নেইমারকে নিয়েই পরিকল্পনা গালতিয়েরের
চেলসি সমর্থকেরা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। দলবদলের বাজারে এবার বলতে গেলে কোনো সাড়াশব্দই নেই দলটির। শুধু নিজেদের দলে প্রয়োজন মনে হচ্ছে না, এমন খেলোয়াড়দের ছেড়ে দিতেই ব্যস্ত তারা। আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেন এখন বার্সেলোনায়। রোমেলু লুকাকু ধারে ফিরেছেন ইন্টার মিলানে। অ্যান্টোনিও রুডিগার তো মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই রিয়াল মাদ্রিদে নাম লেখানো নিশ্চিত করেছেন।
এমন হতাশামাখা সময়ে বড় স্বপ্ন দেখছে দলটি। কারণ, গুঞ্জন উঠেছে, ২০১৫ ব্যালন ডি’অরের পোডিয়ামে জায়গা করে নেওয়া দুই ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও নেইমারকে পেতে পারে চেলসি! একজন কিছু জেতার সম্ভাবনা জাগাতে দল ছাড়তে চাইছেন, আরেকজন দলে গুরুত্ব হারানোয় বিরক্ত হয়ে। দ্বিতীয়জন নেইমার, পিএসজি তাঁকে বিক্রি করতে চাইছে, এমন কথা শুনে নিজেই নাকি এখন উপযুক্ত দল খুঁজছেন।
চেলসি সমর্থকদের অবশ্য বেশি আশাবাদী হতে দিচ্ছেন না পিএসজির নতুন কোচ ক্রিস্তোফ গালতিয়ের। নেইমারকে দলে কীভাবে ব্যবহার করবেন, এরই মধ্যে নাকি সেটি ঠিক করে ফেলছেন গালতিয়ের।
২০২০–২১ মৌসুমে লিলকে নিয়ে নেইমার-এমবাপ্পেদের চোখের সামনে ফ্রেঞ্চ লিগ জিতেছিলেন গালতিয়ের। লিগ জিতিয়েই অবশ্য নতুন চ্যালেঞ্জ বেছে নিয়েছিলেন। নিসের দায়িত্ব নিয়ে ক্লাবটিকে ইউরোপা কনফারেন্স লিগের প্লে-অফ খেলার যোগ্যতা এনে দিয়েছেন। গত মৌসুমেও গালতিয়েরের দল পিএসজিকে বেশ ভুগিয়েছে। লিগে নিসকে হারাতে পারেনি পিএসজি, ফ্রেঞ্চ কাপে তো নিসের কাছেই হেরে বাদ পড়েছে। নতুন মৌসুমে তাই গালতিয়েরকেই কোচ বানিয়েছে প্যারিসের ক্লাবটি।
গত মঙ্গলবার মরিসিও পচেত্তিনোকে ছাঁটাই করেছে পিএসজি। আর্জেন্টাইন কোচের দোষ? চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রত্যাশিত সাফল্য এনে দিতে না–পারা। সে দায়টা চাইলে নেইমারের ঘাড়েও ফেলা যায়। হাজার হলেও ইউরোপের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ট্রফি জেতার জন্যই তো ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের জন্য দলবদলের রেকর্ড ভেঙেছিল পিএসজি। ৩০ বছর বয়সী নেইমার পাঁচ বছরে সেটা করতে পারেননি। পাশাপাশি মাঠের বাইরে নেইমারের উদ্দাম জীবনেও বিরক্ত পিএসজির কাতারি মালিকপক্ষ।
বাজারে তাই বেশ বড় গুঞ্জন চলছে নেইমারকে নিয়ে। এই মৌসুমে পিএসজি তাঁকে ছেড়ে দিতে চায় বলেই খবর। সম্ভাব্য ক্লাব হিসেবে বার্সেলোনার নাম আবার এসেছে। কিন্তু কাতালানদের আর্থিক দুরবস্থার কারণে সে গুঞ্জন ধোপে টেকেনি। নব্য ধনী ক্লাব নিউক্যাসল ইউনাইটেডের নাম শোনা যাচ্ছে। আর শোনা যাচ্ছে নতুন মালিকের অধীনে যাওয়া চেলসির কথা।
গালতিয়ের অবশ্য এসব গুঞ্জনকে পাত্তাই দিচ্ছেন না। তাঁর সোজাসাপ্টা জবাব, এমন প্রতিভাবান খেলোয়াড়কে কেউ ছাড়তে চায় না, ‘নেইমার বিশ্বমানের খেলোয়াড়। কোন কোচ ওকে দলে চাইবে না! দলে একটা ভারসাম্য খুঁজে নিতে হবে আমাদের। ওর কাছ থেকে কী চাই, এ ব্যাপারে আমার পরিষ্কার ধারণা আছে। ওর সঙ্গে আমার দেখা হয়নি, কিন্তু আমি চাই সে আমাদের সঙ্গে থাকুক।’
নেইমারকে পরিকল্পনায় রাখলেও দলবদলের মৌসুম শেষেও তাঁকে পাবেন, সে নিশ্চয়তা নেই। সে তুলনায় একজনকে নিয়ে এখন থেকেই পরিকল্পনা করে রাখতে পারেন গালতিয়ের-কিলিয়ান এমবাপ্পে। এক বছর ধরে রিয়াল মাদ্রিদে যাচ্ছেন, এমন খবর শোনা গেলেও পিএসজিতেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ড।
এমবাপ্পের এমন সিদ্ধান্তে খুবই উচ্ছ্বসিত গালতিয়ের, ‘একজন ফ্রেঞ্চ হিসেবে আমি খুবই খুশি যে সে ফ্রান্সে থাকছে। আমাদের লিগ ও পিএসজির জন্য খুব ভালো হবে এটা। ওর সঙ্গে আমার এখনো কথা হয়নি। আমি জানি দলের কাছ থেকে কিলিয়ান কী চায়। আমরা জানি সে দলে কী দেয়। ওর ওপর শিরোপা এনে দেওয়ার চাপ দেওয়াটা ঠিক হবে না। সে একজন তরুণ খেলোয়াড়, ওর ওপর চাপ বাড়াতে চাই না।’