রোনালদোর সঙ্গীর জন্য খরচ রোনালদোর চেয়েও বেশি

রোনালদোরও সঙ্গে আবার খেলার সুযোগ হচ্ছে মোরাতার।
ছবি: টুইটার

বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদ ঘুরে এখন জুভেন্টাসে খেলছেন পাঁচটি ব্যালন ডি’ অরের মালিক। দুই বছর আগে ক্লাব রেকর্ড ভেঙে রিয়াল থেকে ইতালিয়ান ক্লাবটিতে নাম লিখিয়েছেন পর্তুগিজ সুপারস্টার। সেই জুভেন্টাসেই রোনালদোর চেয়ে বেশি দলবদলের অঙ্ক খসানো ফুটবলার আছেন শুনলে চোখ কপালে উঠে যাওয়ার কথা। কিন্তু কথাটায় ভুল নেই এতটুকু। ক্যারিয়ারজুড়ে দলবদলের অঙ্কে রোনালদোর চেয়ে বেশি খরচ হয়েছে স্প্যানিশ স্ট্রাইকার আলভারো মোরাতার পেছনে।

জুভেন্টাস এরই মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দিয়েছে মোরাতার যোগ দেওয়ার কথা। গঞ্জালো হিগুয়েইন ইউরোপের পাঠ চুকিয়ে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। মারিও মানজুকিচ তো গত মৌসুমেই চলে গেছেন। জুভেন্টাসের আক্রমণভাগে তাই রোনালদোর একজন সঙ্গী খুঁজছিলেন কোচ আন্দ্রেয়া পিরলো। আর এ কাজে ২০১৪ তে জুভেন্টাসে দুই মৌসুম কাটানো মোরাতাকেই পছন্দ হয়েছে তাদের। তাঁকে আপাতত ধারে নিচ্ছে মোরাতাকে। এ জন্য আতলেতিকো মাদ্রিদকে ৯০ লাখ ইউরো দিচ্ছে জুভেন্টাস। আর সে সঙ্গে সুযোগ থাকছে আগামী বছর সেই দলবদল স্থায়ী করে নেওয়ার। সে ক্ষেত্রে আরও ৪ কোটি ৫০ লাখ ইউরো খসাতে হবে জুভেন্টাসকে।

সর্বশেষ মোরাতা ও রোনালদো একসঙ্গে খেলেছেন ২০১৭ সালে। রিয়ালের জার্সিতে খেলা সে ম্যাচে সেদিন দুজনের প্রতিপক্ষ ছিল জুভেন্টাস।

আর তাহলেই দলবদলের অঙ্কে রোনালদোকেও টপকে যাবেন মোরাতা। এখন পর্যন্ত এখন পর্যন্ত চারটি দলের হয়ে পেশাদার ফুটবলে খেলেছেন রোনালদো। নিজ দেশের স্পোর্টিং সিপি থেকে শুরু, মাঝে ছিলেন ইউনাইটেড ও রিয়ালে। আপাতত থিতু হয়েছেন জুভেন্টাসে। ২০০৩ সালে স্পোর্টিং লিসবন থেকে ১ কোটি ৯০ লাখ ইউরোতে পাড়ি জমিয়েছিলেন ইংল্যান্ডে। ২০০৯ সালে তৎকালীন বিশ্ব রেকর্ড ৯ কোটি ৪০ লাখ ইউরোতে গিয়েছিলেন মাদ্রিদে। ২০১৮ সালে জুভেন্টাসও তাঁকে টানতে খরচ করেছিল ১০ কোটি ইউরো। অর্থাৎ রোনালদোর সুবাদে দলবদলের বাজারে এ পর্যন্ত ২১ কোটি ৩০ লাখ ইউরো হাতবদল হয়েছে।

ক্লাব ক্যারিয়ারে এখনো ১৫০ গোল করেননি মোরাতা। কিন্তু ৮ বছর শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেই ইউরোপের অনেক পরাশক্তির হয়ে খেলা হয়ে গেছে। রিয়াল মাদ্রিদের একাডেমি থেকে বেড়ে ওঠা এই স্ট্রাইকার ২০১৪ সালে প্রথম দল বদল করে নাম লেখান জুভেন্টাসে। স্পেন থেকে তাঁকে ইতালিতে নিতে ২ কোটি ইউরো মিলিয়ন খরচ করতে হয় জুভদের। দুই বছর পরেই আবার তাঁকে ফিরিয়ে আনে রিয়াল। বাই ব্যাক ক্লজ ব্যবহার করে ৩ কোটি ইউরো ইউরোতেই তাঁকে ফেরায় রিয়াল। করিম বেনজেমার উত্তরসূরি হিসেবে ফিরে ভালোই করেছিলেন। ৪৩ ম্যাচে ২০ গোল করে মোরাতা আর অপেক্ষা করতে চাননি, অন্য কোনো ক্লাবের মূল স্ট্রাইকার হিসেবে খেলতে চেয়েছিলেন।


পরের বছরই ৬ কোটি ৬০ লাখ ইউরো (মাদ্রিদভিত্তিক সংবাদমাধ্যমের দাবি ৮ কোটি ইউরো) খরচ করে মোরাতাকে নিয়ে যায় চেলসি। কিন্তু ইংল্যান্ডে গিয়ে সুবিধা করতে পারছিলেন না মোরাতা। ১৮ মাস পরেই আবার স্পেনে ফিরে আসা। মাদ্রিদেই এলেন, তবে আতলেতিকো মাদ্রিদে। আর্থিক ব্যয় সামলাতে সরাসরি তাঁকে কেনেনি আতলেতিকো। ধারে নেওয়ার জন্য ৭০ লাখ ইউরো খরচ করেছে আতলেতিকো। আর পাকাপাকিভাবে ক্লাবটিতে যোগ দিয়েছেন এ মৌসুমের শুরুতেই। এবার তাঁর জন্য আতলেতিকো চেলসিকে দিয়েছে ৫ কোটি ৬০ লাখ ইউরো (মাদ্রিদভিত্তিক সংবাদমাধ্যমের দাবি ৬ কোটি ৫০ লাখ ইউরো)।

চেলসির সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার তিন মাসের মধ্যেই ঠিকানা বদলে গেল মোরাতার। আপাতত তাঁকে ৯০ লাখ ইউরোর বিনিময়ে ধারে নিচ্ছে জুভেন্টাস। এরপর আবার ৪ কোটি ৫০ লাখ খরচ করে পাকাপাকিভাবে নেওয়ার সুযোগ তো আছেই। অর্থাৎ লিগে এক মৌসুমে কখনো ১৫ গোলের বেশি না করা এক ফরোয়ার্ডের জন্য এখন পর্যন্ত ২৩ কোটি ৩০ লাখ ইউরো খরচ হয়ে গেছে। রোনালদোর চেয়েও যা ২ কোটি ইউরো বেশি!