দুদকের অনুসন্ধান ও সালাউদ্দিনের বক্তব্য
>বাফুফে কর্তাদের এবার কাঠগড়ায় তুলেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিভিন্ন অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনকে চিঠি দিয়েছে দুদক
‘দেশের ফুটবলে একসময় সোনালি অতীত ছিল। এখন সেই অধ্যায় কবরে চলে গেছে। দুর্নীতির আখড়া হয়ে গেছে বাফুফে। এখানে নেই কোনো স্বচ্ছতা আর জবাবদিহি।’ কথাগুলো গত বছর মে মাসে আক্ষেপ করে বলেছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) টানা দুবারের নির্বাচিত সহসভাপতি ও সাবেক তারকা ফুটবলার বাদল রায়। বাফুফের বর্তমান সহসভাপতির কথায় স্পষ্ট দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থার ভেতরের অবস্থা কতটা ভয়াবহ।
বাফুফে কর্তাদের এবার কাঠগড়ায় তুলেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিভিন্ন অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনকে চিঠি দিয়েছে দুদক। বাফুফে সভাপতিসহ দেশের সর্বোচ্চ ফুটবল সংস্থার আরও দুই শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও এই অনুসন্ধান চলছে। তাঁরা হলেন বাফুফের নির্বাহী সদস্য ও মহিলা কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ এবং প্রধান হিসাব কর্মকর্তা আবু হোসেন। বাফুফে সভাপতি বরাবর পাঠানো চিঠিতে চলতি মাসের ৭ তারিখের মধ্যেই দুদকের কাছে আনুষঙ্গিক রেকর্ডপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে।
বাফুফের কাছে মোট ১১টি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নথিপত্র চেয়েছে দুদক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাফুফে সভাপতি হিসেবে সালাউদ্দিনের দায়িত্ব পালনকালে বাফুফের ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোর বিবরণ, সিলেট বিকেএসপিতে ফুটবল একাডেমি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ফিফা থেকে প্রাপ্ত অর্থ ও ব্যয়ের বিবরণ, ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বার্ষিক ও বিশেষ অডিট রিপোর্ট।
দুদকের চিঠির বিষয়ে বাফুফে সভাপতি সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, ‘আমি দেখেছি চিঠি এসেছে। চিঠির বিষয়টাও দেখেছি। দুদক কিছু অভিযোগ এনেছে। একটা চিঠি দিয়ে বলেছে এই জিনিসগুলো ব্যাখ্যা দিতে। অফিস ব্যাখ্যা তৈরি করছে। তারা চার–পাঁচ বছর আগের কিছু রিপোর্ট চেয়েছে। ফিফা অডিট, এএফসি অডিট। আগের বাফুফে নির্বাচনের আগেও এ রকম কিছু চলছিল।’
কিন্তু প্রশ্নটা হলো সুনির্দিষ্ট করে তিনজনের বিরুদ্ধে কেন অনুসন্ধান? এই প্রশ্নের জবাবে সালাউদ্দিন বলেন, ‘একজন সভাপতি হিসেবে আমার বিরুদ্ধে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু কিরণের বিষয়টা আমি বুঝলাম না। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো চার্জশিট দেয়নি।’
গত বছরের মাঝামাঝি কাজী সালাউদ্দিন ও অন্য দুজনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। দুদকের উপপরিচালক আহমারুজ্জামান অনুসন্ধান শুরু করেন। পুলিশের এই কর্মকর্তা নিজ বাহিনীতে ফেরত গেলে অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান আরেক উপপরিচালক নাসির উদ্দিন। তিনিই বাফুফে সভাপতি বরাবর চিঠিটি পাঠিয়েছেন। চিঠির বিষয়বস্তুতেই মূল অভিযোগের কথা উল্লেখ রয়েছে। সেখানে বলা হয়, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ও অন্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র চাওয়া হচ্ছে।