বার্সেলোনার দায়িত্ব নিতে আগ্রহী বেলজিয়াম কোচ
রোনাল্ড কোমান নিজে এ কাজ করেছিলেন। নেদারল্যান্ডসকে নিয়ে ইউরোতে যাওয়ার কথা ছিল, এ অবস্থায় বার্সেলোনার ডাক পেয়ে আর দেরি করেননি। নিজের সাবেক ক্লাবের কোচ হওয়ার মোহে জাতীয় দলের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। সে সিদ্ধান্ত বার্সেলোনা, নেদারল্যান্ডস কিংবা কোমান—কারও জন্যই এখন পর্যন্ত ভালো কিছু নিয়ে আসেনি।
এবারও কি এমন কিছু হতে যাচ্ছে? সামনেই আরেকটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট—আর এক বছর পরই কাতার বিশ্বকাপ। সে বিশ্বকাপে বেলজিয়াম জাতীয় দলে এডেন হ্যাজার্ড ও কেভিন ডি ব্রুইনাদের দায়িত্বে থাকার কথা রবের্তো মার্তিনেজের। কিন্তু এদিকে কোমানকে সরিয়ে বার্সেলোনা নতুন কোচ আনবে বলে গুঞ্জন। আর সে ক্ষেত্রে নাম শোনা যাচ্ছে মার্তিনেজের। এবার কি বিশ্বকাপের কথা ভুলে বার্সেলোনায় ছুটবেন এই কোচ? ইঙ্গিত কিন্তু তেমন কিছুর!
বার্সেলোনার প্রতি মার্তিনেজের মোহ অনেক দিনের। কোমানের মতো এই ক্লাবে খেলার কিংবা চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার মতো স্মরণীয় মুহূর্ত নেই তাঁর। কিন্তু কাতালুনিয়ায় জন্ম বলে কাতালান ক্লাবটির প্রতি মার্তিনেজের দুর্বলতা সবার জানা। এখন যখন কোমানের ছাঁটাইয়ের কথাবার্তা চলছে, তখন আলোচনায় আর্জেন্টিনার রিভারপ্লেটের কোচ মার্সেলো গায়ার্দো, বার্সেলোনার কিংবদন্তি মিডফিল্ডার জাভি হার্নান্দেজ, গত মৌসুমে জুভেন্টাস থেকে বরখাস্ত আন্দ্রেয়া পিরলোর পাশাপাশি বেলজিয়াম কোচেরও নাম শোনা যাচ্ছে। এরই মধ্যে গায়ার্দো জানিয়ে দিয়েছেন, বার্সার কোচ হওয়ার ইচ্ছা তাঁর নেই।
আর এদিকে মার্তিনেজ বলছেন, কোচ হওয়ার ব্যাপারে বার্সেলোনা এখনো তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তবে যোগাযোগ করলে যে একেবারে উড়িয়ে দেবেন, এমনটা নয়। আপাতত বেলজিয়ামকে নিয়ে সব চিন্তা থাকলেও বার্সেলোনার সুযোগ এলে যে ভেবে দেখবেন, সেটাও বলেছেন মার্তিনেজ।
টিভি নেটওয়ার্ক এইচএলএনকে মার্তিনেজ বলেছেন, ‘আমার খুব ভালো লাগবে যদি ইউরোপ থেকে কাতার বিশ্বকাপে সবার আগে বেলজিয়াম জায়গা করে নেয়। নেশনস লিগের ফাইনালের পর সেটাই মূল চ্যালেঞ্জ। তবে ফুটবলে আপনি কখনোই বলতে পারেন না আগামীকাল কী উপহার দেবে। আমার চুক্তির শেষ দিন পর্যন্ত আমার ঘুম ভাঙবে বেলজিয়ামের কোচ হিসেবে। কিন্তু এটাও বুঝতে পারছি, চলতি পথে আরও অনেক সম্ভাবনার সৃষ্টি হতে পারে।’
এমন ভাসা–ভাসা উত্তরে তো সবাইকে সন্তুষ্ট করা যায় না। তাই তাঁকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, বার্সেলোনা যোগাযোগ করেছে কি না। নেতিবাচক উত্তরই শোনা গেছে, ‘একদমই কিছু হয়নি। কোনো যোগাযোগ হয়নি।’ বেলজিয়ামের সঙ্গে ২০২২ সাল পর্যন্ত চুক্তি মার্তিনেজের। পাঁচ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ফুটবলের সঙ্গে জড়িত তিনি। ক্লাব ফুটবলের ব্যস্ততার স্বাদ সর্বশেষ মার্তিনেজ পেয়েছেন ২০১৬ সালে। রোমেলু লুকাকুর কোচ হিসেবে এভারটনে ভালোই করেছিলেন সে সময়।
মার্তিনেজের কোচ হওয়ার গুঞ্জন বাড়ার পেছনে ভূমিকা রাখছে একটি নাম, ইয়োর্দি ক্রুইফ। নেদারল্যান্ডস ও বার্সেলোনা কিংবদন্তির ইয়োহান ক্রুইফের ছেলে এখন বার্সেলোনার সহকারী ক্রীড়া পরিচালক। খেলোয়াড় ও কোচ নিয়োগের দিকটা তাঁরই অধীনে। ক্রুইফের সঙ্গে বেশ ভালো সম্পর্ক মার্তিনেজের। কিন্তু বেলজিয়ামের কোচ এমন সম্পর্কের ফায়দা তুলতে চান না, ‘ইয়োর্দির সঙ্গে আমার সম্পর্কের ভিত্তি হলো আমরা পেশাদার ও ব্যক্তিগত জীবনকে আলাদা রাখি। বার্সেলোনায় আমার কী সম্ভাবনা, এ নিয়ে আমি কখনো ওর কাছে জিজ্ঞাসা করিনি। আমার মনে হয় না নতুন কোচ নিয়োগের দায়িত্ব সে পাবে।’