পিএসজি ছাড়ার গুঞ্জনের মধ্যেই চুক্তি বাড়ল নেইমারের
কিলিয়ান এমবাপ্পে চুক্তি নবায়নের পর বোঝাই যাচ্ছে, পিএসজিতে গুরুত্ব হারিয়েছেন নেইমার। নইলে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই তাঁর পিএসজি ছাড়ার গুঞ্জন চাউর হবে কেন? আবার এর মধ্যেই কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম জানিয়ে দেয়, নেইমার পিএসজিতেই থেকে যেতে চান কিংবা ছাড়তে চান।
অর্থাৎ, পিএসজির সঙ্গে ব্রাজিলিয়ান তারকার কিছু একটা যে ঠিক নেই তা পরিস্কার। কি ঠিক নেই—সেটাও বের হয়ে এসেছে এতদিনে।
দলবদলের বাজারে ফি–র বিশ্বরেকর্ড নতুন করে লিখিয়ে ২০১৭ সালে নেইমারকে এনেছে পিএসজি। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের হাত ধরে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতে ইউরোপের কুলীন ক্লাবগুলোর কাতারে ঠাঁই করে নিতে চেয়েছিল পিএসজি। হয়নি। নেইমারের মাঠের বাইরের বিতর্ক আর ক্রমাগত চোটেও বিরক্ত পিএসজি—যে বিরক্তিটা আসলে ক্লাবটির সভাপতি নাসের আল খেলাইফির। জোর গুঞ্জন চলছে, পিএসজি সভাপতি তাঁকে বেচে দিতে চান। ক্লাবের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় নেইমার নেই।
তা, সভাপতি যেহেতু চান না, নেইমার পিএসজিতে থাকেন কীভাবে? আসলে সেটাও সম্ভব, আর ফরাসি সংবাদমাধ্যম ‘লেকিপ’ জানিয়েছে পিএসজিতে এটাই হয়েছে। নেইমারের সঙ্গে পিএসজির সর্বশেষ চুক্তিপত্রে একটি শর্ত ব্রাজিলিয়ানের প্যারিসের ক্লাবটিতে থেকে যাওয়ার পক্ষে কাজ করছে।
দেড় বছর আগে নেইমার যখন ২০২৫ সাল পর্যন্ত চুক্তি নবায়ন করেন, তখন সেই চুক্তিপত্রে শর্ত ছিল, ২০২২ সাল পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে পিএসজিতে তাঁর মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়বে, অর্থাৎ চুক্তি বেড়ে ২০২৭ সাল পর্যন্ত নবায়ন হয়ে যাবে। আর এ শর্ত কার্যকর হয়েছে চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে।
পিএসজিতে নেইমারের বাৎসরিক বেতন ৩ কোটি ইউরো। এই বেতনে তাঁকে খুব কম ক্লাবই দলে ভেড়াতে পারবে। বাজারে চেলসির নাম শোনা যাচ্ছে। ইংলিশ ক্লাবটির নতুন মালিক টড বোহলি নাকি নিজের ‘স্টেটমেন্ট সাইনিং’ হিসেবে নেইমারকে কিনতে আগ্রহী। চেলসি কোচ টমাস টুখেলের অধীনেও পিএসজিতে খেলেছেন নেইমার। কিন্তু চুক্তির সেই শর্ত নেইমার জুলাই থেকে চালু করায় চেলসির সুযোগ নেই বললেই চলে।
ইউরোপের বাজারে নেইমারকে নিয়ে যখন এমন চলছে তখন বসে থাকেনি তাঁর সাবেক ক্লাব সান্তোস। ২০১৩ সালে বার্সেলোনায় যোগ দেওয়ার আগে এই ক্লাবেই তো নিজেকে তারকা হিসেবে গড়ে তুলেছেন নেইমার। ক্লাবটির সভাপতি আন্দ্রেস রুয়েদা নেইমারকে ফিরিয়ে আনতে চান। তাঁর ‘নিজের জায়গা থেকে নেইমারের জন্য কিছু করতে না পারলে’ সেটি ‘ভালো দেখায় না’ বলে মনে করেন রুয়েদা।
কয়েকদিন আগে ক্লাবের পরিচালক–পর্ষদের বৈঠকের পর সান্তোস সভাপতি বলেছেন, ‘(নেইমারকে ফিরিয়ে আনতে) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে এমন কিছু বিষয় আছে যা এখানে (সংবাদমাধ্যমকে) বলা সম্ভব না।’
তবে নেইমারের বাবার কথা শুনলে অন্য কিছু মনে হবে। ফরাসি সংবাদমাধ্যম আরএমসি স্পোর্ট জানিয়েছে, নেইমারের বাবার দাবি সান্তোস তাঁর ছেলেকে ফিরিয়ে আনার জন্য কোনো চেষ্টা করছে না। খবরটি ‘মিথ্যা।’
নেইমার নিজের আত্মীয়–স্বজনদেরও নাকি একই কথা বলেছেন। অর্থাৎ, পিএসজিতেই আপাতত থেকে যাওয়ার ইচ্ছা নেইমারের।