রামোস ডোপপাপী!
একের পর এক বোমা ফাটিয়েই চলেছে ফুটবল লিকস। এবার তারা দাবি করেছে, ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের পর হওয়া ডোপ পরীক্ষায় ধরা পড়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের অধিনায়ক সার্জিও রামোস!
গ্ল্যাডিয়েটর, এল কাপিতানো— সমর্থকেরা আদর করে কত নামেই না ডাকেন সার্জিও রামোসকে! আবার রামোসকে সহ্য করতে পারেন না, এমন ফুটবলপ্রেমীর সংখ্যাও কম নয়। তবে গতকাল ফুটবল লিকস যে ঘটনা ফাঁস করল, তাতে দ্বিতীয় পক্ষ বলতেই পারে, ‘বলেছিলাম না?’ ফুটবলের বিভিন্ন গোমর ফাঁস করে দিয়ে ফুটবল লিকস তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০০৭ চ্যাম্পিয়নস লিগের পর রিয়াল মাদ্রিদ তারকা রামোস নাকি ডোপ পরীক্ষায় ধরা পড়েছিলেন! ম্যাচের আগের দিন তিনি নাকি নিষিদ্ধ উপাদান থাকা ওষুধ শরীরে নিয়েছিলেন।
ফুটবল লিকসের বক্তব্য অনুযায়ী জুভেন্টাসের বিপক্ষে সেই ম্যাচের আরেকদিন নিজের হাঁটু আর কাঁধে দুটি ইনজেকশন নিয়েছিলেন রামোস, যার মধ্যে ছিল নিষিদ্ধ ড্রাগ ডেক্সামেথাসোনের উপস্থিতি। ফাইনালের পরদিন হওয়া ডোপ পরীক্ষায় রামোস ‘পজিটিভ’ প্রমাণিত হয়েছিলেন। সে রিপোর্টে মাদ্রিদের প্রধান চিকিৎসক ডেক্সামেথাসোনের ব্যাপারটা বেমালুম চেপে যান, নিষিদ্ধ ড্রাগের কথা উল্লেখ না করেই রিপোর্টটা উয়েফার কাছে পাঠিয়ে দেন। পরে উয়েফা ব্যাপারটা ধরতে পারলে রামোস তাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। সে চিকিৎসকও সব দায় নিজের কাঁধে নিয়ে বলেছিলেন, ভুলটা রামোসের নয়, তাঁর। উয়েফা সেই চিকিৎসকের স্বীকারোক্তি গ্রহণ করে রামোসকে আর শাস্তি দেয়নি, সেই চিকিৎসককে হালকা শাসিয়ে উল্টো তারাও ঘটনাটা চেপে যায়। উয়েফা রিয়াল মাদ্রিদকে পাঠানো তাদের চিঠিতে উল্লেখ করে, 'এরপর থেকে আপনাদের চিকিৎসককে অনুরোধ করব খেলোয়াড়দের ডোপিং ফরম পূরণ করার সময় তিনি যেন সর্বোচ্চ সতর্ক থাকেন আর সঠিকভাবে যেন ওষুধের নাম উল্লেখ করেন।’
ডেক্সামেথাসোন এমন এক ড্রাগ, যা মনোযোগ ও চেতনাশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে, ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে, খেলার মাঠে স্নায়ু শীতল রাখে। চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল জেতার আনন্দের মধ্যে নাকি হুঁশ ছিল না সেই চিকিৎসকের। রিপোর্ট কি লিখেছেন, না লিখেছেন, পুরো ব্যাপারটাই নাকি ছিল ‘মানবিক’ ভুল। এমন ব্যাখ্যা দিয়েই উয়েফার কাছে পার পেয়েছেন সেই অভিযুক্ত চিকিৎসক।
তবে রামোসের বিরুদ্ধে ডোপ-পাপের অভিযোগ কিন্তু আরও আছে। ফুটবল লিকস আরও দাবি করেছে, স্প্যানিশ ডোপিং নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ‘এইএসএডি’ ২০১৮ সালের এপ্রিলে রামোসের ডোপ পরীক্ষা করতে চেয়েছিল, সে ডোপ পরীক্ষার কিছুক্ষণ আগে রামোস নিষেধ থাকা সত্ত্বেও গোসল করেন। ডোপ পরীক্ষা হওয়ার আগে তাঁকে গোসল আর মূত্রত্যাগ, দুটোই করতে মানা করা হয়েছিল। ফুটবল লিকসের এই প্রতিবেদন রিয়াল মাদ্রিদ ও উয়েফা, উভয়ই ভিত্তিহীন গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
২০১৮ চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে মোহাম্মদ সালাহকে আঘাত করা, কিছুদিন আগে ভিক্টোরিয়া প্লজেনের এক খেলোয়াড়কে নাকে ঘুষি মারা, নিজেদের অনুশীলনের সময় কমবয়সী এক সতীর্থের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা, আর এখন ডোপ গ্রহণ করার এই বিস্ফোরক অভিযোগ—নিজের ভাবমূর্তিই ধরে রাখা মুশকিল হয়ে পড়ছে এই স্প্যানিশ ফুটবল তারকার।