মেসির মাথার ভেতরেও খেলছেন রোনালদো!
>ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো দুই ম্যাচেই তাঁর দেশের হয়ে আলো ছড়িয়েছেন। কিন্তু লিওনেল মেসিকে এখনো সেভাবে দেখা যায়নি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভালো করায় মেসি কিন্তু চাপটা টের পাচ্ছেন
কথাটা তাঁরা স্বীকার করতে চান না; বরং উল্টো অজুহাত দেখান, এই দ্বৈরথ নাকি সমর্থকদের সৃষ্টি। যা উসকে দিচ্ছে সংবাদমাধ্যম। কিন্তু ক্লাব ফুটবলে এই দুজনের প্রচ্ছন্ন একটা লড়াই তো চলেই। আজ রোনালদো দারুণ কিছু করলে পরদিন মেসিও দ্যুতি ছড়াতে চান। ছাড়িয়ে যেতে চান প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীকে। অথচ বিশ্বকাপের শুরুতে এই দ্বৈরথে ভাটা পড়েছে। লিওনেল মেসি নিজেও জানেন, তার কারণটা তিনি নিজেই!
আইসল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে পেনাল্টি মিস করেছেন মেসি। তাতে আর্জেন্টিনা ম্যাচটা জিততে পারেনি। মেসিকে ঘিরে তাই স্বাভাবিকভাবেই সমালোচনা চলছে। রোনালদো এই সমালোচনাকে আরও উসকে দিয়েছেন। পর্তুগালের দুটি ম্যাচেই তো ত্রাণকর্তা রোনালদো। প্রথমে স্পেনের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে দলের হার এড়ালেন। এরপর কাল মরক্কোর বিপক্ষে তাঁর গোলেই জিতেছে পর্তুগাল। ৪ গোল নিয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতাও সেই রোনালদোই। চাপটা তাই মেসি টের পাচ্ছেন। ভালো করার প্রচণ্ড চাপ। রোনালদোর মতোই দলের ত্রাণকর্তা হওয়ার চাপ। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী যখন গোলের মালা গেঁথে চলছেন, মেসির বুকে তখন গোলের খাতা খোলার হাপিত্যেশ! দলের জন্য ভালো ফল বয়ে নিয়ে আসার চাপ।
নোভগোরাদে আজ বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা। শেষ ষোলোয় ওঠার পথ পরিষ্কার করতে এই ম্যাচটা আর্জেন্টিনাকে জিততেই হবে। আর কে না জানে, আর্জেন্টিনাকে জিততে হলে মেসির ভালো খেলার বিকল্প নেই। একদিকে তাঁর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের চোখরাঙানি, অন্যদিকে দেশের অগণিত সমর্থকের প্রত্যাশা—এই দুই চাপ কাটিয়ে আজ মেসি কি পারবেন রাশিয়া বিশ্বকাপে গোলের খাতা খুলতে?
মেসির ওপর এই চাপ আর কেউ না বুঝলেও টের পাচ্ছেন তাঁর সতীর্থরা। পাওলো দিবালার কথাই ধরুন, মেসির জন্য হোর্হে সাম্পাওলির একাদশে তাঁর সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কিন্তু ২৪ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড পারলে যেন বেঞ্চে বসেই মেসির জন্য জান দিয়ে দেন! দিবালার ভাষ্য, ‘আমরা সবাই তার (মেসির) সঙ্গে আছি। সে আমাদের সমর্থনের ওপর অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি ভরসা রাখতে পারে। আমরা প্রতিটি মুহূর্তে তাকে সাহায্য করতে প্রস্তুত এবং অবশ্যই তার পাশেই থাকব।’
প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনার ড্রয়ের পেছনে মেসির ওপর তাঁর সতীর্থদের অতিনির্ভরতাকে দায়ী করেছেন সমালোচকেরা। ক্রোয়েশিয়া কোচ জ্লাতকো দালিচ এ সুযোগটাই নিতে চাচ্ছেন, ‘আমি মনে করি, সে বিশ্বসেরা খেলোয়াড়। তবে একজন অসাধারণ খেলোয়াড় যতটা ভালো ফল এনে দিতে পারে, একটা ভালো দল সেই কাজটা আরও ভালোভাবে করতে পারে।’
দালিচের এই কথা থেকে চাপ কমানোর একটা দাওয়াই পেতে পারেন মেসি। তাঁর সতীর্থরা যদি অতিমাত্রায় মেসিনির্ভর না হয়ে নিজেদের খেলাটা খেলতে পারেন, তাহলে পাঁচবারের বর্ষসেরা খেলোয়াড়টিও সবাইকে খেলানোর চাপ থেকে বেরিয়ে নিজের খেলাটা খেলতে পারবেন।