মায়ের আদর না পাওয়া সেই খেলোয়াড়ই উদ্ধার করলেন মিলানকে

দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে জিতেছে মিলানছবি : রয়টার্স

কী দুর্দান্তভাবেই না গত রাতে ঘুরে দাঁড়াল এসি মিলান।


২৪ মিনিটে দুই গোলে পিছিয়ে তখন কাঁপছে মিলান। ঘরের মাঠে গোলের রাস্তাই খুঁজে পাচ্ছিল না রোজোনেরিরা। দ্বিতীয়ার্ধে কোন এক জাদুস্পর্শে যেন বদলে গেল দলটা। গুনে গুনে তিন গোল দিল, একটা করে গোল করলেন ফরাসি স্ট্রাইকার অলিভিয়ের জিরু ও আইভরিয়ান মিডফিল্ডার ফ্র্যাঙ্ক কেসি। বাকি গোলটা ভেরোনার জার্মান সেন্টারব্যাক কোরে গুন্টারের আত্মঘাতী।

সামু কাস্তিয়েহো
ছবি : রয়টার্স

কিন্তু এ দুজনের কেউই নন, মিলানের জয়ে সব আলো কেড়ে নিয়েছেন এমন একজন, যাকে মিলানের সমর্থকেরাই সহ্য করতে পারতেন না কিছুদিন আগে!


২০১৮ সালে স্প্যানিশ ক্লাব ভিয়ারিয়াল থেকে নাম লিখিয়েছিলেন স্প্যানিশ উইঙ্গার সামু কাস্তিয়েহো। এই তিন বছরে মিলানের মূল একাদশে জায়গা পাকা করার জন্য তেমন কিছু করেছেন, এটা পাঁড় কাস্তিয়েহো সমর্থকও স্বীকার করবেন না। এতটাই বাজে খেলতেন, কিছুদিন আগেও দলবদলের বাজারে এই উইঙ্গারকে বিক্রি করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিল মিলান। তবে আগ্রহী কোনো ক্লাব খুঁজে পায়নি। ফলাফল?

দুই গোলেই আছে কাস্তিয়েহোর অবদান
ছবি : রয়টার্স

মিলানেই থেকে যেতে হয় কাস্তিয়েহোকে। খারাপ খেলার জন্য সমর্থকদের গালিও খেয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হয়েছেন হেনস্তা। সবকিছু মিলিয়ে সময়টা একদমই পক্ষে ছিল না এই উইঙ্গারের জন্য।


সেই উইঙ্গারই কাল থেকে মিলানের নয়নের মণি। মিলানের দুর্দান্ত ঘুরে দাঁড়ানোর নেপথ্যের নায়ক যে তিনিই!

দ্বিতীয় গোলটা পেনাল্টি থেকে এলেও পেনাল্টি আদায় করে দিয়েছিলেন এই কাস্তিয়েহোই। ভেরোনার রাইট উইংব্যাক মাত্তেও ফারাওনি কাস্তিয়েহোকে ডি-বক্সের মধ্যে বৈধভাবে আটকানোর উপায় খুঁজে পাননি। ফলে পেনাল্টি পায় মিলান। সেখান থেকেই গোল করে দলকে সমতায় ফেরান কেসি, যার সহায়তায় প্রথম গোল করে মিলানের ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন জিরু।

তৃতীয় গোলেও কাস্তিয়েহো ঝলক। ডিবক্সের ডান প্রান্ত দিয়ে বিপজ্জনকভাবে ঢুকে ক্রস দিয়েছিলেন। সে ক্রস বিপদমুক্ত করতে গিয়ে উল্টো নিজের জালেই ঢুকিয়ে দেন ভেরোনার জার্মান ডিফেন্ডার কোরায় গুন্টার। দলকে জিতিয়ে নিজের কান্না আটকাতে পারেননি কাস্তিয়েহো। সব আবেগ যেন ভেঙে যাচ্ছিল তাঁর। ম্যাচ শেষে মনের আগল যেন খুলে দিয়েছিলেন তিনি, ‘আমার চোখের পানি আমার হয়ে সব কিছু বলে দেয় যে আমি কী সময় কাটিয়েছি, আর কী সময় কাটাচ্ছি। আমি এমন একজন, যে পিচে সামর্থ্যের সবকিছু ঢেলে আসি। আমার পরিবার আর বন্ধুদের ধন্যবাদ। কাল আমার নিজের মা-ও আমাকে চাইছিলেন না, আজ আমি ভক্তদের সঙ্গে আনন্দ করতে পারছি।’


ইতালিয়ান লিগের আরেক ম্যাচে হেরে বসেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইন্টার মিলান। লাৎসিওর কাছে হেরে বসেছে ৩-১ গোলে। ইভান পেরিসিচের গোলে প্রথমে এগিয়ে গেলেও পরে ইতালিয়ান স্ট্রাইকার চিরো ইম্মোবিলে, ব্রাজিলের উইঙ্গার ফেলিপে অ্যান্ডারসন ও সার্বিয়ান মিডফিল্ডার সের্গেই মিলিঙ্কোভিচ-সাভিচের গোলে ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়ে লাৎসিও।