বার্সেলোনার জন্য এ হার বড় লজ্জার
বার্সেলোনা এখন কী করবে! এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে নেই, ইউরোপা লিগ থেকেও কাল বিদায় হয়ে গেল বার্সার। আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের কাছে নিজেদের মাঠে ৩-২ গোলে হেরে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ গোল হেরে বিদায়। কাল বার্সার জন্য ছিল ভুলে যাওয়ার মতো এক রাত। এখন মৌসুমে শুধু লিগে যতটা সম্ভব, ওপরের দিকে থেকে শেষ করাই যা বার্সার প্রাপ্তি হতে পারে।
সে যা হবে দেখা যাবে। কিন্তু একে তো ইউরোপা লিগে খেলতে হওয়াই বার্সার মতো ক্লাবের জন্য বড় অস্বস্তির, সেখানেও কোয়ার্টার ফাইনালে এভাবে ছিটকে পড়ার এ লজ্জা বার্সা কী দিয়ে ঢাকবে!
জার্মান দলটি খেলেছে দুর্দান্ত। প্রথম লেগ ১-১ গোলে ড্র হওয়ার পর নিজেদের মাঠে বার্সেলোনা সমর্থকেরা হয়তো ইতিবাচক কিছুরই অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু তাঁদের স্তব্ধ করে দিয়ে ফ্রাঙ্কফুর্ট যে খেলাটা খেলেছে, তার জন্য আলাদা করেই তাদের প্রশংসা প্রাপ্য। ৩-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে বার্সা একটু জেগে উঠে দুই গোল করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। নিজেদের মাঠে হেরে বিদায় নিতে হলো বার্সাকে। অথচ, গত ১৫ ম্যাচে অপরাজিত ছিল বার্সেলোনা।
লিওনেল মেসিকে ছাড়া এবারই প্রথম মৌসুম বার্সেলোনার, তাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বেই বিদায়ের পর ইউরোপা লিগে নেমে যেতে হলো দলটিকে। সেখানেও শেষ আটেই বিদায় তো হলোই, তাতে ঘরের মাঠে জিততে না পারার একটা অস্বস্তিও যোগ হলো। শেষ ষোলোর প্লে-অফে নাপোলি আর শেষ ষোলোতে গালাতাসারাইয়ের সঙ্গে ঘরের মাঠে ড্র করলেও দ্বিতীয় লেগে প্রতিপক্ষের মাঠে জিতে পরের রাউন্ডে উঠেছিল বার্সা। কোয়ার্টার ফাইনালে লেখা হলো উল্টো গল্প। প্রতিপক্ষের মাঠে ড্রয়ের পর নিজেদের মাঠে হেরেই গেল!
বার্সেলোনা ডিফেন্ডার রোনাল্ড আরাউহোর কাছে পুরো ব্যাপারটিই লজ্জার। তাঁর মতে, ভুলের মাশুল দিয়েছে বার্সেলোনা, ‘এ ম্যাচটা হারা বিরাট লজ্জার ব্যাপার। আমরা কিন্তু খুব খারাপ খেলিনি। কিন্তু ম্যাচে তিনটা ভুলের শাস্তি আমরা পেয়েছিল তিনটা বাজে গোল খেয়ে।’
নিজেদের মাঠে কাল অবশ্য ম্যাচটাকে ‘অ্যাওয়ে ম্যাচ’ বলেই মনে হতে পারে বার্সেলোনার। ফ্রাঙ্কফুর্টের জন্য হাজার পাঁচেক আসন বরাদ্দ থাকলেও ফ্রাঙ্কফুর্টের প্রায় ৩০ হাজার দর্শক মাঠে ঢুকেছেন বলে গুঞ্জন। আরাউহোও ন্যু ক্যাম্পে ফ্রাঙ্কফুর্টের এত সমর্থক দেখে অবাক হয়েছেন। তিনিও মনে করেন এটাও ছিল একধরনের বিপর্যয়, ‘আমি ন্যু ক্যাম্পে এত ফ্রাঙ্কফুর্ট সমর্থক দেখে অবাক হয়েছি। ক্লাব কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই ব্যাপারটি তদন্ত করে দেখবে।’
ন্যু ক্যাম্পে খেলা শুরুর চতুর্থ মিনিটে ফিলিপ কস্তিচের পেনাল্টিতে এগিয়ে যাওয়া ফ্রাঙ্কফুর্ট ব্যবধান দ্বিগুণ করে ৩৬ মিনিটে। কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড রাফায়েল বোরে দুর্দান্ত এক গোল করে ফ্রাঙ্কফুর্টকে ২-০ গোলে এগিয়ে নেন। এই গোলেও সহায়তা ছিল কস্তিচের। তাঁর কাছ থেকে বল পেয়েই বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শটে গোল করেন বোরে। দ্বিতীয়ার্ধে ৩-০ গোলে এগিয়ে গিয়ে ম্যাচটা পুরোপুরি বার্সেলোনার নাগালের বাইরে নিয়ে যায় ফ্রাঙ্কফুর্ট। এই গোলটাও করেন কস্তিচ।
এরপর ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেছিল বার্সেলোনা। ৮৪ মিনিটে বুসকেতসের গোল বাতিল হয়ে যায় অফ সাইডের কারণে। সেই বুসকেতসই যোগ করা সময়ে ব্যবধান কমান। খেলার একেবারে অন্তিম মুহূর্তে পেনাল্টি থেকে মেম্ফিস ডিপাই গোল করলেও দেরিটা একটু বেশিই হয়ে গিয়েছিল বার্সেলোনার জন্য।