রোনালদোর পেনাল্টি মিসেও হলো বিশ্বকাপের রেকর্ড
বিশ্বকাপের এক টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ পেনাল্টির নতুন রেকর্ড হয়েছে। বিশ্বকাপে আগে সর্বোচ্চ ১৮টি পেনাল্টির রেকর্ড ছিল। কিন্তু রাশিয়া বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বের ম্যাচ শেষ না হতেই দেখা গেছে ২০টি পেনাল্টি
ইতিহাসে তো তিনি বহুবারই নাম লিখিয়েছেন। কাল রাতেও লেখালেন। তবে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো নিশ্চিতভাবেই এভাবে নাম লেখাতে চাননি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এক টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চসংখ্যক পেনাল্টির নতুন রেকর্ডটা হয়েছে কাল সোমবার পর্তুগাল-ইরান ম্যাচে। সেটা ম্যাচের প্রথম পেনাল্টি, যেখান থেকে রোনালদো গোল করতে পারেননি।
অর্থাৎ বিশ্বকাপের ইতিহাসে এই রেকর্ড গড়া পেনাল্টি ঘাঁটতে গেলে উঠে আসবে রোনালদোর নাম। কিন্তু সেটা অন্যভাবে, পেনাল্টিটা মিস করার জন্য। সে যা-ই হোক, শঙ্কার কথা হলো এবার নকআউট পর্ব শুরুর আগেই যেভাবে মুড়ি-মুড়কির মতো পেনাল্টি হচ্ছে, তাতে রেকর্ডটা কোথায় গিয়ে ঠেকে কে জানে! কাল পর্যন্ত আপাতত রেকর্ডটা ২০ পেনাল্টির।
রাশিয়া বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত ৩৬ ম্যাচে ২০টি পেনাল্টি দেখেছেন ফুটবলপ্রেমীরা। এর মধ্যে রোনালদোর পেনাল্টিটা ছিল ১৯তম। সেই ম্যাচেরই যোগ করা সময়ে পেনাল্টি থেকে গোল পেয়েছে ইরান। এর আগে বিশ্বকাপের এক টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ১৮টি পেনাল্টি দেখা গেছে। সেটা অবশ্য যৌথভাবে। বিশ্বকাপে প্রথম এক টুর্নামেন্টে ১৮টি পেনাল্টি দেখা গেছে ১৯৯০ টুর্নামেন্টে। এরপর ১৯৯৮ ও ২০০২ বিশ্বকাপেও ১৮টি পেনাল্টি দেখেছেন ফুটবলপ্রেমীরা। কিন্তু এবার সেই রেকর্ড ভেঙে দিল রাশিয়া বিশ্বকাপ।
গতকালের ইরানের বিপক্ষে পাওয়া পর্তুগালের পেনাল্টিটি ছিল পুরোনো রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার। কিন্তু স্পটকিক থেকে বল জালে জড়াতে ব্যর্থ হয়েছেন পর্তুগিজ যুবরাজ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। এখানেই শেষ নয়, পর্তুগালের বিপক্ষে ইরানও পেয়েছে একটি পেনাল্টি। ২০তম পেনাল্টি থেকে দলকে সমতায় ফেরাতে ভুল করেননি করিম আনসারফিল্ড। যা-ই হোক, খেলার গল্প চুকে গেছে রাতেই।
নতুন এই রেকর্ডের নেপথ্যে বড় ভূমিকা রয়েছে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) প্রযুক্তির। রাশিয়া বিশ্বকাপ দিয়েই এই প্রযুক্তিনির্ভর রেফারিংয়ের অভিষেক ঘটেছে। আর অভিষেকেই এ পর্যন্ত ৭টি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দিয়ে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে এই প্রযুক্তি। রাশিয়া বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত ২০টি পেনাল্টির মধ্যে ১৫টি গোল হয়েছে। বিশ্বকাপের এক টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ১৭টি গোল দেখা গেছে পেনাল্টি থেকে। সেটা ১৯৯৮ ফ্রান্স বিশ্বকাপে।
এখন যা নিয়ে চলছে আলোচনা, তা হলো মুড়ি-মুড়কির মতো পেনাল্টি। বিশ্বকাপ শেষ তো দূরের কথা, গ্রুপপর্বের ১২ ম্যাচ থাকতেই পেনাল্টির রেকর্ড গড়া তো যা তা বিষয় নয়। ভিএআরের সাহায্যেই নেওয়া হয়েছে ৮টি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত। সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য এই প্রথম বিশ্বকাপে ভিএআর প্রযুক্তি চালু করেছে ফিফা। আর ভিএআর দেখিয়ে দিচ্ছে তার কারিশমা।
এখন তো প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডাররা ডি বক্সের মধ্যে ট্যাকল করতে বারবার ভাবতে হয়। আবার আগে ডাইভ দিয়েও ফরোয়ার্ডরা অনেক সময় রেফারির চোখ ফাঁকি দিয়ে পেনাল্টি আদায় করে নেওয়ার চেষ্টা করত। সেটাও এখন আর সম্ভব নয়। তবু দিন শেষে ভিএআরে ফরোয়ার্ডদেরই জয় হচ্ছে।