১২ দিন পর এসে প্যারিস পুলিশের প্রধান দিদিয়ের লালমঁ বলছেন, তিনি আগে যা বলেছিলেন, সেটি ভুল হলেও হতে পারে। এর আগে সেদিনের ঘটনার ব্যাখ্যায় লালমঁ বলেছিলেন, লিভারপুলের ৪০ হাজার সমর্থক ভুয়া টিকিটে মাঠে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন বলেই ঝামেলা হয়েছে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন

গত ২৮ মে প্যারিসের স্তাদ দো ফ্রান্সে রিয়াল মাদ্রিদ আর লিভারপুলের ফাইনালের দিকে যখন অনেক রোমাঞ্চ নিয়ে তাকিয়ে পুরো বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীরা, ম্যাচ শুরুর কিছুক্ষণ আগে উয়েফা জানায়—ম্যাচ শুরু হতে ১৫ মিনিট দেরি হবে। শেষ পর্যন্ত আরও দুই দফা পিছিয়ে ৩৬ মিনিট পর শুরু হয় ম্যাচ। আনুষ্ঠানিক কারণ হিসেবে তখন স্টেডিয়ামের বড় পর্দায় জানানো হয়, সমর্থকদের মাঠে ঢুকতে দেরি হওয়ায় ম্যাচ দেরিতে শুরু হবে।

আরও পড়ুন

কিন্তু পরে প্যারিসের পুলিশ প্রধান জানান, ৪০ হাজার লিভারপুল সমর্থক ভুয়া টিকিট নিয়ে মাঠে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন। ফ্রান্সের ক্রীড়ামন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিনও দাবি করেন, দোষটা লিভারপুল সমর্থকদের। ৩০-৪০ হাজার লিভারপুল সমর্থক টিকিট ছাড়াই স্টেডিয়ামে ঢোকার চেষ্টা করায় স্টেডিয়ামের প্রবেশমুখে অসহনীয় ভিড় লেগে যায় বলেও ব্যাখ্যা করেছিলেন।

আরও পড়ুন

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁও তখন ক্রীড়ামন্ত্রীর ব্যাখ্যায় সায় দেন। দারমানিনের ব্যাখ্যার পরই মূলত লিভারপুল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানায়। পরে রিয়াল মাদ্রিদও বিবৃতিতে সেদিনের ঘটনার যথাযথ তদন্ত ও ব্যাখ্যা দাবি করে উয়েফার কাছে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন
আবারও ইউরোপের সেরা রিয়াল মাদ্রিদ, এ নিয়ে ১৪ বার
ছবি: রয়টার্স

ইংলিশ সব সংবাদমাধ্যম আর ফ্রান্সের অনেক সংবাদমাধ্যমও জানায়, প্যারিসের স্থানীয় অনেক মানুষ মূলত লিভারপুলের সমর্থকদের কাছ থেকে টিকিট ছিনতাই করেন। ভুয়া টিকিট ছাপিয়েও অনেকে ঢুকে পড়েন। এমন পরিস্থিতিতে ফরাসি পুলিশ মাঠে ঢোকার রাস্তা আরও সরু করে রাখলে বাইরে জনজট লেগে যায়।

আরও পড়ুন

ম্যাচের আড়াই ঘণ্টা আগে এসেও নির্ধারিত সময়ে মাঠে ঢুকতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন অনেক সমর্থক। একপর্যায়ে ফরাসি দাঙ্গা পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।

কিন্তু এখন এসে সুর বদলেছে প্যারিস পুলিশের প্রধান লালমঁর। নিজের আগের মন্তব্যের পক্ষে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই বলেও স্বীকার করে নিয়েছেন লালমঁ। ফ্রেঞ্চ সিনেটে সেদিনের ঘটনার শুনানিতে লালমঁ স্বীকার করে নিয়েছেন, সেদিন পুলিশের কার্যক্রম পুরোপুরি ‘ব্যর্থ’ ছিল। কারণ, তাদের কাজের কারণে সমর্থকেরা আহত হয়েছেন, ফ্রান্সের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হয়েছে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন
মাঠে ঢুকতে না পেরে কাঁদছে এই লিভারপুল সমর্থক। হেনস্তার শিকার হয়েছেন রিয়ালের সমর্থকেরাও
ছবি: রয়টার্স

‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমি ৩০-৪০ হাজার সমর্থকের (ভুয়া টিকিট নিয়ে ঢোকার) যে তথ্যটা দিয়েছিলাম, সেটি সম্ভবত ভুল হয়েছে। প্রশাসনিক দিক থেকে অবশ্য ৪০ হাজারের জায়গায় ৩০ হাজার বা ২০ হাজার হলেও তেমন পার্থক্য হতো না’—লালমঁর এই ব্যাখ্যায়ও অবশ্য আত্মপক্ষ সমর্থনেরই সুর।

আরও পড়ুন

ভুয়া টিকিটের এই সংখ্যাটা কীভাবে পেলেন, লালমঁকে সে প্রশ্ন করা হয়েছিল ফ্রান্সের সিনেটে। সেটির জবাবে লালমঁ বলেছেন, মাঠে থাকা কর্মকর্তাদের প্রতিবেদন থেকেই তিনি সংখ্যাটা পেয়েছেন। তবে সব শেষে নিজের দায়ও স্বীকার করেছেন, ‘আমিই মন্ত্রীকে সংখ্যাটা জানিয়েছি এবং সেটার দায় স্বীকার করছি।’

আরও পড়ুন

তবে সংসদে শুনানির সময়ে লালমঁ জানিয়েছেন, শুধু প্যারিসের কাছেই অবস্থিত স্তাদ দো ফ্রান্সে সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশের কার্যক্রমের দায়ভারই শুধু তাঁর ওপর বর্তাবে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন
আরও পড়ুন