বছরে ৩৮৩৯ কোটি টাকা আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ
ইউরোপে অনেক ক্লাবই নতুন করে স্টেডিয়াম পুনর্গঠন করে। এর পেছনের উদ্দেশ্য, স্টেডিয়াম আধুনিকীকরণ, সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো এবং অবশ্যই দর্শক ধারণক্ষমতা বাড়িয়ে নেওয়া। বার্সেলোনা যেমন ‘এস্পাই বার্সা’ প্রকল্পের মাধ্যমে ক্যাম্প ন্যুর ধারণক্ষমতা এক লাখ ছাড়িয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। স্টেডিয়াম পুনর্গঠন করা সহজ ব্যাপার নয়। নতুন স্টেডিয়াম করার ধাক্কা আর্থিকভাবে সামলাতে বহুদিন লেগেছে আর্সেনালের। টটেনহাম এখনো সামলে উঠতে পারেনি।
বার্সেলোনাকে এস্পাই বার্সা প্রকল্পের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নিতে হবে। রিয়াল মাদ্রিদকে ঋণ নিয়েই স্টেডিয়াম পুনর্গঠনে হাত দিতে হয়েছে। তাই যখন খবর এল, স্টেডিয়াম পুনর্গঠন করে আসন বাড়াচ্ছে না রিয়াল মাদ্রিদ, উল্টো একটি আসন কমছে বার্নাব্যুতে, তখন সে খবরে বিস্ময় জাগাটাই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ একজন ঝানু ব্যবসায়ীর মতোই ব্যবস্থা নিয়েছেন। আসন বাড়িয়ে নয়, বার্নাব্যুকে বিনোদনের কেন্দ্র বানিয়েই সব ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার পাশাপাশি আয়ের ব্যবস্থা করে নিচ্ছেন।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম, বিশেষ করে মাদ্রিদভিত্তিক পত্রিকাগুলো দাবি করেছে, বছরে ৪০ কোটি ইউরোর (৩৮৩৯ কোটি টাকা) আয়ের ব্যবস্থা করেছে রিয়াল!
স্প্যানিশ অনলাইন পত্রিকা ভোজপোপুলি দাবি করেছে, ২৫ বছরের জন্য বার্নাব্যুর ২০ শতাংশ ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছে লিজেন্ডস গ্রুপ। খেলাধুলার ভেন্যুকে আর্থিক কাজে ব্যবধার করার বিশেষজ্ঞ এই উত্তর আমেরিকান প্রতিষ্ঠান বাস্কেটবল দল সান আন্তোনিও স্পার্সের ২০ শতাংশের মালিক। এ চুক্তির ফলে সান আন্তোনিওর ম্যাচ বার্নাব্যুতে আয়োজনের পথও সুগম হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী বার্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদের ম্যাচ ছাড়া অন্য সময়ে বাস্কেটবল, বক্সিং বা গানের কনসার্ট আয়োজন করার অধিকার পাবে লিজেন্ডস। এ থেকে প্রাপ্ত আয়ের ২০ শতাংশ তারা নিয়ে নেবে।
ভোজপোপুলি জানিয়েছে, বিশ্বস্ত এক সূত্র তাদের এ তথ্য দিলেও ক্লাব বা লিজেন্ডস কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাপারে মন্তব্য করেনি। সূত্রমতে, আমেরিকান প্রতিষ্ঠান বার্নাবুতে বছরে ৪০ থেকে ৪৪ কোটি ইউরো আয়ের নিশ্চয়তা দিয়েছে। করোনা মহামারির আগে বার্নাব্যু থেকে রিয়ালের বার্ষিক আয় ছিল ১৫ কোটি ইউরোর কাছাকাছি।
স্টেডিয়াম পুনর্গঠনের জন্য রিয়াল যে পরিমাণ ঋণ নিয়েছে, তা সুদসহ প্রায় ১০০ কোটি ইউরো। ২৫ থেকে ৩০ বছর মেয়াদে এ অর্থ পরিশোধ করতে হবে রিয়ালকে। ২০২৪ বা ২০২৫ সালে স্টেডিয়ামের সব কাজ শেষ হলে ঋণ পরিশোধ করা শুরু করবে স্প্যানিশ ক্লাব।
ভোজপোপুলির খবর সত্যি হয়ে থাকলে ঋণের অর্থ দেওয়ার জন্য নতুন করে আয়ের উৎস খুঁজতে হবে না রিয়ালকে। লিজেন্ডসের সঙ্গে করা আর্থিক চুক্তিই সে দায়িত্ব বুঝে নেবে অনায়াসে।
ফোর্বস ম্যাগাজিন অনুযায়ী রিয়াল মাদ্রিদের বর্তমান ব্র্যান্ড মূল্য ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি ইউরো। ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ নিজের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে, অর্থাৎ ২০২৫ সালের মধ্যে সেটা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা নিয়েছেন। এরই একটি ধাপ লিজেন্ডসের সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদি এ চুক্তি।