লা লিগায় বার্সেলোনার দুটি ক্লাব খেলে—বার্সেলোনা ভ্রমণে গিয়ে এই তথ্য জেনে বেশিরভাগ পর্যটকই নাকি অবাক হন। একবার এই গল্প শুনে হোয়ান কাপদেভিলা মুচকে হেসে বলেছিলেন, ‘সত্যি? এমন মানুষও আছে যারা বার্সার নাম শোনেনি?’’
২০১০ সালে স্পেনের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা কাপদেভিলা মজা করেই বলেছিলেন কথাটা। কাপদেভিলা যে বার্সেলোনারই আরেক ক্লাব এসপানিওলের মানুষ। সেই এসপানিওল, যে ক্লাবটি ‘বড়লোক’ প্রতিবেশীদের চেয়ে সব বিচারেই যোজন ব্যবধানে পিছিয়ে।
বার্সার আলোকচ্ছটার পাশে মিটমিট করা জ্বলা সেই এসপানিওলই আজ লা লিগায় প্রতিবেশীদের কাঁপিয়ে দিয়েছে। শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে বার্সার সঙ্গে ২–২ গোলে ড্র করেছে দলটি। তাতে ২০০৯ সালের পর লা লিগায় ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনাকে হারানোর সুযোগটা হাতছাড়া হলো আরসিডি এসপানিওল অব বার্সেলোনার। হাতছাড়া হলো লা লিগার এক মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনাকে হারানোর মতো দুর্লভ অর্জনও। অক্টোবরে ঘরের মাঠেই রিয়ালকে ২–১ গোলে হারিয়েছিল এসপানিওল।
২–১ গোলে এগিয়ে থেকে যোগ করা ৬ মিনিট শুরু করেছিল এসপানিওল। নাটকীয় সেই ৬ মিনিটের দ্বিতীয় মিনিটে লাল কার্ড দেখে বেড়িয়ে যান বার্সার জেরার্ড পিকে ও এসপানিওলের নিকো মেলামেদ।
ম্যাচের একেবারে শেষ মিনিটে আদামা ত্রাওরের ক্রস থেকে এসপানিওলের বক্সে খুঁজে নেয়ে লুক ডি ইয়ংয়ের মাথা। গোল করতে ভুল করেননি বদলি নামা ডাচ তারকা (২–২)।
ম্যাচের প্রথম গোলটিও করেছিল বার্সেলোনাই। ম্যাচের বয়স ২ মিনিট না হতেই গোল। বার্সার প্রথম আক্রমণ ছিল সেটি। বাঁ পাশ থেকে দেওয়া জর্দি আলবার ক্রস পেয়ে যান ফাঁকায় দাঁড়ানো পেদ্রি। তরুণ স্প্যানিশ খেলোয়াড়ের ভলিতে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা।
মেসিকে হারিয়ে ফেলার পর নিজেদের হারিয়ে খোঁজা বার্সা দ্বিতীয় গোলটি পেয়ে যেতে পারত ৩৮ মিনিটে। উলভারহ্যাম্পটন থেকে বার্সায় ফেরা আদামা ত্রাওরের জোরালো শট এসপানিওল গোলরক্ষক দিয়েগো লোপেজের কাঁধে লেগে প্রতিহত হয়।
পরের মিনিটেই এসপানিওলের আদ্রিয়া পেদরোসার শট ফিরিয়ে দেন বার্সা গোলররক্ষক মার্ক–আন্দ্রে টের স্টেগেন। এসপানিওলের পরের আক্রমণটি আর ফেরাতে পারেননি টের স্টেগেন। রাউল দি তমাস বার্সার রক্ষণভাগের ভেতর থেকে বল বানিয়ে দেন পেনাল্টি বক্সের বাইরে থাকা সের্হি দারদেরকে। দূরের পোস্ট দিয়ে অসাধারণ এক গোল করে সমতা ফেরান স্প্যানিশ মিডফিল্ডার।
বার্সেলোনা এগিয়ে থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করতে পারত। পারেনি জর্ডি আলবার হাস্যকর ভুলে। এসপানিওলের বক্সে ফাঁকায় দাঁড়ানো আলবা গোল শট না নিয়ে রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের মতো যেন বলটাকে ক্লিয়ার করে দিলেন!
৫৬ মিনিটে বার্সাকে গোল এনে দিয়েছিলেন গাভি। সেই গোল বাতিল হয়ে যায় ভিএআরে অফসাইডের কারণে। ৯ মিনিট পর পুরো স্টেডিয়ামকে মাতিয়ে ২–১ গোলে এগিয়ে যায় এসপানিওল। এরিক গার্সিয়ার কাছে থেকে বল পেয়ে দলকে এগিয়ে নেন রাউল দি তমাস।
কিন্তু যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তের গোল খেয়ে ১৩ বছরের অপেক্ষা আর ফুরাল না এসপানিওলের।
এই ১ পয়েন্ট পেয়ে আতলেতিকো মাদ্রিদকে টপকে পয়েন্ট তালিকার চারে উঠে এল বার্সা। ২৩ ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট দলটির। ২৪ ম্যাচে ৫৪ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে রিয়াল মাদ্রিদ। ২৪ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে এসপানিওল আছে ১৩ নম্বরে।