নিউক্যাসলের সৌদি মালিক চমক দেখাল কোচ বাছাইয়ে
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান আল সৌদের স্নেহপুষ্ট একটি কনসোর্টিয়াম ৩০ কোটি পাউন্ডের বিনিময়ে নিউক্যাসলের শতভাগ মালিকানা কিনে নিয়েছে। এ খবর এখন সবাই জানেন। বিত্তশালী নতুন মালিকের অধীন ম্যানচেস্টার সিটি, চেলসি, পিএসজির মতো নিউক্যাসলও বদলে যাবে আগাগোড়া, এটাই এখন আশা নিউক্যাসল সমর্থকদের।
মালিকানা বদলের পরপরই আশার ভেলায় পাড়ি দিচ্ছেন নিউক্যাসল ইউনাইটেডের সমর্থকেরা। মাইক অ্যাশলির অধীন যে স্বপ্ন দেখতে তাঁরা সাহসও করতেন না, এখন তার চেয়েও বড় স্বপ্ন দেখার দুঃসাহস দেখাচ্ছেন নিয়মিত।
বড় কোচ, প্রতি পজিশনে ভালো খেলোয়াড়—স্বপ্নের কি আর শেষ আছে! আন্তোনিও কন্তে থেকে শুরু করে জিনেদিন জিদান, রবার্তো মার্তিনেজ থেকে উনাই এমেরি, স্টিভেন জেরার্ড থেকে আর্নেস্তো ভালভার্দে—মোটামুটি যাঁদের বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে দলে টানা সম্ভব, সবার সঙ্গে নিউক্যাসলের নাম জড়িয়ে গুঞ্জন ছড়িয়েছে।
ভালো কোচ আনার লক্ষ্যে আগের কোচ স্টিভ ব্রুসকেও ছাঁটাই করেছে তারা।
কিছুদিন আগে সবাইকে ছাপিয়ে উনাই এমেরিকে নিয়ে গুঞ্জনের মাত্রা বেড়ে গেলে ভিয়ারিয়ালের কোচ এমেরি নিজেই বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেন, নিউক্যাসলে যাওয়ার ইচ্ছা নেই তাঁর। শেষমেশ তেমন কোনো বড় ম্যানেজারের দিকে হাত বাড়াল না নিউক্যাসল। দলে আনল ইংলিশ ফুটবলের অন্যতম পরিচিত মুখ বোর্নমাউথের ম্যানেজার এডি হাউকে।
২০২৪ সাল পর্যন্ত এডি হাউয়ের সঙ্গে চুক্তি করেছে ক্লাবটি। এ আড়াই বছরে নিউক্যাসলকে আবারও লিভারপুল, চেলসি, ম্যানচেস্টার সিটির কাতারে নিয়ে আসার দায়িত্ব থাকবে তাঁর ওপর। ২০০৯ সালে মাত্র ৩১ বছর বয়সে বোর্নমাউথের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। তখন ইংলিশ লিগের সবচেয়ে কমবয়সী ম্যানেজার হওয়ার রেকর্ড গড়েছিলেন। মাঝে বছরখানেক বার্নলিতে থেকে আবারও বোর্নমাউথে ফেরত আসেন হাউ।
২০১৫ সালে এই হাউয়ের অধীনই নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রিমিয়ার লিগে ওঠে বোর্নমাউথ। শীর্ষ পর্যায়ে বোর্নমাউথের মতো পুঁচকে ক্লাবকে টানা পাঁচ বছর রেখেছিলেন হাউ। এরপর যদিও বোর্নমাউথ অবনমিত হয়ে যায়।
প্রতিভাবান তরুণ খেলোয়াড় খুঁজে বের করা, তাঁদের ভালোভাবে ব্যবহার করা ও পরে লাভে বিক্রি করার জন্য এডি হাউ বেশ বিখ্যাত। টায়রন মিংস, লিজ মুসে, ম্যাট রিচি, গ্লেন মারে, বেনিক আফোবে, নাথান আকে, অ্যারন র্যামসডেলদের প্রত্যেকেই বোর্নমাউথের হয়ে আলো ছড়িয়ে পরে নাম লিখিয়েছেন অপেক্ষাকৃত বড় ক্লাবে। বোর্নমাউথের অবনমনের পরে ২০২০ সালে হাউ দায়িত্ব ছেড়ে দেন। এক বছর কোনো চাকরি করেননি। এর মধ্যে তাঁর সঙ্গে নাম জড়িয়েছে টটেনহাম, সেল্টিকের মতো দলগুলোর। সারা জীবন অল্প দামে খেলোয়াড় কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হওয়া হাউ শেষমেশ এমন ক্লাব পাচ্ছেন, যেখানে তাঁকে টাকা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না অন্তত!
শুধু তাই নয়, হাউয়ের পাশাপাশি একজন নতুন ফুটবল পরিচালকও নিয়োগ দিচ্ছে নিউক্যাসল। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রধান পছন্দ চেলসির সাবেক পরিচালক মাইকেল এমেলানোকে। চেলসির সাফল্যের অনেকটাই এই এমেলানোর ওপর নির্ভরশীল। সেই এমেলানোর হাত ধরেই চেলসির মতো নতুন দিনের স্বপ্ন দেখতে চায় নতুন নিউক্যাসল।