২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

নয়্যার-টের স্টেগেনকে চেয়েছিল লিভারপুল

ম্যানুয়েল নয়্যার ও মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেনছবি : টুইটার

ভেবে দেখুন, লিভারপুলের গোলবার সামলানোর দায়িত্বে আলিসন বেকার নন, আছেন বিশ্বকাপজয়ী জার্মান তারকা ম্যানুয়েল নয়্যার। কিংবা হালে বার্সেলোনার গোলবারের অতন্দ্র প্রহরী আরেক জার্মান তারকা মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেন। ভাবনাটা কিছুটা কষ্টকল্পনার মতোই মনে হবে।


দলে আলিসন বেকার আসার পরেই ৩০ বছরের লিগ খরা ঘুচিয়েছে লিভারপুল। জিতেছে নিজেদের ইতিহাসের ষষ্ঠ চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা। লিভারপুলের কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ বুঝেছিলেন, লিভারপুলকে শিরোপাজয়ী ক্লাবে পরিণত করতে হলে শুধু ক্ষুরধার আক্রমণভাগ থাকলেই চলবে না, লাগবে শক্তিশালী রক্ষণও। যে কারণে ২০১৮ সালে লিভারপুলে নাম লেখান আলিসন। ব্রাজিলের যে গোলকিপারকে সে সময় থেকেই বিশ্বের অন্যতম সেরা গোলকিপার বলা হতো।

লিভারপুল গোলকিপার আলিসন ও ক্লাবটির কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ
ছবি: টুইটার

কিন্তু আলিসন আসার আগে লিভারপুলের রক্ষণভাগ কোনো বিশ্বমানের গোলকিপার সামলাচ্ছেন, এমনটা বলার উপায় ছিল না। আলিসনের আগে লিভারপুলের গোলবার সামলাতেন স্পেনের পেপে রেইনা, জার্মানির লরিস ক্যারিয়াস, হাঙ্গেরির অ্যাডাম বগদান ও বেলজিয়ামের সিমোন মিনিওলে।

তাঁরা কার্যকরী হতে পারেন, তবে কাউকেই বিশ্বমানের গোলকিপার বলা যায় না। তবে লিভারপুলের গোলকিপিং কোচ জন আকতেরবার্গের কথা মানলে এটা বলতেই হবে, আলিসন বেকার আসার বহু আগে থেকেই একজন বিশ্বমানের গোলকিপার হন্যে হয়ে খুঁজছিল লিভারপুল।

২০০৫ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত লিভারপুলে খেলে গেছেন পেপে রেইনা
ছবি : টুইটার

ডাচ গোলকিপার আকতেরবার্গ কখনো জাতীয় দলের হয়ে খেলেননি। ইংলিশ ক্লাব ট্র্যানমেয়ার রোভার্সের হয়ে ২০০৯ সালে খেলোয়াড়ি জীবন শেষ করা আকতেরবার্গ সঙ্গে সঙ্গেই নাম লেখান কোচিংয়ে, যোগ দেন লিভারপুলে। সেখানে গিয়েই মূল দলের জন্য একজন বিশ্বমানের গোলকিপার খোঁজা শুরু করেন তিনি।

রেডম্যান টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাবেক এই ডাচ গোলকিপার জানিয়েছেন, ‘২০১১ সালে তখনকার ফুটবল পরিচালক ড্যামিয়েন কমোলিকে বললাম, দুজন গোলকিপার আছে যাদের আমি অনেক পছন্দ করি। একজন ম্যানুয়েল নয়্যার, যে তখন শালকে ০৪ এর হয়ে খেলত। আরেকজন সামির হানদানোভিচ। যে তখন উদিনেসের হয়ে খেলত।’

সামির হানদানোভিচের দিকেও ছিল লিভারপুলের নজর
ছবি : সিরি আ

নয়্যার তখন শালকের হয়ে খেললেও, বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দেওয়ার দ্বারপ্রান্তে ছিলেন। যে তথ্যটা জানা ছিল না আকতেরবার্গের, ‘কমোলি তখন আমাকে বললেন, নয়্যার বায়ার্নে যাচ্ছে, ওকে আনা সম্ভব না। আমি তখনো জানতাম না নয়্যার বায়ার্নে নাম লেখাচ্ছে যে। তবে হানদানোভিচের ক্ষেত্রে সে সমস্যাটা ছিল না। সে তখন উদিনেসে খেলত। কিন্তু আমার পরামর্শ অনুযায়ী কমোলি তেমন কিছুই করেনি। এরপর হানদানোভিচ ইন্টার মিলানে নাম লেখায়। এ রকম হয় অনেক সময়।’


কয়েক বছর পর নয়্যারের মতো আরেক জার্মান গোলকিপার টের স্টেগেনের দিকে নজর পড়ে আকতেরবার্গের।

রেইনা যাওয়ার পর লিভারপুলের মূল গোলকিপারের দায়িত্ব পান সিমোন মিনিওলেই
ছবি : লিভারপুল

সে সময় লিভারপুলের কোচ ব্রেন্ডান রজার্সকেও টের স্টেগেনের ব্যাপারে বলেছিলেন আকতেরবার্গ, ‘ব্রেন্ডান যখন লিভারপুলে ছিল, তখন আমি ওকে টের স্টেগেনের ব্যাপারে জানাই। টের স্টেগেন তখন গ্লাডবাখের (বরুসিয়া মনশেনগ্লাডবাখ) হয়ে খেলত। কয়েক সপ্তাহ পর ব্রেন্ডান এসে আমাকে জানায় ওকে ক্রিস হিউটন (নিউক্যাসল ইউনাইটেড, নরউইচ সিটি ও ব্রাইটনের সাবেক কোচ) ফোন করে জানিয়েছে, গ্লাডবাখে একজন গোলকিপার খেলছে, যে অনেক দুর্দান্ত। আমি তখন ব্রেন্ডানকে বললাম, আমি তো কয়েক দিন আগে তোমাকে এই গোলকিপারের ব্যাপারেই বললাম! তারপর টের স্টেগেন তো বার্সেলোনাতেই চলে গেল।’


তিনজনের প্রত্যেকেই ক্লাব ক্যারিয়ারে যথেষ্ট সফল হয়েছেন। ভেবে দেখুন, এ তিনজনের একজন তখন লিভারপুলে আসলে হয়তো লিগ শিরোপার জন্য ৩০ বছর ধরে অপেক্ষা করতে হতো না লিভারপুলকে!