সানের উদয় হচ্ছেই না!
>পেপ গার্দিওলার দল ছাড়তে চাচ্ছেন তরুণ জার্মান তারকা লিন্ডস সানে। মূল একাদশে নিয়মিত সুযোগ না পাওয়াই যার কারণ।
লিওনেল মেসি, সার্জিও বুসকেটস, থিয়াগো আলকানতারা, জোশুয়া কিমিখ—এঁদের সবার মধ্যে মিল কোথায় বলতে পারবেন? ভিন্ন ভিন্ন দলের হয়ে খেললেও প্রত্যেকের ক্যারিয়ারের উত্থান হয়েছে পেপ গার্দিওলার অধীনে। আরও পাকা খেলোয়াড় হবেন, এই আশায় তরুণ তারকারা মুখিয়ে থাকেন গার্দিওলার অধীনে খেলার জন্য। জার্মান উইঙ্গার লেরয় সানেও এর ব্যতিক্রম নন। কিন্তু নিজেকে শাণিয়ে নেওয়ার স্বপ্নটাতেই মরচে পড়ে যাচ্ছে সানের। সিটিতে নিয়মিত সুযোগই পাচ্ছেন না গত মৌসুমে ইংলিশ লিগের সেরা তরুণ খেলোয়াড়। ফলে গার্দিওলার ছায়া থেকে বের হওয়ার চেষ্টায় আছেন তিনি।
অনেক প্রভাবশালী কোচের বিরুদ্ধে দুর্নাম আছে তরুণ প্রতিভাদের ঠিকঠাকভাবে সুযোগ না দেওয়ার। পেপ গার্দিওলা অবশ্য সেদিক থেকে পুরোপুরি ভিন্ন। গার্দিওলার দলের বিশাল অংশ জুড়ে থাকেন তরুণ তারকারা। বার্সা, বায়ার্নে কার্যকর একাডেমি ও যুবদল পেলেও সিটিতে তেমন কিছুই পাননি পেপ। তাই তরুণ তারকা কিনে আনতে হয়েছে বাইরে থেকে। বুন্দেসলিগায় খুব কাছে থেকে সানের উত্থান দেখেছেন পেপ। তাই প্রথম মৌসুমেই শালকে থেকে ভিড়িয়েছিলেন সিটিতে। দলের নিয়মিত তারকাও হয়ে উঠেছিলেন সানে।
বর্তমান মৌসুম যেন তাতে জল ঢেলে দিল। পেপ গার্দিওলার নতুন অস্ত্র হয়েছেন রহিম স্টার্লিং। ভয়াবহ ফর্মে থাকা স্টার্লিং ও বার্নার্ডো সিলভার কারণে দলে ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন সানে। জাতীয় দলে চলছে সংস্কার, এই সময়ে যদি নিজেরই ক্লাবে জায়গা ঠিক না থাকে, তবে নতুন জার্মান দলেও সুযোগ হবে না তাঁর। এর আগে তাঁকে ছাড়াই বিশ্বকাপ যাত্রা করেছে জার্মানি। এবার প্রমাণ না করতে পারলে বেশ বড় সময়ের জন্যই জাতীয় দলের দোর বন্ধ হয়ে যাবে সানের জন্য।
সে সুযোগই পাচ্ছে না সানে। গত পাঁচ ম্যাচে সাকল্যে মাঠে ছিলেন ৮০ মিনিটের কাছাকাছি। এমনকি চ্যাম্পিয়নস লিগের কোনো ম্যাচে যখন সিটি পিছিয়ে থাকে, সে সময়েও গার্দিওলা ভরসা রাখতে পারেননি তাঁর ওপর। চ্যাম্পিয়নস লিগে টটেনহামের বিপক্ষে আগুনঝরা সে ম্যাচে সানে সুযোগ পেয়েছেন মাত্র ৭ মিনিট। বড় ম্যাচে তাঁর ওপরে ভরসা রাখতে পারছেন না গার্দিওলা। যে কারণে গার্দিওলার ওপর কিছুটা মনঃক্ষুণ্ন সানে।
দলের আক্রমণভাগের সব খেলোয়াড়ের চুক্তি নতুন করে বাড়াচ্ছে সিটি বোর্ড। গতকাল দলের আলজেরীয় উইঙ্গার রিয়াদ মাহরেজের দল ছাড়ার গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছেন পেপ। মূল দলে সানের জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনা আরও কমে যাচ্ছে। যা বোঝা যাচ্ছে, সানে থাকলেও তাঁকে থাকতে হবে স্কোয়াডের সাধারণ একজন খেলোয়াড় হিসেবে। তাই সানের দল ছাড়াটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যদিও সিটির সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি রয়েছে সানের। কিন্তু নতুন জার্মানির পোস্টার বয় হওয়ার স্বপ্নে বিভোর সানের মন উঠে গিয়েছে সিটির ওপর থেকে।
সানের দিকে এর মধ্যেই হাত বাড়িয়ে রেখেছে বায়ার্ন মিউনিখ। জার্মানির সেরা খেলোয়াড়দের বরাবরই নিজেদের দলে নিয়ে আসে বায়ার্ন। বর্তমান দলে নিকলাস সুলে, সার্জ গেন্যাব্রি, জোশুয়া কিমিখ, লেওন গোরেৎজকা সেই নীতিরই বহিঃপ্রকাশ। তার ওপর আরিয়ান রোবেন ও ফ্রাঙ্ক রিবেরির গড়া বিখ্যাত ‘রোবারি’ জুটি বিদায় নিচ্ছে মৌসুম শেষে। তাই সানের ওপরই ভরসা করতে চাইছে বায়ার্ন। ২০১৬ সালে কিনতে চাইলেও গার্দিওলার কারণে তাঁকে কিনতে পারেনি বায়ার্ন। এবার সে সুযোগ হাতছাড়া করতে চাচ্ছে না জার্মান চ্যাম্পিয়নরা। তবে গার্দিওলার হাত থেকে তরুণ তারকা ছুটে যাওয়ার ঘটনা একেবারেই নতুন। তার সঙ্গে কীভাবে মানিয়ে নেন পেপ, সেটাই দেখার বিষয়।