২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

লিভারপুলকে হারিয়েই ম্যারাডোনাকে শ্রদ্ধা জানালেন এই আর্জেন্টাইন

লিভারপুলকে নাচিয়ে ছেড়েছেন গোমেজ।ছবি : রয়টার্স

‘পরবর্তী ম্যারাডোনা’ হিসেবে যে ভূরি ভূরি তারকার নাম বছরের পর বছর ধরে মিডিয়ায় এসেছিল, তার মধ্যে আলেহান্দ্রো গোমেজের নামটাও ছিল। ম্যারাডোনার মতো তিনিও বেঁটেখাটো, খেলেন ফরোয়ার্ড হিসেবে। ১০ নম্বর জার্সিটা শোভা পায় তাঁর গায়েও। ম্যারাডোনার মতো ক্যারিয়ারের মধ্যগগন পার করছেন ইতালির ক্লাবে খেলেই। আর দশটা আর্জেন্টাইন তরুণের মতো গোমেজের ওপরও ছিল ম্যারাডোনার প্রভাব। হয়তো ম্যারাডোনাকে দেখেই ফুটবলে লাথি মারা শিখেছিলেন, শিখেছিলেন খেলাটাকে ভালোবাসতে। সে কিংবদন্তির মৃত্যুর খবর যখন গোমেজের কানে গেল, কী মনে হয়েছিল তাঁর?

আর দশটা আর্জেন্টাইন তরুণের মতো গোমেজের ওপরও ছিল ম্যারাডোনার প্রভাব।
ছবি: রয়টার্স

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে গোমেজের মনের খবর জানতে সমস্যা হয়নি। মাঠে নামার আগেই ইনস্টাগ্রামে পোস্ট দিয়ে ম্যারাডোনার প্রতি নিজের অনুরাগের কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন গোমেজ। লিখেছিলেন, ‘শান্তিতে ঘুমান, ডিয়েগো। আমরা আপনাকে অনেক মিস করব। আমরা যারা সব সময় আপনার মতো হতে চেয়েছি আর আপনার বিখ্যাত ১০ নম্বর জার্সিটা পরেছি, তাঁরা সবাই আপনাকে অনেক মিস করব। আজ আপনার সঙ্গে ফুটবলও মারা গেল যেন। আপনি অগণিত মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন, আনন্দ দিয়েছেন। শেষ দিনগুলো যেভাবে কাটিয়েছেন, সেটা আপনার প্রাপ্য ছিল না। আপনার পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের প্রতি আমার সমবেদনা। প্রচণ্ড কষ্টের একটা খবর।’

কিন্তু শুধু কিছু শব্দের বুননে গড়া বাক্যের কী ক্ষমতা ম্যারাডোনার প্রতি গোমেজদের ভালোবাসা বোঝানোর? তাই প্রিয় কিংবদন্তিকে সম্মান জানানোর জন্য গোমেজ বেছে নিলেন সেই মাধ্যমটা, যা কিংবদন্তির সঙ্গে এক করেছে তাঁকে। গত রাতে লিভারপুলের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ খেলতে নেমেছিল আতালান্তা। পরের রাউন্ডের আশা বাঁচিয়ে রাখার জন্য ম্যাচটা জিততেই হতো আতালান্তাকে। আবার খেলাও ছিল লিভারপুলের মাঠ অ্যানফিল্ডে। যে মাঠে জিতে আসাটা আজকাল ফুটবলের কঠিন কাজগুলোর একটি।

গোমেজ-ইলিচিচে ভর করে অ্যানফিল্ড থেকে জিতে এসেছেন আতালান্তা।
ছবি : রয়টার্স

কিন্তু গোমেজদের সঙ্গে যে ম্যারাডোনা ছিলেন! ওপর থেকে হয়তো দেখছিলেন, প্রিয় শিষ্য কী করতে পারেন মর্ত্যলোকে। গোমেজদের কাছে তাই পরাস্ত হলো লিভারপুল। হেরে বসল ২-০ গোলে। গোমেজ গোল না করলেও, গোটা ম্যাচ যেভাবে খেলেছেন, মনে হতেই পারে, এককালে যে তাঁকে ‘নতুন ম্যারাডোনা’ বলা হতো, তা ভুল কিছু বলা হতো না। দুই গোলের একটায় সরাসরি সহায়তা করেছেন, আধ ডজন নিখুঁত লং বল দিয়েছেন। ৬৯ বার বলে স্পর্শ দিয়ে আক্রমণ রচনা করতে চেয়েছেন। ফন ডাইক, আরনল্ড, রবার্টসনবিহীন লিভারপুলের তরুণ রক্ষণভাগ তাতে খাবি খেয়েছে ৯০ মিনিটজুড়ে। গোল হয়তো পাননি, কিন্তু তাতে গোমেজের পারফরম্যান্সের মহিমা কমেনি মোটেও। এমনকি ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে বদলি হয়ে যখন উঠে যাচ্ছিলেন, ধারাভাষ্যকারেরাও বলছিলেন, কী দুর্দান্তভাবেই না নিজের ‘আইডল’কে সম্মান জানালেন গোমেজ!

ম্যাচ হারলেও নিজেদের গ্রুপে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে লিভারপুল। গ্রুপপর্বে এখনো মিতিউলান আর আয়াক্সের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলবে তারা। সে দুই ম্যাচের একটায় জিতলেই পরের রাউন্ড নিশ্চিত। ওদিকে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখ ৩-১ গোলে হারিয়েছে সালজবুর্গকে। মার্শেইর মাটিতে গিয়ে ২-০ গোলে জিতে এসেছে পোর্তো। আতলেতিকো গোলশূন্য ড্র করেছে লোকোমোটিভ মস্কোর সঙ্গে। শাখতার দোনেৎস্ককে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছে বরুসিয়া মনশেনগ্লাডবাখ। অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছে ম্যানচেস্টার সিটি।