রিয়ালে না এসে বেচারা এমবাপ্পের এখনই আফসোস হচ্ছে: রিয়াল সভাপতি
কী একটা অবিশ্বাস্য ‘ইউটার্ন’ই না দেখালেন কিলিয়ান এমবাপ্পে! রিয়াল মাদ্রিদে তাঁর যাওয়া প্রায় নিশ্চিতই ছিল, এ নিয়ে গত এক বছরে মাদ্রিদের আগাম উচ্ছ্বাসেরও কমতি ছিল না। কিন্তু শেষে এসে হঠাৎ মন বদলে পিএসজিতেই থেকে গেলেন ফরাসি ফরোয়ার্ড।
রিয়াল তাতে ধাক্কা খেয়েছে ঠিকই, তবে এরই মধ্যে ভিন্ন পরিকল্পনায় কাজও শুরু করে দিয়েছে। আর এমবাপ্পে? তাঁর প্রত্যাশার কতটুকু প্রাপ্তিতে রূপ নেয়, তা ভবিষ্যৎ বলবে। তবে রিয়াল মাদ্রিদের সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ এখনই বলে দিচ্ছেন, রিয়ালকে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে এমবাপ্পে এরই মধ্যে অনুতাপে ভুগতে শুরু করেছেন!
গত মৌসুমে লিওনেল মেসির বার্সেলোনায় থাকার নিশ্চয়তার খবরের মধ্যেই শেষ মুহূর্তে বার্সেলোনা ছাড়তে হওয়া, সদ্য সমাপ্ত মৌসুমটির শুরুতে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দিতে যাওয়ার ‘নিশ্চয়তা’র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ফেরা—গত এক বছরে দলবদলে চমক দেখিয়েছেন এক যুগ মাতিয়ে রাখা দুই মহাতারকাই। দলবদলের গুঞ্জনকে কাঁচকলা দেখানোর এই দিক থেকে এমবাপ্পেও তাঁদেরই অনুসারী।
পিএসজির সঙ্গে এই জুনেই তাঁর আগের চুক্তি শেষ হওয়ার কথা ছিল, সেটি শেষে বিনা মূল্যে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেবেন এমবাপ্পে—গুঞ্জন ছাপিয়ে সেটির নিশ্চয়তাই যেন দিয়ে দিয়েছিল মাদ্রিদের সংবাদমাধ্যম। কিন্তু কাতার বিশ্বকাপের আগে পিএসজিতে এ মুহূর্তে তর্ক সাপেক্ষে সবচেয়ে আলোচিত তারকাকে আর ছাড়তে চায়নি ফরাসি ক্লাবটির কাতারি মালিকেরা।
শেষ পর্যন্ত বিশাল অঙ্কের বেতন আর বোনাস, রাজনৈতিক নেতাদের পরামর্শ আর পিএসজির ভবিষ্যতে এমবাপ্পের মতামতের গুরুত্বের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁকে চুক্তি নবায়নে রাজি করিয়েছে পিএসজি।
তাতে রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়-কোচ-সংগঠক-সমর্থকেরা খেপেছেন। এমবাপ্পের রিয়ালে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের পর কৌশল বদলে দলের অন্য প্রয়োজনের দিকে নজর দিয়েছে রিয়াল। এরই মধ্যে ১০ কোটি ইউরোতে এমবাপ্পেরই স্বদেশি মিডফিল্ডার অরেলিয়াঁ চুয়ামেনিকে কিনেছে, বিনা মূল্যে জার্মান ডিফেন্ডার আন্টোনিও রুডিগারকেও দলে নেওয়া প্রায় নিশ্চিত করেছে।
কিন্তু এত কিছুর মধ্যেও এমবাপ্পে যেন এখনো প্রাসঙ্গিক। এই যেমন, রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে সামনে পেয়ে রিয়ালের ভক্তদের দাবিতেও থাকলেন এমবাপ্পে!
তবে এত দিন যেখানে পেরেজের কাছে রিয়াল ভক্তদের আবদার থাকত এমবাপ্পেকে রিয়ালে নিয়ে যাওয়ার, এখন সেটি পুরোপুরি উল্টো। গতকাল মাদ্রিদে ক্লাবের ভক্তদের অটোগ্রাফ দিচ্ছিলেন পেরেজ, সেখানে এক ভক্তের আবদার, ‘ফ্লোরেন্তিনো, এমবাপ্পেকে রিয়ালে আর এনো না!’
গত কয়েক দিনে যেকোনো বিষয়েই নিজের মত শ্লেষাত্মকভাবে জানাতে পেরেজের এমন পরিস্থিতিতে কী বলতে হবে, সেটি দুবার ভাবার দরকার পড়েনি। ক্লাব ভক্তের আবদার শুনেই তাঁর উত্তর, ‘বেচারা এমবাপ্পেই এখন রিয়ালে না এসে আফসোসে মরছে।’
অবশ্য মাদ্রিদের যে কেউ এখন এমন দাবি করতেই পারেন। এমবাপ্পেকে ছাড়াই এ মৌসুমে লিগ আর চ্যাম্পিয়নস লিগ এসেছে, তা-ও আবার চ্যাম্পিয়নস লিগ রিয়াল মাদ্রিদ জিতেছে এমবাপ্পের শহর প্যারিসে ফাইনাল জিতে...এমবাপ্পে কী হারিয়েছেন, সেটি তো সেদিনই বুঝিয়ে দিয়েছে মাদ্রিদের কুলীনরা।