সূচি মানলে নতুন বছরটা হবে ফুটবলময়
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই হাতে তুলে দেওয়া হলো ২০২১ সালের ফুটবল কার্যক্রমের সূচি। সেটি পরবর্তী সময়ে দেখানো হয় স্ক্রিনেও। তিন পাতার সূচি ঘরোয়া থেকে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ঠাসা।
কাল বাফুফে ভবনে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষিত নতুন বছরের ক্যালেন্ডার দেখে মনে হতে পারে, বছরটা হতে যাচ্ছে ফুটবলময়। শুধু ঘোষণা দিয়েই থামেননি, বাস্তবায়নও করে দেখাতে চান বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
নতুন বছরে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের বাকি তিনটি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি মার্চে, ভারত ও ওমানের বিপক্ষে খেলা জুনে।
সেপ্টেম্বরে আছে সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ। দুটি নির্ধারিত সূচির বাইরে মার্চে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আয়োজন করতে চায় বাফুফে। এ ছাড়া প্রতি ফিফা উইন্ডোতে জাতীয় দলকে ম্যাচ খেলাতে চায় বাফুফে।
তবে ফিফা উইন্ডোর ম্যাচগুলো নির্ভর করছে বাছাইপর্বের তিনটি ম্যাচের ফলাফলের ওপর। এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‘বাছাইপর্বে আমাদের এখনো তিনটা ম্যাচ আছে। দল কোয়ালিফাই করলে পরিকল্পনা এক রকম হবে, না করলে আরেক রকম হবে। হয়তো ওই ফিফা উইন্ডোতে প্রীতি ম্যাচ খেলা হবে।’
জাতীয় দলের বাইরেও ক্লাবের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার স্বাদ পাবেন দেশের ফুটবলাররা। ১৮ থেকে ৩০ অক্টোবর শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপের সূচি রাখা হয়েছে। তবে আয়োজক হবে কারা, এখনো ঠিক হয়নি। আগে টুর্নামেন্টের আয়োজক ছিল চট্টগ্রাম আবাহনী ক্লাব।
এই ব্যাপারে কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‘এখনো কারও কাছ থেকে আয়োজনের ব্যাপারে প্রস্তাব পাইনি আমরা। চট্টগ্রাম আবাহনী এটা আয়োজন করে। তারা এখনো কিছু বলেনি। তারা আয়োজন করতে চাইলে বিবেচনা করা হবে। বাফুফে বা যে-ই আয়োজক হোক না কেন, টুর্নামেন্ট হবে।’
১৩ জানুয়ারি শুরু হয়ে ১৪ আগস্ট শেষ হবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ। এর মাঝে ১ থেকে ১৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে স্বাধীনতা কাপ। এ ছাড়া জাতীয় দলের ক্যাম্প ও খেলা থাকায় লিগে ৪০ দিনের লম্বা একটি বিরতি আছে। প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই এই সূচি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাফুফে।
নতুন সূচিতে ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত হবে তৃতীয় বিভাগ ফুটবলের দুটি আসর। প্রথমটি হবে ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। দ্বিতীয়টি ১০ জুন শুরু হয়ে শেষ হবে ৩১ আগস্ট। এ ছাড়া প্রায় একই সময়ে অনুষ্ঠিত হবে পাইওনিয়ার, দ্বিতীয় ও প্রথম বিভাগ লিগ।
পাইওনিয়ার পয়লা মার্চ শুরু হয়ে শেষ হবে ৩০ এপ্রিল, দ্বিতীয় বিভাগ পয়লা মে শুরু হয়ে শেষ ৩১ জুলাই ও প্রথম বিভাগ পয়লা মে শুরু হয়ে শেষ হবে জুলাইয়ে। অর্থাৎ এক খেলোয়াড়ের এক বছরেই একাধিক বিভাগে খেলার সুযোগ থাকছে না। এর জন্য প্রয়োজন বিপুলসংখ্যক ফুটবলারের।
মূলত খেলোয়াড় উঠে আসার দিকেই নজর কাজী সালাউদ্দিনের, ‘দেখা যায় একই খেলোয়াড় ঘুরেফিরে একাধিক ক্লাবে খেলে। লিগগুলো একসঙ্গে আয়োজন করলে প্রতিটি দলকে অনেক খেলোয়াড় তুলে আনতে হবে। খেলোয়াড় তুলে আনা ক্লাবের দায়িত্ব। এর বাইরে যে সহযোগিতার প্রয়োজন, তা আমরা দেব।’
বাফুফে খেলার আয়োজন করতে পারে। কিন্তু খেলবে ক্লাবগুলো। অতীতে দেখা গেছে, নির্দিষ্ট সূচি অনুযায়ী খেলতে চায় না ক্লাবগুলো।
নতুন বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী ক্লাবগুলো না খেললে বাইলজ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাফুফে সভাপতি, ‘সূচি মেনে খেলা হবে। কোনো ক্লাব না খেললে বাইলজ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদের ফুটবলেও থাকবে ব্যস্ততা। ২০২১ সালে মেয়েদের লিগের দল বদল ২০ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে শেষ হবে ২৭ ফেব্রুয়ারি। ৫ মার্চ লিগ শুরু হয়ে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে।
মেয়েদের নিয়ে জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে বঙ্গমাতা সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ। এ ছাড়া জেলাগুলোকে নিয়ে পয়লা মার্চ শুরু হয়ে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত আয়োজিত হবে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ।
জেএফএ অনূর্ধ্ব-১৪ চ্যাম্পিয়নশিপ ১ এপ্রিল শুরু হয়ে শেষ হবে ৩০ এপ্রিল। এ ছাড়া ছেলে ও মেয়েদের উভয় বিভাগে রাখা হয়েছে কয়েকটি বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট। ক্যালেন্ডারে নতুন সংযোজন বলতে অনূর্ধ্ব-১০/১২ বছরের বালকদের নিয়ে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ।