আবারও নেতিবাচক কারণে শিরোনাম হয়েছেন মাউরো ইকার্দি।
অবশ্য ইকার্দির খোঁজখবর যাঁরা নিয়মিত রাখেন, তাঁরা দাবি করতে পারেন, শেষ কবেই-বা ইতিবাচক কারণে খবরে এসেছিলেন এই তারকা? ফুটবলকে নাড়িয়ে দেওয়া পরকীয়া কাহিনির মূল অনুঘটক ছিলেন বর্তমানে পিএসজিতে খেলা এই স্ট্রাইকার। বন্ধুর বউয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পরে বিয়ে করে ডিয়েগো ম্যারাডোনার চক্ষুশূল হয়েছেন, নিজের ক্যারিয়ারের সর্বনাশ ডেকে এনেছেন।
ফর্মের চূড়ান্তে থাকার পরও বহুদিন আর্জেন্টিনা দলে সুযোগ না পাওয়ার পেছনেও নাকি এই ঘটনা অবদান রেখেছে। অন্তত এমনটাই দাবি করা হতো সংবাদমাধ্যমে। গত দুদিন ফুটবল বিশ্বে আবারও উত্তেজনা চলছে ইকার্দিকে ঘিরে।
এবারও কারণটা মোটামুটি একই। বর্তমান স্ত্রী ওয়ান্দা নারার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে বন্ধু ম্যাক্সি লোপেজের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন। এবার ইকার্দির বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়েছেন খোদ ওয়ান্দাই। অন্তত ওয়ান্দার দাবি এমন। দুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে বর্তমান স্বামী ইকার্দিকে পরকীয়ার দোষ দিয়ে গালাগাল করেছেন, ইনস্টাগ্রামে অনুসরণ করা বন্ধ করে দিয়েছেন। মুছে দিয়েছেন নিজেদের প্রেমময় সব ছবি। এখন শোনা যাচ্ছে, সন্তানদের নিয়ে রোববার দুপুরে রেগেমেগে প্যারিস ছেড়েছেন ওয়ান্দা।
এহেন অবস্থায় ফুটবলে মন বসানো সম্ভব? ইকার্দিরও বসছে না। প্রিয়তমা স্ত্রীর মান ভাঙানোর জন্য পিএসজির হয়ে অনুশীলন বাতিল করেছেন। জার্মান ক্লাব লাইপজিগের বিপক্ষে এই সপ্তাহে চ্যাম্পিয়নস লিগের মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ, কিন্তু ইকার্দি এখন ওসবে মন দিচ্ছেন না। সংসারই যেখানে ভাঙার অপেক্ষায়, সেখানে ফুটবলের দামই-বা কতটুকু!
এদিকে ফরাসি গণমাধ্যম লে’কিপের খবর, দুজনের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদের প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওয়ান্দার এক বন্ধু জানিয়েছেন, স্বামীর সঙ্গে আলাদা থাকছেন এই আর্জেন্টাইন মডেল ও ইকার্দির মুখপাত্র।
আর্জেন্টিনার ব্যবসায়ী ও মডেল কের ওয়েইনস্টেইনের সঙ্গে ইকার্দি পরিবারের সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ। এই ওয়েইনস্টেইনই জানিয়েছেন ওয়ান্দার আলাদা থাকার খবর। ওয়ান্দা তাঁকে বার্তা পাঠিয়েছেন, ‘আমি আলাদা থাকছি।’ সে বার্তার স্ক্রিনশট নিয়ে ওয়েইনস্টেইন তাঁর নিজের পেজ ‘ক্রিসমাস দে কের’-এ লিখেছেন, ‘ওয়ান্দা আমি তোমার সঙ্গে আছি এবং এই সময়ে তোমাকে সমর্থন দিচ্ছি।’
ওদিকে স্ত্রীর মান ভাঙানোর জন্য সম্ভাব্য সবকিছুই করছেন ইকার্দি। আর্জেন্টিনায় মা দিবস পালিত হয়েছে গতকাল। এ উপলক্ষে নিজের সন্তানদের মা ওয়ান্দার সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে প্রেমময় এক ছবি পোস্ট করেছেন ইকার্দি। সঙ্গে ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতেও ওয়ান্দার সঙ্গে বেশ কিছু ছবি পোস্ট করেছেন এই আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার। তবে ছবিগুলো যে সাম্প্রতিক নয়, তা বলাই বাহুল্য।
ওদিকে দুদিন আগে ইনস্টাগ্রামে স্বামীর পরকীয়া নিয়ে ঝড় তোলা ওয়ান্দা গতকালও অনেক ছবি পোস্ট করেছেন, তবে তাতে ইকার্দির টিকিটিও দেখা যায়নি।আর্জেন্টাইন গণমাধ্যমের খবর, দেশটার অভিনেত্রী চায়না সুয়ারেজের সঙ্গে পরকীয়া চালিয়ে যাচ্ছেন ইকার্দি। অথচ এই ওয়ান্দাকে পাওয়ার জন্যই এককালে কত কিছু করেছিলেন এই পিএসজি তারকা! এখন পিএসজিতে খেললেও এককালে ইকার্দি ছিলেন বার্সেলোনার যুব একাডেমির খেলোয়াড়।
সেখান থেকে ইতালির ক্লাব সাম্পদোরিয়ায় খেলতে গিয়েছিলেন। গিয়েই পেয়ে যান স্বদেশি বন্ধু ও সতীর্থ ম্যাক্সি লোপেজকে।লোপেজেরই স্ত্রী ছিলেন নারা। ২০০৮ সালে বিয়ে হয়েছিল দুজনের। প্রথম দিকে ভালোই চলছিল সংসার।
তিন সন্তানকে ঘিরে আবর্তিত সংসারে ঝড় তুললেন মাউরো ইকার্দি। লোপেজ ঘুণাক্ষরেও জানতেন না, বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে আসলে তাঁর জীবনে কত বড় ঝড় ডেকে এনেছেন। পরে লোপেজ আবিষ্কার করেন, ইকার্দি তাঁর পিঠে ছুরি মেরেছেন। গোপনে নারার সঙ্গে চলছে তাঁর গভীর প্রণয়। সব জেনে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন লোপেজ। ইকার্দিও সাম্পদোরিয়া ছেড়ে ইন্টার মিলানে চলে আসেন।
২০১৪ সালের মে মাসে ইকার্দি ও নারা বিয়ে করেন। সাত বছর একসঙ্গে থাকার পর এই জুটির জীবনেই ফিরে এসেছে পরকীয়ার আগুন। ইকার্দির স্ত্রী নারা দুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামের স্টোরিতে কাউকে উদ্দেশ করে লেখেন, ‘একটা বাজে মেয়ের জন্য আরেকটা পরিবার নষ্ট করলে তুমি!’ যদিও পরে ইনস্টাগ্রামের ওই স্টোরি মুছে দিয়েছেন নারা।