লেভানডফস্কিকে বার্সেলোনায় যেতে দেবে না বায়ার্ন
যুদ্ধে নেমেছে বায়ার্ন মিউনিখ ও রবার্ট লেভানডফস্কি। ৩৪ বছর হয়ে গেছে পোলিশ স্ট্রাইকারের। বায়ার্ন মিউনিখের সঙ্গে আর এক বছর চুক্তি আছে তাঁর। এ অবস্থায় শেষ একটি বড় চুক্তি চাইছেন ক্লাবের কাছ থেকে। সেটা দিতে আগ্রহী নয় বায়ার্ন। এতে রাগে-ক্ষোভে ক্লাব ছেড়ে বার্সেলোনায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন লেভা। প্রকাশ্যেই বলেছেন, বায়ার্নে তাঁর গল্পটা শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু বায়ার্ন সেটা মানলে তো! জার্মান ক্লাবটির দিক থেকে আবারও ঘোষণা এসেছে, আগামী মৌসুমে বায়ার্নেই খেলতে হবে লেভানডফস্কিকে।
মৌসুমজুড়েই বায়ার্নে লেভানডফস্কির চুক্তি নবায়নসংক্রান্ত নাটক চলেছে। একদিকে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি চাইছেন লেভানডফস্কি; টানা তিন মৌসুম ইউরোপের সর্বোচ্চ স্কোরার চাইছিলেন, বেতনটাও তাই বাড়িয়ে দেওয়া হোক—এমনই চাওয়া পোলিশ স্ট্রাইকারের। কিন্তু বেতনের ক্ষেত্রে বরাবরই হিসাবি বায়ার্ন ক্যারিয়ারের শেষ লগ্নে থাকা একজনের জন্য সেটা করতে রাজি নয়।
উল্টো দিকে হাজির হয়েছে গত মৌসুমে মেসিকে হারানোর পর বড় তারকার সংকটে ভোগা বার্সেলোনা। খেলোয়াড়দের উচ্চ বেতন দিয়ে আর্থিক সমস্যায় পড়া ক্লাবটি লেভানডফস্কিকে তিন বছরের চুক্তি দিতে চায়, দিতে চায় লেভানডফস্কির আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বেতনও। ব্যস, দুই দুইয়ে চার।
কিন্তু দুইয়ে দুইয়ে চার মেলানোর সমীকরণে যে বায়ার্নও আছে। দলবদলের এই গুঞ্জনের শুরু থেকেই লেভানডফস্কিকে ছাড়ার ব্যাপারে অনিচ্ছা জানিয়েছে বায়ার্ন। ক্রীড়া পরিচালক হাসান সালিহামিদিজিচ, বোর্ড পরিচালকদের সভাপতি অলিভার কান বারবার বলেছেন, মৌসুমে ৫০ গোল করতে সক্ষম স্ট্রাইকারকে কেউ বিক্রি করে না। ক্লাব সভাপতি হার্বার্ট হেইনারও ক্লাবের অনড় নীতিটা জানিয়ে দিয়েছেন।
এত দিন শোনা গেছে, প্রকাশ্যে যতই ‘বিক্রি’ না করার কথা জানাক, বার্সেলোনার সঙ্গে দর-কষাকষি চলছে বায়ার্নের। বার্সেলোনা এরই মধ্যে ৩ কোটি ৪০ লাখ ইউরোর প্রস্তাব দিয়েছে, ওদিকে বায়ার্ন চাইছে ৬ কোটি ইউরো। চুক্তির মাত্র এক বছর বাকি আছে, এবং বয়স ৩৪—এ বিবেচনায় এত অর্থ খরচে রাজি নয় বার্সেলোনা। জার্মান পত্রিকা বিল্ড জানিয়েছে, অঙ্কটা ৪ কোটি ইউরো পেরোলেই নাকি রাজি হয়ে যাবে বায়ার্ন।
গত সপ্তাহে পোল্যান্ডের হয়ে খেলতে গিয়ে বোমাটা ফাটিয়েছিলেন লেভানডফস্কি। বায়ার্নে থাকতে না চাওয়ার সেই ঘোষণায় মিশে ছিল তীব্র ঝাঁজ, ‘শুরুতেই পরিষ্কার করে বলে দিই এবং এ নিয়ে পরে কিছু বলতে চাই না। শুধু এটা জানি, এই ক্লাবে আমার দিন শেষ। কয়েক সপ্তাহ ধরে যা হয়েছে, তাতে এই ক্লাবে আমার আর থাকার কোনো সম্ভাবনা দেখি না। এ মুহূর্তে এর বেশি কিছু বলতে চাই না।’ ইঙ্গিতে বলেছেন, বায়ার্নের উচিত তাঁকে মুফতেই যেতে দেওয়া।
বায়ার্ন সভাপতি লেভানডফস্কির এমন দাবি শুনে বিস্ময় লুকাননি, ‘চুক্তি তো চুক্তিই। কী অবস্থা হবে যদি খেলোয়াড় চাইলেই তাঁর চুক্তি বাতিল করতে পারে, অথচ আমাদের ঠিকই শেষ দিন পর্যন্ত বেতন দিতে হবে? রবার্ট যেভাবে কথাটা বলেছে, তাতে আমি খুবই বিস্মিত হয়েছি। আমি হলে এভাবে করতাম না। আমি এ নিয়ে চিন্তিত নই। রবার্ট পেশাদার। আমি নিশ্চিত, ও আগামী মৌসুমে আমাদের হয়েই খেলবে।’