রিয়ালকে উড়িয়ে ‘ফুরিয়ে যাওয়া’র জবাব অবামেয়াংয়ের
জাভিকে এ ব্যাপারে কোনো সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন কি না, কে জানে!
বর্তমান সময়ে বিশ্বের সেরা স্ট্রাইকার হিসেবে ঘুরেফিরে আর্লিং হরলান্ড, রবার্ট লেভানডফস্কি, কিলিয়ান এমবাপ্পে, করিম বেনজেমা কিংবা দিওগো জোতার নামই আসবে। কয়েক বছর আগেও যে প্রশ্নের উত্তরে অনেকে অবামেয়াংয়ের নাম নিতেন, সে অবামেয়াংকেই সবাই যেন ভুলতে বসেছেন।
কিন্তু ভোলেননি জাভি। ভোলেননি দেখেই নিজের বার্সেলোনা প্রকল্পের মূল স্ট্রাইকারের দায়িত্ব দিয়ে আর্সেনাল থেকে এই গ্যাবনিজ স্ট্রাইকারকে দলে টেনেছেন গত জানুয়ারিতে। মাঠের বাইরের উদ্দাম জীবনযাপন আর খামখেয়ালি মানসিকতার কারণে যে অবামেয়াংয়ের ওপর অতিষ্ট হয়ে গিয়েছিলেন আর্সেনালের কোচ মিকেল আরতেতা।
আরতেতা যাঁকে দূর করে দিয়েছেন, তাঁকে বুকে টেনে নিয়েছেন জাভি। কিন্তু অবামেয়াংকে দলে টানার সিদ্ধান্তের পেছনে বার্সেলোনার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে তাঁর রেকর্ডটাও কি মাথায় এসেছিল জাভির?
হয়তো! অন্যান্য লিগে খেললেও বার্সায় আসার আগে কখনো স্প্যানিশ লিগের স্বাদ পাননি এই গ্যাবনিজ স্ট্রাইকার। তা সত্ত্বেও রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে গোল করার অভিজ্ঞতা হয়ে গিয়েছিল তাঁর। শুধু তাই নয়, লা লিগার অনেক ফরোয়ার্ড হাজারো হাপিত্যেশ করেও যেখানে রিয়ালের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে গোল করতে পারেন না, সেখানে অবামেয়াং এত দিন লা লিগার কোনো ক্লাবের হয়ে না খেলেই করে এসেছিলেন তিন গোল!
চ্যাম্পিয়নস লিগে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে ওই গোল তিনটা করেছিলেন অবামেয়াং। যে সংখ্যাটা গত রাতে বেড়ে হয়েছে পাঁচ। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের মাঠে গোল করার ব্যাপারে যে খেলোয়াড়ের এত আগ্রহ, তাঁকে জাভি দলে না নিয়ে থাকতে পারেন কী করে!
গত রাতে রিয়ালের মাঠে গিয়ে বার্সেলোনা চার গোল দিয়ে এসেছে, যার দুটি গোলই অবামেয়াংয়ের। এই নিয়ে রিয়ালের মাঠে নিজের খেলা শেষ দুই ম্যাচেই জোড়া গোল করলেন অবামেয়াং।
বার্সেলোনার হয়ে এই নিয়ে লিগে সাত ম্যাচ খেলে সাত গোল করা হয়ে গেল তাঁর। কয়েক দিন আগেও যে স্ট্রাইকার ফুরিয়ে গেছেন বলে মনে করা হতো, তাঁকে নিঃসন্দেহে এই রেকর্ড স্বস্তি দেবে। আরতেতার সঙ্গে অহমের লড়াই শেষে বার্সায় অবামেয়াং যে আসলেই সুখে আছেন, সেটা বোঝা গেছে দ্বিতীয় গোল করার পর তাঁর উদ্যাপন আর টুইটে। গোল করার পর বিখ্যাত জাপানি অ্যানিম শো ড্রাগন বল জি-এর মূল চরিত্র গোকুর মতো করে অঙ্গভঙ্গি করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, বার্সেলোনার ‘গোকু’ এখন তিনিই! ম্যাচ শেষে বিইনস্পোর্তকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই। আমার উদ্যাপনের সঙ্গে ড্রাগন বল জি-র মিল আছে। আমার একটা ইচ্ছা ছিল, এই মাঠে এসে জেতার। আমি আমার পরিবার, আমার বাবা-মা, আমার দাদা-দাদিদের নিয়ে অনেক ভেবেছি, যারা আমাদের সঙ্গে নেই এখন। তাদের জন্যই জোড়া গোল করেছি আজ।’
সঙ্গে আরতেতাকে একটা খোঁচা দিতেও ভোলেননি অবামেয়াং। টুইটে লিখেছেন, ফুরিয়ে যাওয়া খেলোয়াড়ের পক্ষ থেকে হ্যালো!