ফ্রি–কিক তো এমনই হওয়া উচিত!
শটটি নিতে গিয়েও নিলেন না পুলাতুভ শুকুর আলী। থেমে দাঁড়িয়ে রেফারির সঙ্গে কী নিয়ে যেন কথা বলছিলেন। সেদিকে তাকিয়ে ছিলেন প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়েরা। পেছন থেকে দৌড়ে এসে বুলেট গতির শটে বল জালে জড়িয়ে দিলেন চার্লস দিদিয়ের। গোল। ফ্রি–কিক তো এমনই হওয়া উচিত!
দিদিয়েরের এই একমাত্র গোলেই আজ আরামবাগ ক্রীড়া সংঘকে হারিয়েছে চট্টগ্রাম আবাহনী। আগের ম্যাচে হারের পর এই জয় আবাহনী শিবিরে আপাতত স্বস্তি এনে দিয়েছে। হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন কোচ মারুফুল হক। তবে রেফারির একটি সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করায় হলুদ কার্ডও দেখতে হয়েছে মারুফুলকে।
লিগে আরামবাগের অর্জন বলতে সবেধন নীলমণি উত্তর বারিধারার বিপক্ষে ড্র করে ১ পয়েন্ট। কিন্তু অনলাইন বেটিংয়ের অভিযোগ ওঠার পর লিগের দ্বিতীয় পর্বে শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফে অনেক বদল এনেছে তারা। লিগের দ্বিতীয় পর্বে দলটির খেলায় ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তাও পাওয়া যাচ্ছে। প্রথম ম্যাচে মোহামেডান স্পোর্টিংয়ের বিপক্ষে ২–১ গোলে লড়াকু হারের পর আজ চট্টগ্রাম আবাহনীকে প্রায় আটকে দিয়েছিল তারা। ৭৮ মিনিট পর্যন্ত গোলশূন্য থাকায় মনে হচ্ছিল ম্যাচটি ড্রও হতে পারে।
ম্যাচের প্রথমার্ধটা ছিল একেবারেই নিষ্প্রাণ। পাঁচ ডিফেন্ডার খেলিয়ে রক্ষণভাগ জমাট রাখাই ছিল আরামবাগ কোচ জাহিদুর রহমানের লক্ষ্য। সে বাধা ভাঙার মতো পরিকল্পনা দেখা যায়নি চট্টগ্রামের খেলায়। শেষ পর্যন্ত ফ্রি–কিক থেকে দুর্দান্ত গোল করে ম্যাচের মীমাংসা করে দিয়েছেন অধিনায়ক দিদিয়ের। প্রায় ২৫ গজ দূরে ফ্রি–কিক পেয়েছিল আবাহনী। দুর্দান্ত কৌশলে দারুণ সমন্বয়ে ফ্রি–কিক থেকে গোলটি করেছেন আইভরি কোস্টের মিডফিল্ডার।
অনুশীলনের ফলটাই পেয়েছেন বলে জানালেন দিদিয়ের। ম্যাচ শেষে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘অনুশীলনে আমরা অনেকবার এভাবে ফ্রি–কিক নিয়ে বিষয়টি রপ্ত করেছি। আজ ফ্রি–কিক পাওয়ার পর কোচ মাঠের বাইরে থেকে এভাবে নেওয়ার জন্য সংকেত দিয়েছিলেন। নিয়ে সফলও হয়েছি।’
পরে অবশ্য পেনাল্টি মিস করেছেন দিদিয়ের। ৮২ মিনিটে পেনাল্টি পায় আবাহনী। বক্সের মধ্যে নাসিরুলের বাড়ানো বল আরামবাগের বদলি ডিফেন্ডার রাহাদ মিয়ার হাতে লাগলে পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি। স্পটকিক থেকে বল জালেও জড়িয়েছিলেন দিদিয়ের। কিন্তু তিনি শট নেওয়ার আগে সতীর্থ খেলোয়াড় বক্সে প্রবেশ করায় সেটি বাতিল করা হয়। দিদিয়েরের ফিরতি শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। ক্রসবারের পর আবাহনীর সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় সাইড পোস্ট। ম্যাচের শেষের দিকে বদলি ফরোয়ার্ড শাখওয়াত রনির হেড সাইড পোস্টে লেগে ফিরে আসে। অবশ্য এতে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে সমস্যা হয়নি তাদের।
এই জয়ে ১৪ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের সপ্তম স্থানে আবাহনী। সমান ম্যাচে মাত্র ১ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তলানিতে আরামবাগ।