না খেলেই তিন পয়েন্ট রোনালদোদের?
সবকিছু ঠিক থাকলে এতক্ষণে জুভেন্টাসের তুরিনে থাকার কথা ছিল কালিদু কুলিবালি, লরেঞ্জো ইনসিনিয়াদের। রোনালদোর জুভেন্টাসের বিপক্ষে হাইভোল্টেজ লিগ ম্যাচে নাপোলি নামবে আজ রোববার দিবাগত রাত পৌনে একটায়, এমনটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাধ সাধছে করোনাভাইরাস। ফলে রোনালদোরা আদৌ মাঠে নামবেন কি না, সে নিয়ে দেখা গিয়েছে শঙ্কা।
একটু খোলাসা করে বলা যাক। গত সপ্তাহে নাপোলির মাঠে খেলতে আসে জেনোয়া, করোনা-বিড়ম্বনায় নির্ধারিত সময়ের তিন ঘণ্টা পরে শুরু হয়েছিল ম্যাচ। কারণ, ম্যাচের দিন সকালে জানা যায়, জেনোয়ার মূল গোলরক্ষক মাত্তিয়া পেরিন করোনা পজিটিভ। বিপাকে পড়ে জেনোয়া স্কোয়াড বেশ কয়েক ঘণ্টা দেরিতে নেপলসে অবতরণ করে। ম্যাচে নাপোলি জেতে ৬-০ গোলে।
কিন্তু পরদিন থেকে জেনোয়ার একেকজন খেলোয়াড় করোনা পজিটিভ হচ্ছেন, এমন খবর আসতে থাকে। বাড়তে বাড়তে সে সংখ্যা দাঁড়ায় ২২-এ, যাদের বেশির ভাগই খেলোয়াড়। আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ক্লাব জানায়, ডিফেন্ডার দাভিদে জাপাকস্তা ও লুকা পেলেগ্রিনি, মার্কো পিয়াৎসা, মিডফিল্ডার লাসে শোয়েন, ইভান রাদোভানোভিচ, ভালোন বেহরামি ও লুকাস লেরাগের, গোলরক্ষক ফেদেরিকো মারচেত্তি সবাই আক্রান্ত হয়েছেন ভাইরাসে। যদিও কারওরই উপসর্গ ছিল না।
জেনোয়ার এত খেলোয়াড় যেখানে করোনা পজিটিভ, সেখানে ভয় ছিল নাপোলির খেলোয়াড়দের নিয়েও। হাজার হোক, ওই জেনোয়া তারকাদের সঙ্গেই তো ম্যাচ খেলেছেন! আশঙ্কাটা সত্যি হয়, যখন খবর আসে, নাপোলির পোলিশ তারকা মিডফিল্ডার পিওতর জিয়েলিনস্কি করোনায় আক্রান্ত। জিয়েলিনস্কির পথ ধরে মেসিডোনিয়ার মিডফিল্ডার এলিফ এলমাস আক্রান্ত হয়েছেন, গত রাতে নিশ্চিত করে নাপোলি। আর গত রাতেই নাপোলি তারকাদের তুরিনের উদ্দেশ্যে ওড়ার কথা। যেখানে দুজন খেলোয়াড় ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েই গেছেন, সেহেতু আরও খেলোয়াড় আক্রান্ত হতেও পারেন, এ আশঙ্কায় স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ নাপোলি স্কোয়াডকে যাত্রা না করার পরামর্শ দেয়। আরও একবার যাতে পরীক্ষা করা হয়, সে ব্যাপারে বলা হয় নাপোলি তারকাদের। যে কারণে গত রাতের নির্ধারিত ফ্লাইটে কেউই তুরিন আসতে পারেননি।
ফেডারেশনের নিয়ম অনুযায়ী যে কোনো দলের ১৩ জন খেলোয়াড়ও যদি সুস্থ থাকেন তাহলে তাঁরা মাঠে নামতে বাধ্য। না নামলে প্রতিপক্ষকে ৩-০ গোলের ব্যবধানে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। অবস্থা বুঝে গতকাল রাতে জুভেন্টাসও ঘোষণা দেয়, তাঁরা যথারীতি ম্যাচ খেলার জন্য মাঠে নামবে। অর্থাৎ নাপোলি যদি না-ও আসে, রোনালদোরা না খেলেই তিন পয়েন্ট পেয়ে যাবেন।
এদিকে ইতালিয়ান নিউজ এজেন্সি 'এএনএসএ' জানিয়েছে, নাপোলির খেলোয়াড়দের তুরিনে আসার জন্য কোনো বাধা দেওয়া হয়নি, যেমনটা আগে বলা হচ্ছিল। অর্থাৎ চাইলেই নাপোলি তারকারা জুভেন্টাসে আসতে পারতেন, তারাই আসেননি। এজেন্সির খবর যদি সত্যি হয়, তাহলে নাপোলি যদি শেষমেশ খেলতে না যায়, তবে মাঠে না নেমেই জুভেন্টাসের তিন পয়েন্ট পাওয়ার পথ সুগম হয়ে যাবে। 'এএনএসএ' জানিয়েছে, স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ গোটা স্কোয়াডকে যেতে মানা করেনি, শুধু যাদের সমস্যা, তাঁদের সঙ্গনিরোধ অবস্থায় থাকতে বলেছে। এদের মধ্যে রয়েছেন নাপোলি কোচ জেনারো গাত্তুসো সহ বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়। নাপোলি এখনো গোটা বিষয় নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে জুভেন্টাসেরও দুজন করোনা পজিটিভ হয়েছেন। তাঁরা নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী সঙ্গনিরোধ পালন করছেন। তবে সে দুজন খেলোয়াড় বা কোচিং স্টাফের কোনো সদস্য নন। এদিকে লিগ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যথারীতি আয়োজিত হবে জুভেন্টাস-নাপোলি ম্যাচ। ম্যাচ স্থগিত করার কোনো কথা তাঁরা বলেনি।
ওদিকে জুভেন্টাস টুইট করে জানিয়ে দিয়েছে, ম্যাচের সময়ে যথারীতি তাঁরা মাঠে উপস্থিত থাকবে। অর্থাৎ আজ রাতের আগে নাপোলি স্কোয়াড তুরিনে না পৌঁছালে, না খেলেই তিন পয়েন্ট পেয়ে যাবে জুভেন্টাস।