দুই স্বাগতিকের লড়াইয়ে শেখ রাসেলকে হারিয়ে শেষ হাসি কিংসেরই
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে হ্যাটট্রিক শিরোপার স্বপ্নে বিভোর বসুন্ধরা কিংস এগিয়ে চলেছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। লিগের দ্বিতীয় পর্বে টানা ছয় ম্যাচই জিতেছে তারা। আজ নিজেদের মাঠ কিংস অ্যারেনায় শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রকে ৩–২ গোলে হারিয়ে শিরোপা ধরে রাখার পথে কিংস পেরিয়েছে শক্ত এক বাধা।
শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রেরও হোম ভেন্যু কিংস অ্যারেনা। ফলে দুই স্বাগতিকের লড়াইটা হয়ে দাঁড়ায় ‘বসুন্ধরা ডার্বি’। আর সেই ডার্বিতে পিছিয়ে পড়েও জিতেছে কিংস। পেনাল্টি গোলে শেখ রাসেল এগিয়ে যাওয়ার পর কিংস টানা ৩ গোল করে ম্যাচ জিতে নিয়েছে। শেষ ক্ষণে শেখ রাসেল ৩–২ করলেও সেটা আর ম্যাচের ফলাফলে প্রভাব ফেলেনি।
২২ ম্যাচের লিগে ১৭ ম্যাচ শেষে কিংসের পয়েন্ট ৪৪। ১৬ ম্যাচে আবাহনী লিমিডেটের ৩৫।
শেষ বাঁশির পর কিংস শিবির ছিল বেশ ফুরফুরে। শিরোপার লড়াইয়ের শেষ দিকে এসে এখন একেকটি ম্যাচ জেতা মানে একটা যুদ্ধ জেতা। জয় কীভাবে এল তার চেয়ে বেশি স্বস্তি তিন পয়েন্ট পেয়েছে। কিংসের সহকারী কোচ মাহবুব হোসেন রক্সি যেমন বললেন, ‘বিপলু সহজ সব গোল নষ্ট না করলে আমরা তো ৬–৭ গোলে জিততে পারতাম। তবে সেটা না হলেও আমরা খুশি এই জন্য যে জিতেছি। এখন জয়টাই সবচেয়ে বড় কথা।’
এই জয়ে ২২ ম্যাচের লিগে ১৭ ম্যাচ শেষে কিংসের পয়েন্ট ৪৪। ১৬ ম্যাচে আবাহনী লিমিডেটের ৩৫। আবাহনী পরের ম্যাচগুলোয় আরও পয়েন্ট হারালে কিংসের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথ সহজ হয়ে যাবে।
কিংসের এই সাফল্য–যাত্রায় আজ গোলকিপার আনিসুর রহমানের বিপক্ষে দুটি গোল হলেও কয়েকটি ভালো সুযোগ তিনি আটকেছেন। কিংসের কয়েকটি সুযোগ আটকেছেন শেখ রাসেলের গোলকিপার আশরাফুল ইসলামও। কিন্তু আশরাফুল শেষ পর্যন্ত পারলেন না দলকে পয়েন্ট এনে দিতে।
তবে জয়–পরাজয় এক পাশে রেখে বলতেই হয় দুই দলের লড়াইটা বেশ জমে উঠেছিল। প্রথম পর্বের শেষ দিকে রবসনের পেনাল্টি গোলে জেতে কিংস। আজও একট সময় পর্যন্ত শেখ রাসেল সমানে টক্কর দিলেও শেষ দিকে আর পেরে ওঠেনি কিংসের খেলোয়াড়দের নৈপুণ্যের কাছে। বিশেষ করে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রবসন দা সিলভা বরাবরের মতোই ছিলেন সপ্রতিভ।
মূলত বাঁ দিকের উইং ধরে খেলা রবসনের এক–দুটি ঝলকেই ম্যাচ চলে আসে কিংসের পকেটে। বরাবরই তাই হয়ে আসছে। আজও ব্যতিক্রম হয়নি। যে কারণে ফরোয়ার্ড বিপলু আহমেদ গোটা তিনেক নিশ্চিত সুযোগ নষ্ট করলেও কিংসকে পয়েন্ট হারাতে হয়নি।
৬৬ মিনিট পর্যন্ত স্কোরলাইন ছিল ১–১। এরপরই ডি–বক্সের ডান পাশে নুহা মারংকে হেমন্ত ফাউল করলে ফ্রি–কিক দেন রেফারি। মিগেল ফিগেইরার ফ্রি–কিকে বল পেয়ে ছোট ডি–এর ভেতরে হেড নিয়েছিলেন নুহা। তাঁর হেড ফিরিয়ে দিয়েছিলেন শেখ রাসেলের গোলকিপার আশরাফুল ইসলাম। তবে ফিরতি বল পেয়ে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা খালেদ শাফি ডান পায়ের শটে গোল করেন।
এরপর শেখ রাসেলের ডিফেন্ডার ও গোলকিপারের ব্যর্থতায় গড়ানো শটে ৩–১ করেন রবসন। রবসনের এই গোলেই ম্যাচ শেষে ছিটকে যায় রাসেল। যোগ করা সময় মান্নাফ রাব্বি ৩–২ করলেও ততক্ষণে শেষ বাঁশির অপেক্ষায় সবাই।
২৩ মিনিটে ১–০ করেছিল শেখ রাসেল। ডি–বক্সের লাইনে বিশ্বনাথ গাডজেকে ফেলে দিলে সহকারী রেফারির ইশারায় পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি সাইমন। তবে সেই পেনাল্টি মেনে নেননি বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলাররা। তঁরা পেনাল্টির বদলে ফ্রি–কিকের দাবি জানান। কিন্তু রেফারি সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। সেই পেনাল্টি থেকে গোল করেন শেখ রাসেলের কিরগিজ ডিফেন্ডার আইজার আকমাতভ।
কিন্তু গোল শোধ করতে বেশি সময় নেয়নি কিংস। ৩৮ মিনিটে নুহা মারং অনেকটা ড্রিবলিং করে ডি–বক্সের বাঁ দিকে পাস বাড়িয়ে দেন রবসনকে। ব্রাজিলিয়ান তারকা দেখেশুনে ডি–বক্সের লাইনে ফাঁকায় দাঁড়ানো স্বদেশি মিগেল ফিগেইরাকে বল দেন। ফিগেইরা বাঁ পায়ের শটে ১–১ করেন।