নতুন নেইমার হতে চান না এই রিয়াল তারকা
প্রতিভার ঝলক ছিল এতটাই যে সান্তোসের হয়ে নিয়মিত খেলতে না খেলতেই রদ্রিগো ডাক পেয়ে যান রিয়াল মাদ্রিদ থেকে। এরপর থেকেই শুরু পূর্বসূরিদের সঙ্গে তুলনা—আর দশটা ব্রাজিলীয় তরুণের মতোই। তাঁর খেলা দেখে অনেকেই তাঁর নাম দিয়েছেন ‘নতুন নেইমার’। কেউ বা বলেছেন ‘নতুন রবিনিও’। কিন্তু রদ্রিগো নিজে এ ব্যাপারগুলো মোটেও উপভোগ করেননি। কখনোই এই তুলনা ভালো লাগেনি তাঁর।
এই তুলনা যে কেবল প্রত্যাশার চাপ বাড়ায়, সেটি জানেন রদ্রিগো। তাই সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘নতুন নেইমার’ বা ‘নতুন রবিনিও’ হওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই তাঁর। তিনি পরিচিত হতে চান নিজের নামেই। গল্পটা লিখতে চান নিজের মতো করেই,‘আমি যখন সান্তোসের হয়ে আমার ক্যারিয়ার শুরু করি, প্রথম থেকেই তাঁরা আমাকে হয় নেইমার, না হয় রবিনিওর সঙ্গে তুলনা করত। সব সময় ওই চাপটা আমার ওপর ছিলই। আমি সব সময়েই বলে এসেছি, নতুন নেইমার হওয়ার কোনো ইচ্ছেই নেই আমার। আমি আমার নিজের গল্প লিখতে চাই।’
নেইমার আর রবিনিও যখন সান্তোসের হয়ে খেলতেন, তখন তাঁদের প্রতিভার কথা ব্রাজিল ছাড়িয়ে পড়েছিল ইউরোপে। পরে দুজনই ইউরোপের বড় ক্লাবে নাম লেখান, দামও হয়ে যায় তাঁদের আকাশচুম্বী। রবিনহো তো রিয়াল মাদ্রিদে এসেই লুইস ফিগোর বিখ্যাত দশ নম্বর জার্সি গায়ে চাপানোর সুযোগ পেয়ে যান। এই একটি ব্যাপারেই বোঝা যায়, রবিনিওর ওপর কতটা ভরসা ছিল রিয়ালের মতো ক্লাবের। নেইমারকেও সান্তোস থেকে মেসির সঙ্গী বানিয়ে নিয়ে আসে বার্সেলোনা। রদ্রিগোও যে ওই পথেই হাঁটা শুরু করেছেন। মাত্র ১২ বছর বয়সেই তিনি ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নাইকির শুভেচ্ছাদূত হয়েছিলেন। তিনিই নাইকির শুভেচ্ছাদূত হওয়া সর্বকনিষ্ঠ ক্রীড়াবিদ।
রদ্রিগোকে সাড়ে চার কোটি ইউরোয় ইতিমধ্যেই দলে নিয়ে নিয়েছে রিয়াল। প্রতিদানও দিয়েছেন। চ্যাম্পিয়নস লিগে দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে গ্যালাতেসারাইয়ের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছেন। ক্যারিয়ার সবে শুরু হলেও নেইমার, রবিনিওর মতো হওয়ার সব গুণাবলিই তাঁর মধ্যে আছে।
তবে রদ্রিগো অতশত চিন্তা করে নিজের ওপর চাপ বাড়াতে রাজি নন মোটেও। নিজের খেলাটাই খেলতে চান ঠিকঠাক, ‘নেইমার আর রবিনিও, দুজনই সান্তোসের কিংবদন্তি, তাঁরা অনেক জায়গায় খেলেছেন। আমি মাত্রই আমার ক্যারিয়ার শুরু করেছি। আর আমার কাছে মনে হয়, নেইমার বিশ্বে শুধু একজনই আছে। তবে আমি শুধুই রদ্রিগো হতে চাই।’
জাতীয় দলের হয়ে এর মধ্যেই তিন ম্যাচ খেলা হয়ে গেছে রদ্রিগোর। সর্বশেষ ম্যাচটা খেলেছেন বলিভিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে, দ্বিতীয়ার্ধে নেমেছিলেন এভারটন সোয়ারেসের বদলি হিসেবে। খেলতে পারেন আগামীকাল পেরুর বিপক্ষেও। জাতীয় দলেও ভালো করার প্রত্যয় রদ্রিগোর চোখেমুখে, ‘আমরা সবাই জানি আমার জায়গায় ব্রাজিল দলে অনেক খেলোয়াড় আছে। আমাকে তাই নিজের মান বজায় রাখতে হবে। যখন আমার সামনে খেলার সুযোগ আসবে, তখনই ভালো খেলতে হবে। তিতে যখনই আমাকে অনুশীলনে ডেকে যা যা করতে বলবেন, তাই করতে হবে। নিজের কাজ ঠিকঠাক মতো করতে পারলেই জাতীয় দলে নিয়মিত ডাক পাব।’