লিভারপুল জানে, প্রিমিয়ার লিগের শিরোপার লড়াইটা এখন আর ওদের নিয়ন্ত্রনে নেই। ইয়ুর্গেন ক্লপ জানেন, এখন আর তাঁর দলকে শুধু জিতলেই হবে না, তাকিয়ে থাকতে হবে ম্যানচেস্টার সিটির দিকে। সিটি পয়েন্ট হারালে তবেই আবার লড়াইয়ে ফিরবে লিভারপুল।
কিন্তু প্রথম কাজ হচ্ছে নিজেরা জেতা। অ্যাস্টন ভিলার মাঠে আজ সেই কাজটা ঠিকঠাকই করেছে ক্লপের দল। পিছিয়ে পড়েও ম্যাচ জিতেছে ২-১ গোলে। তবে এই জয়ের পরেও পয়েন্ট তালিকার দুই নম্বরেই রয়ে গেছে লিভারপুল। দুই দলেরই পয়েন্ট ৮৬ হলেও লিভারপুলের (৩৬) চেয়ে সিটি (৩৫) ম্যাচ খেলেছে একটা কম। গোল ব্যবধানেও সিটি (+৬৮) এগিয়ে লিভারপুলের (+৬৫) চেয়ে। বুধবার রাতে উলভারহ্যাম্পটনের কাছে সিটির হার কামনা ছাড়া আপাতত আর কিছু করার নেই লিভারপুলের।
শনিবার ওয়েম্বলিতে এফএ কাপের ফাইনাল চেলসির বিপক্ষে। সেজন্য কিছুটা সতেজ রাখতেই কি না মোহাম্মদ সালাহকে আজ বেঞ্চে রাখলেন লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ। শুধু সালাহই নয়, বেঞ্চে ছিলেন ইব্রাহিমা কোনাতে, জর্ডান হেন্ডারসন, থিয়াগোও। ওদিকে অ্যান্ডি রবার্টসন ছিলেন না চোটের কারণে। সব মিলিয়ে অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে লিভারপুলের একাদশটা বেশ নতুনই লেগেছে। সবার সামনে দিয়েগো জোতাকে মাঝে রেখে দুইপাশে সাদিও মানে ও লুইস দিয়াজ। এই তিনজনের পেছনে মাঝমাঠে ফাবিনিও-কেইটা-জোনস। ফাবিনিওকে অবশ্য চোট পেয়ে আধঘন্টা পরেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে, বদলি নেমেছেন হেন্ডারসন।
ভিলা পার্কের গ্যালারিতে উল্লাস ছড়িয়ে আর অতিথি লিভারপুল সমর্থকদের স্তব্ধ করে দিয়ে ম্যাচের তিন মিনিটেই অ্যাস্টন ভিলাকে এগিয়ে দেন ডগলাস লুইজ। বাঁ পাশ থেকে আসা লুকাস দিনিয়ের ক্রসে হেড করেছিলেন বক্সের ভেতর থাকা লুইজ, সেটা প্রথম চেষ্টায় ফিরিয়েও দিয়েছিলেন লিভারপুল গোলরক্ষক আলিসন। কিন্তু বলটা নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি। দৌড়ে গিয়ে আবার শট নিলেন লুইজ, এবার জালে।
লিভারপুল গোলটা শোধ করে দেয় ঠিক তিন মিনিট পরেই। ফ্রি-কিক থেকে আসা বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে নিজেদের বক্সের মধ্যে গোলমাল বাঁধিয়ে ফেলেন অ্যাস্টন ভিলার টাইরন মিংস ও মারভেলাস নাকামবা। জটলার মধ্যে বল পেয়ে লিভারপুলের দিয়েগো জোতা বাড়িয়ে দেন সতীর্থ ভার্জিল ফন ডাইকের দিকে। তাঁর শটটা অ্যাস্টন ভিলা গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ ফেরালেও জোয়েল মাতিপের ফিরতি শট আর ঠেকাতে পারেননি।
তবে এই ম্যাচে আসলে লিভারপুল ড্র করার জন্য নামেনি। এই মৌসুমে লিগের পয়েন্ট তালিকায় দশের বাইরে থাকা কোনো দলের বিপক্ষে এর আগে কোনো ম্যাচেই পয়েন্ট হারায়নি লিভারপুল। অ্যাস্টন ভিলা ম্যাচটা শুরু করেছিল ১১ নম্বরে থেকে। তারাও পারেনি লিভারপুলের কাছ থেকে পয়েন্ট কেড়ে নিতে। অল রেডদের জয়সূচক গোলটা এলো ম্যাচের ৬৫ মিনিটে। বাঁ পাশ থেকে লুইস দিয়াজের ক্রসে সাদিও মানের দুর্দান্ত এক হেড থেকে।
এই মৌসুমে লিগে এটি মানের ১৫ নম্বর গোল। সালাহ ও জোতার পর লিভারপুলের তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে এই মৌসুমে ১৫ গোল করলেন সেনেগালের ফরোয়ার্ড। এক মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে একই দলের তিনজনের ১৫ বা এর বেশি গোল করার এটা দ্বিতীয় কীর্তি। এর আগে ২০১৩-১৪ মৌসুমে শিরোপা জেতা সিটির হয়ে এই কীর্তি গড়েছিলেন সের্হিও আগুয়েরো, ইয়া ইয়া তোরে ও এডিন জেকো।