ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা অনুশীলনে ফেরাল এরিকসেনকে
ফুটবলভক্তরা সেদিন হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিলেন যেন। কেউ মাঠে দর্শক হিসেবে, কিংবা কেউ টেলিভিশনে দেখছিলেন সেই দুঃসহ সময়। জীবন-মৃত্যুর মাঝখানে যে কেবল সেকেন্ডের পার্থক্য, সেটি খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছিলেন সবাই।
ইউরোর গ্রুপ পর্বের ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচের ৪০ মিনিটে মাঠে হঠাৎ মুখ থুবড়ে পড়ে যান ড্যানিশ মিডফিল্ডার ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন। ১৫ মিনিট ধরে প্রাথমিক চিকিৎসায় শ্বাসপ্রশ্বাস ফেরে এরিকসেনের। কিছুটা স্থিতিশীল হলে তাঁকে পরে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। কিন্তু এর আগপর্যন্ত প্রতিটি মুহূর্তই কেটেছে ভয়াবহ কোনো দুঃস্বপ্নের মতো।
সে দুঃস্বপ্নের প্রহর কেটেছে অবশেষে। সুস্থ হয়েছেন তিনি। তবে সুস্থ হলেও আদৌ ফুটবলের মাঠে আবারও এরিকসেনকে দেখা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়-সন্দেহ ছিলই।
কিন্তু এরিকসেন এত আগে হার মানতে রাজি হবেন কেন? রাজি হননি এই ড্যানিশ মিডফিল্ডার। আর রাজি হননি দেখেই আবারও ফুটবল মাঠে ফেরার জন্য অনুশীলন শুরু করে দিয়েছেন ইন্টার মিলানের এই তারকা। যে ক্লাবের হয়ে পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন, সেই ড্যানিশ ক্লাব ওডেনসে বোল্ডক্লুবের হয়ে অনুশীলনে ফিরেছেন তিনি।
তবে ড্যানিশ শীর্ষ বিভাগের এই ক্লাবের মূল একাদশের হয়ে অনুশীলন করছেন না এরিকসেন। অনুশীলনের জন্য ক্লাবের একটা মাঠ ব্যবহার করছেন শুধু। আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ওডেনসে বোল্ডক্লুবই জানিয়েছে এই সংবাদ, ‘অনুশীলন করার জন্য ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন আমাদের একটি মাঠ ব্যবহার করছেন। তিনি আমাদের কাছ থেকে অনুমতি চেয়েছিলেন সেই মাঠ ব্যবহার করার জন্য। আমরা সেটি দিতে রাজি হয়েছি।’
২৯ বছর বয়সী এরিকসেন সেদিন ফিনল্যান্ডের ডি-বক্সের কাছে একটি থ্রো ইন থেকে বল নেওয়ার সময় মাঠে পড়ে যান। অধিনায়ক সিমোন কিয়ার প্রাথমিকভাবে তাঁর শ্বাসপ্রশ্বাসের পথ যেন বন্ধ না হয়, সেটি নিশ্চিত করেছিলেন। বাকি সতীর্থরা এরিকসেনের চারপাশে দাঁড়িয়ে মানবদেয়াল সৃষ্টি করেছিলেন, যেন চিকিৎসক দল নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারে।
দুই দলের সমর্থকেরা এ সময় তাঁদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ভালোবাসা জানিয়েছিলেন। ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ড—দুই সমর্থক দলই এ সময় এরিকসেনের নাম ধরে স্লোগান দিয়েছিল।