বার্সার অনুরোধে ১২ কোটি ২০ লাখ ইউরোর মায়া ছাড়লেন মেসিরা
অবশেষে খেলোয়াড়-ক্লাব দ্বন্দ্ব মিটেছে বার্সেলোনায়। বেতন কমাতে রাজি হয়েছেন লিওনেল মেসিরা। আর তাতে হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছেন বার্সার অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ডের কর্তারা।
আর স্বস্তি পাবেন নাই–বা কেন? খেলোয়াড়েরা বেতন না কমালে উল্টো ক্লাবটাই যে দেউলিয়া হতে বসছিল!
প্রায় ১২ কোটি ২০ লাখ ইউরো বেতন কমাচ্ছেন বার্সা তারকারা। আগামী তিন বছর ধরে এই বেতন কাটা হবে। অথচ কিছুদিন আগেই বেতন কমাতে ঢের আপত্তি ছিল মেসিদের।
বোর্ডের ফাঁকা বুলি শুনতে শুনতে বিরক্ত মেসিরা বেতন কমানোর সিদ্ধান্তের আগে সবদিক বিবেচনা করে নিতে চেয়েছেন।
করোনার কারণে বেতন খাতে কোন ক্লাব কত বাজেট রাখতে পারবে, সেটা জানিয়ে দিয়েছিল লা লিগা। জানা যায়, ২০২০-২১ মৌসুমে বেতনের জন্য বার্সেলোনা সর্বোচ্চ ৩৮ কোটি ২৭ লাখ ইউরো খরচ করতে পারবে।
অর্থাৎ আগের মৌসুমের প্রায় ৪৩ শতাংশ কম। কিছুদিন আগেই বার্সেলোনা তাদের মূল দলের খেলোয়াড়দের ৩০ শতাংশ বেতন কমানোর প্রস্তাব পাঠিয়েছে। সে প্রস্তাবে চারজন বাদে বাকিরা ইতিবাচক সাড়া দেননি।
শেষমেশ বার্তোমেউ বোর্ড ইস্তফা দেওয়ার পর আশার আলো দেখা যায়।
মেসিরা এবার অন্তর্বর্তীকালীন কর্তাদের কথা শুনে প্রিয় ক্লাবকে দেউলিয়া হওয়ার হাত থেকে বাঁচাবেন, সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়। তা-ও কি খেলোয়াড়দের রাজি করানো কম ঝক্কির কথা?
দিনের পর দিন ধরে মেসিদের সঙ্গে ম্যারাথন মিটিং চালিয়ে গেছে বোর্ড। অবশেষে সুরাহা হয়েছে ব্যাপারটার। তবে আগামী তিন বছর মেসিদের বেতন বাবদ পাঁচ কোটি ইউরো দিতেই হবে।
বিনিময়ে প্রায় ১২ কোটি ২০ লাখ ইউরোর মায়া ছাড়ছেন বার্সা তারকারা। এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতিও দিয়েছে বার্সেলোনা।
নিজেদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে বার্সেলোনা জানিয়েছে, ‘আজ বার্সা বোর্ড ও খেলোয়াড়েরা বেতন কমানোসংক্রান্ত বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে।
এই মৌসুম থেকে মোট তিন মৌসুমে ১২২ মিলিয়ন (১২ কোটি ২০ লাখ) ইউরো বেতন কমানোর ব্যাপারে রাজি হয়েছেন খেলোয়াড়েরা, এই সময়ে বেতনাদির সম্ভাব্য খরচ ধরা হয়েছে ৫ কোটি ইউরো।
এখন শুধু আনুষ্ঠানিক অনুমোদন বাকি। আনুষ্ঠানিক অনুমোদন হয়ে গেলেই এই সিদ্ধান্তটা ক্লাবের ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক হয়ে থাকবে।
উভয় পক্ষই বুঝেছে, এই ঐকমত্যে পৌঁছাতে কত পরিশ্রম হয়েছে সবার, তাই উভয় পক্ষের উচিত একে অন্যকে অভিনন্দন জানানো।’
এবার লিগের পয়েন্ট তালিকায় বার্সা আছে ১৩ নম্বরে। লিগের প্রথম ৮ ম্যাচে পেয়েছে মাত্র ১১ পয়েন্ট! মাঠের বাইরের এসব সমস্যার প্রভাব এত দিন মাঠের ভেতরের পারফরম্যান্সে ব্যাঘাত ঘটালেও এখন মেসিদের আর সেই সমস্যা নেই। দেখা যাক, মাঠের ভেতরের বার্সেলোনার অবস্থার উন্নতি হয় কি না এখন!