রোনালদোর পক্ষে দর্শক, মেসির পক্ষে কমিটি
চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে এবার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও লিওনেল মেসির প্রাপ্তি কী?
রোনালদো টুর্নামেন্টে ৮ ম্যাচে ৪টি গোল করেছেন, মেসি ৭ ম্যাচে ৩টি। রোনালদো সতীর্থদের দিয়ে কোনো গোল করাতে পারেননি, মেসি করিয়েছেন ৩টি। মেসি-রোনালদো নামের সঙ্গে খুব একটা মানানসই না সংখ্যাগুলো! তারওপর তাঁদের দলও বিদায় নিয়েছে আগেভাগেই। রোনালদোর জুভেন্টাস শেষ ষোলোতেই বাদ পড়েছে ‘পুঁচকে’ লিওঁর হাতে। মেসির বার্সেলোনা আরেক রাউন্ড বাড়তি খেলেছে বটে কিন্তু না খেললেই বোধ হয় এখন খুশি থাকতেন বার্সা সমর্থকেরা। কোয়ার্টার ফাইনালে যে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ৮-২ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে বার্সা!
কিছু না পাওয়ার এই চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকেও একটি করে প্রাপ্তি হয়েছে মেসি ও রোনালদোর। দুজনই পেয়েছেন চ্যাম্পিয়নস লিগের সবচেয়ে সুন্দর গোল করার স্বীকৃতি। সুন্দর গোলের স্বীকৃতি পেলেন দুজন! তা-ই হয়েছে। পুরস্কারটা যে এসেছে দুই ভিন্ন পক্ষের কাছ থেকে। এখানেই মেসির পক্ষে আছে উয়েফার কমিটি, আর রোনালদোর পক্ষে ভক্তরা।
রোনালদো এবার চ্যাম্পিয়নস লিগে সবচেয়ে সুন্দর গোল করেছেন, সে তো দুদিন আগের খবর। চ্যাম্পিয়নস লিগের টুইটার থেকে দশটি গোলের ভিডিও দিয়ে ভক্তদের ভোট দিতে বলা হয়। প্রায় ৪ লাখ ভোটার ভোট দেন, তাতে শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে লিওঁর বিপক্ষে রোনালদোর গোলটি পায় টুর্নামেন্টসেরার পুরস্কার। জুভেন্টাসকে সে ম্যাচটা থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠাতে পারেননি, তবে দুই গোল করে লড়াইটা জমিয়ে দিয়েছিলেন রোনালদো। যে গোলটি পুরস্কার পেয়েছে, সেটি করেছিলেন বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের গোলার মতো শটে! গোলরক্ষক হাত বাড়িয়েছিলেন বটে, হাতে লেগেছিল বল কিন্তু ওরকম গোলা ঠেকানো সহজ কম্মো নয়!
মজার ব্যাপার, উয়েফার ‘টেকনিক্যাল অবজারভার্স’ কমিটি টুর্নামেন্টের সেরা যে গোলগুলো নির্বাচিত করেছে কাল, সেখানে সেরা দশেও রোনালদোর সেই গোলটি নেই! আবার নাপোলির বিপক্ষে শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে বার্সেলোনাকে জেতানোর পথে মেসি যে গোলটি করে উয়েফার কমিটির চোখে সেরা গোলের পুরস্কার পেয়েছেন, সেটি দর্শকের ভোটের জন্য মনোনয়নেও ছিল না!
প্রথম লেগে ১-১ গোলে ড্রয়ের পর দ্বিতীয় লেগে নিজেদের মাঠে নাপোলিকে ৩-১ গোলে হারায় বার্সা। দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন মেসি। চোখধাঁধানো গোলই বটে! বক্সের বাইরে ডান দিকে বল পেয়ে তিন ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে বক্সে ঢোকেন মেসি। বক্সে পড়ে গিয়েছিলেন, একটু ভাগ্যের ছোঁয়াও ছিল। বলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েও তা মুহূর্তের মধ্যে সৌভাগ্যবশত পেয়ে যান। কিন্তু বল যখন নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছেন, তিনি মাটিয়ে আধশোয়া, নাপোলির তিন ডিফেন্ডার তাঁকে ঘিরে ধরেছেন। ওই অবস্থায়ই বাঁ পায়ের বাঁকানো শটে বল জালে জড়িয়ে দেন মেসি।