২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

সব শিরোপা হারানো জাভির সামনে পাঁচ ফাইনাল

দলের হারের দায় নিজের কাঁধে নিয়েছেন জাভিছবি: এএফপি

একসময় রিয়াল মাদ্রিদের সংবাদ সম্মেলন মানেই ছিল শব্দটার উপস্থিতি। জিনেদিন জিদান তখন রিয়ালের কোচ। টুর্নামেন্ট, ম্যাচ, প্রতিপক্ষ—কোনো বাছবিচার না করেই ফরাসি কিংবদন্তি বলতেন, ‘আগামীকালের ম্যাচটা আমাদের জন্য আরেকটি ফাইনাল।’ কোনো শিরোপা জেতার জন্য পরের ম্যাচটা জেতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা বোঝাতেই শব্দটা ব্যবহার করতেন জিদান। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছিল, কোনো ম্যাচের আগে জিদান ‘ফাইনাল’ শব্দটি উচ্চারণ না করলেই সমর্থকদের মনে অস্বস্তি জাগত পরের ম্যাচের ভাগ্য নিয়ে। জাভিও কি সে পথে এগোচ্ছেন?

বার্সেলোনার দায়িত্ব পাওয়ার পর জাভিকেও নিয়মিত ‘ফাইনাল’ শব্দটা বলতে শোনা গেছে। এই মৌসুমে বার্সেলোনার আর কোনো শিরোপা জেতার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু বার্সেলোনার এখন লক্ষ্য লিগে অন্তত দ্বিতীয় হওয়া। আর সে লক্ষ্যের পথে কাল একটা হোঁচট খেয়েছে বার্সা। ঘরের মাঠে রায়ো ভায়োকানোর বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে গেছে দলটি। পরের পাঁচ ম্যাচ জেতা এখন জরুরি হয়ে উঠেছে দলটি। জাভি তাই জানিয়ে দিয়েছেন, লিগে আগামী পাঁচ ম্যাচই তাঁর জন্য ফাইনাল।

ম্যাচের ৭ মিনিটেই গোল হজম করেছে বার্সেলোনা
ছবি: এএফপি

নিজেদের ইতিহাসে এই প্রথম ঘরের মাঠে টানা তিন ম্যাচে হারল বার্সেলোনা। ইউরোপা লিগে ফ্রাঙ্কফুর্টের বিপক্ষে হার দিয়ে শুরু, এরপর কাদিজ এসে ক্যাম্প ন্যু জয় করেছে। আর কাল করল রায়ো ভায়োকানো। প্রায় ২২ বছর আগে সর্বশেষ ক্যাম্প ন্যুতে জয় পেয়েছিল ভায়োকানো। সে ম্যাচের একজন কালও ছিলেন স্টেডিয়ামে। ২০০০ সালের মে মাসের সে ম্যাচেও বার্সার ডাগআউটে ছিলেন জাভি। তখন বদলি খেলোয়াড় হিসেবে জায়গা হয়েছিল বেঞ্চে, এবার কোচ হিসেবে।

এই হারে লিগে এখন সেভিয়ার সমান পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে বার্সেলোনা। মুখোমুখি লড়াইয়ে অবশ্য এগিয়ে বার্সা। এ কারণে পরের পাঁচ ম্যাচই জিততে পারলে অবস্থান ধরে রাখতে পারবে তারা।

কাল রেফারির বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছে বার্সেলোনা
ছবি: এএফপি

যেকোনো মূল্যে পরের মৌসুমের স্প্যানিশ সুপার কাপ খেলতে চায় বার্সেলোনা। আর্থিকভাবে ধুঁকতে থাকা এক দলের জন্য নিশ্চিতভাবেই ৮০ লাখ ইউরো বেশ বড় অঙ্ক। আগামী পাঁচ ম্যাচে তাই পা হড়কানোর কোনো সুযোগ দেখছেন না জাভি, ‘ঘরের মাঠে কাদিজ ও রায়োর বিপক্ষে জেতা উচিত—এমন দুটি ম্যাচ হেরেছি। কিন্তু নভেম্বরে যখন এসেছিলাম, তখন দল নয় নম্বরে ছিল। ক্লাব বেশ ধুঁকছিল। এ ম্যাচগুলো বেশ জটিল, কিন্তু এটাই ফুটবল। আমাদের মায়োর্কাকে (পরের ম্যাচের প্রতিপক্ষ) নিয়ে ভাবতে হবে, এই ফলের কথা ভুলতে হবে এবং প্রস্তুত হতে হবে। পাঁচটি ফাইনাল বাকি।’

ঘরের মাঠে টানা তিন ম্যাচ হেরেছে বার্সেলোনা
ছবি: এএফপি

ঘরের মাঠে টানা হারের দায় নিজের কাঁধেই নিচ্ছেন জাভি, ‘আমাদের আরও ভালো প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামতে হবে। প্রথমার্ধে আমরা ভালো খেলিনি। দ্বিতীয়ার্ধে ভালো করেছি, সবকিছুই করেছি, কিন্তু পরিস্থিতি কঠিন ছিল। কোচ হিসেবে আমি ওদের অনুপ্রেরণা দিতে না পারার দোষ মেনে নিচ্ছি।’ দলের হারে নিজের ভুলের ব্যাখ্যায় জাভি আরও বলেছেন, ‘ভুলগুলো বারবার হতে দেওয়া যায় না। আমাদের আত্মসমালোচনা করতে হবে। এটাই আমাদের বাস্তবতা।’

ওদিকে ম্যাচের প্রথম ৯০ মিনিটে মাত্র একটি শট নিয়ে সেটাতেই গোল পেয়েছে রায়ো। ঘরের মাঠে যেভাবে গোল খাচ্ছেন, তাতে বিরক্তি ধরে গেছে অধিনায়ক সের্হিও বুসকেতসের, ‘গোলগুলো আমাদের মনোযোগের অভাব বা ভুলের কারণে হচ্ছে। আমরা ভুল করেনি, কিন্তু ওরা যেভাবে গোলটা করেছে...আলভারো গার্সিয়া দ্রুততার সঙ্গে যে গোল করেছে, সেটা এমন এক আক্রমণের মাধ্যমে যে ধরনের আক্রমণের ভিডিও আমরা অন্তত ২০০ বার দেখেছি। তারপরও আমরা সেটা থামাতে পারিনি।’