যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করলেন অ্যাটলেটিকোর সাবেক কোচ
ফুটবল একাডেমিতে যৌন হয়রানির ঘটনায় ইংলিশ ফুটবলে ঝড় বয়ে গেছে গত দুই বছরে। একের পর এক সাবেক ফুটবলার কৈশোরে ফুটবল কোচদের দ্বারা হয়রানির ঘটনা প্রকাশ করতে শুরু করেছিলেন। এর দায়ে বিচারের মুখোমুখি হয়েছিলেন অনেক প্রতিষ্ঠিত কোচ, যাদের সবাই এত দিন শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখত। স্প্যানিশ ফুটবলও এর বাইরে থাকল না, ফার্নান্দো তোরেসকে খুঁজে বের করার কৃতিত্ব দেওয়া হতো এমন এক কোচ নিজেই স্বীকার করেছেন যৌন হয়রানি করার কথা।
২০ বছরের বেশি সময় অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের ফুটবল একাডেমির দায়িত্বে ছিলেন ম্যানুয়েল ব্রিন্যাস। তাঁর সময়ে অনেক তারকা ফুটবলারই বের হয়েছেন অ্যাটলেটিকোর একাডেমি থেকে। এর মাঝে সবচেয়ে উজ্জ্বল নামটি বিশ্বকাপজয়ী তোরেস। অ্যাটলেটিকোও ভালোবাসা নিয়ে এই মানুষটিকে সম্মান করত। কিন্তু অ্যাটলেটিকোর দায়িত্বে থাকা অবস্থায় এক কিশোর ফুটবলারকে যৌন হয়রানি করার কথা স্বীকার করার পর ক্লাব তাঁর সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষনা দিয়েছে।
৮৮ বছর বয়সী ব্রিন্যাস ব্যক্তিগত জীবনে ফ্রায়ার (ধর্মযাজক) ছিলেন। এ কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগে আরও বিস্ময় জেগেছে। স্বীকারোক্তির পর ঘটনা তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাদ্রিদের ক্লাবটি। যে একাডেমির দায়িত্বে ছিলেন, সে স্কুলের বর্তমান পরিচালক এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। ব্রিন্যাসের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মিগুয়েল এমএহ নামে একাডেমির এক ফুটবলারকে নির্যাতন করেছিলেন। তাঁর ভাষায় ‘একবার বা দুবার’ হয়তো হয়েছিল সে ঘটনা। বর্তমানে ৫৯ বছর বয়সী মিগুয়েল গত বছর তাঁর সঙ্গে আচরণের ব্যাখ্যা চেয়ে ব্রিন্যাসের মুখোমুখি হন। ব্রিন্যাস সে ঘটনাকে ‘দুর্ঘটনা’ বলে বর্ণনা করেছেন। বলেছেন, ‘আমি ঠিক বোঝাতে পারব না’, ‘তখন অনেক অদ্ভুত কিছু হতো’। বাগ্দত্তার মৃত্যু ও ফ্রায়ার হওয়ার সিদ্ধান্তেরও ভূমিকা দেখেন ব্রিন্যাস।
ব্রিন্যাসের স্বীকারোক্তিতেও ঘাটতি রয়ে গেছে। মাত্র ‘এক’ বা ‘দুবার’ ঘটনা ঘটার কথা বললেও নিপীড়িত মিগুয়েলের দাবি, ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত ব্রিন্যাস তাঁকে নিপীড়ন করেছেন। আরও চারজন ব্রিন্যাসের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ করেছেন। এদের মধ্যে একজনের ভাষায়, এটা ‘ওপেন সিক্রেট’ ছিল!
শেষের কথাটাই ভয় দেখাচ্ছে অ্যাটলেটিকোকে। এমন একটি বিষয় যদি সবাই জেনেই থাকে, তবে ক্লাবের একাডেমি ঠিকভাবে না সামলানোর দায়টা পুরো অ্যাটলেটিকোর ঘাড়েই পড়বে।