রিয়ালের পেনাল্টি পাওয়ায় পক্ষপাত দেখেন না সিমিওনে
খেলাধুলার এই এক শক্তি। বিশ্বের যে কোনো প্রান্তের মাঠে কোনো ঘটনা ঘটলে কিংবা বিতর্ক চাউড় হলে তা আছড়ে পড়ে গোটা বিশ্বে। রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। দুই দলের এক একেকটি ম্যাচ শেষে নানা রকম প্রতিক্রিয়া দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিতর্ক হলে তো কথাই নেই। স্রেফ আগুন লেগে যায়!
সম্প্রতি লা লিগায় রিয়ালের প্রতি রেফারির পক্ষপাত নিয়ে ওঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে আবারও বিতর্কের আগুন জ্বলছে দাউ দাউ করে। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ কোচ ডিয়েগো সিমিওনে সে আগুনে এক অর্থে পানি ঢেলে দিলেন, আবার অন্য অর্থে ঘি ছেটালেন! সিমিওনের কথা আর যাই হোক অন্তত বার্সা সমর্থকদের সহ্য হওয়ার কথা না। ওদিকে মাদ্রিদের ক্লাবটির সমর্থকেরা হয়তো আর্জেন্টাইন এ কোচকে টেনে নেবেন বুকে। রেফারি নিয়ে ওঠা বিতর্কে সিমিওনে যে কথা বলেছেন নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের পক্ষে!
আগে ঘটনাটা খুলে বলা যাক। লা লিগায় কাল রাতে বিলবাওয়ের বিপক্ষে ১–০ গোলে জিতেছে রিয়াল। পেনাল্টি থেকে গোলটি করেন সার্জিও রামোস। সাদা চোখের বিশ্লেষণ বলে, বক্সে মার্সেলোর পা মাড়িয়েছেন বিলবাওয়ের দানি গার্সিয়া, পেনাল্টির সিদ্ধান্ত ঠিকই আছে। ধারাভাষ্যকারও তখন বলছিলেন, এটা পেনাল্টি। ভিডিও সহকারি রেফারি (ভিএআর) বা 'ভার'–এর সাহায্য নিয়ে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন মাঠের রেফারি লুইস গনসালেস। রিয়ালের ওই পেনাল্টির কিছুক্ষণ পরই তাদের বক্সে বিলবাওয়ের রাউল গার্সিয়ার পা মাড়িয়ে দেন রামোসই। কিন্তু রেফারি সেটি দেখেননি, ভিএআরও নয়। এ দুটি ঘটনাকে দুই দলের সমর্থক থেকে বিশ্লেষকরা দেখছেন যে যাঁর মতো করে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন রিয়াল পেনাল্টি পেলে বিলবাও কেন পেল না?
লা লিগায় এ নিয়ে চার ম্যাচের তিনটিতে পেনাল্টি থেকে গোলে জিতেছে রিয়াল। ভিএআর–এর সিদ্ধান্তগুলোও গেছে তাদের পক্ষে। করোনা মহামারির পর টানা জয়ে লিগ শিরোপা জয়েরও সুবাস পাচ্ছে রিয়াল। এমন পরিস্থিতিতে বার্সেলোনা সভাপতি থেকে শুরু করে বিলবাও ও বার্সার খেলোয়াড়েরাও রিয়ালের পক্ষে রেফারির পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছেন। কিন্তু সিমিওনে দাঁড়ালেন এই দাবির বিপরীতে। লা লিগায় কাল সেল্টা ভিগোর মুখোমুখি হবে অ্যাটলেটিকো। আজ তারই সংবাদ সম্মেলনে উঠেছিল রিয়ালের হয়ে রেফারির পক্ষপাতের অভিযোগের প্রসঙ্গ। সিমিওনের স্পষ্ট জবাব, স্পেনে রিয়ালই সবচেয়ে বেশি পেনাল্টি পায় কারণ তারা সবচেয়ে বেশি আক্রমণ করে থাকে।
সংবাদ সম্মেলনে সিমিওনে বলেন, 'ভিএআর সব খোলাসা করে দিয়েছে। আগে যা দেখতে পেতাম না এখন সেসব দেখছি। রেফারিদেরও ভুল হতে পারে। এটা ঠিকই আছে। তাদের (রেফারি) বেশি পেনাল্টি দেওয়ার অর্থ হলো, প্রতিপক্ষের বক্সে বেশি বেশি ঢুকছেন। রিয়াল মাদ্রিদের মতো বেশি আক্রমণ করলে বক্সে বেশিক্ষণ থাকা যায়।'
অ্যাটলেটিকো কোচ এরপর আরেকটু ব্যাখ্যা করলেন, 'কী ঘটেছে তা খেলার গতিতে খেয়াল রাখা কঠিন। কিন্তু এখন আরেকজন রেফারি ঠান্ডা মাথায় সব দেখে থাকেন টিভিতে। লোকে বাসায় বসেও টিভিতে দেখছে। সিদ্ধান্তটা নেয় কিন্তু ভিএআর। এই সিদ্ধান্ত আপনাকে কষ্ট দিতে পারে, সাহায্যও করতে পারে। কিন্তু এখন কোনটা অফ সাইড কোনটা পেনাল্টি তা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব।'
লা লিগায় এ মৌসুমে ৯টি পেনাল্টি পেয়েছে রিয়াল। তাদের চেয়ে বেশি পেনাল্টি পেয়েছে শুধু অ্যাটলেটিকো ও রিয়াল মায়োর্কা (১০টি করে)। সিমিওনের কাছে এটা কোনো অস্বাভাবিক ব্যাপার না। প্রতিপক্ষের বক্সে বেশি সময় থাকলে পেনাল্টি পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে বলেই মনে করেন তিনি।