দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ হলে ফিফা থেকে সরে যাবে ইউরোপের কিছু দল
বিশ্ব ফুটবলকে নাড়িয়ে দেওয়ার মতো একটা প্রস্তাব করেছে সৌদি আরব। ছেলে ও মেয়েদের জন্য দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ আয়োজিত হোক, চায় আরব দেশটি। ফুটবলে অনুন্নত দেশগুলোর কাছে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে সৌদির এ প্রস্তাব। এরই মধ্যে এ প্রস্তাবের পক্ষে-বিপক্ষে দাঁড়িয়ে গেছে দুই দল।
ফুটবলে অনুন্নত দেশগুলোর জনপ্রিয়তার মুখেও সৌদির এ প্রস্তাব আলোর মুখ দেখবে কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন জাগছে। কারণ, উয়েফা হুমকি দিয়ে রেখেছে, দরকার হলে বিশ্বকাপে খেলবে না ইউরোপের কোনো দল। এবার তো নর্ডিক দেশগুলোর ফেডারেশন জানিয়েই দিল, এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলে ফিফা থেকে পদত্যাগ করবে তারা।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ফেডারেশন ফিফার এ পরিকল্পনায় নাখোশ। তবে নর্ডিক দেশগুলোর ফেডারেশন যেন একটু বেশিই নারাজ। নাহয় ফিফা ছেড়ে যাওয়ার ঘোষণা দেবে কেন? ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সঙ্গে সেদিন ৫৫ ফেডারেশনের সভাপতি একটা ওয়েব সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। ইউরোপের কেউই বিশ্বকাপের এ পরিকল্পনায় সায় দেননি।
স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি লুইস রুবিয়ালেসই যেমন ফিফার এ পরিকল্পনাকে রীতিমতো ভীতিকর বলেছেন, ‘দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ আলোচনা করার একটা পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে। ব্যাপারটা নিয়ে খেলোয়াড়, কর্মকর্তা, অন্যান্য ফেডারেশনের সঙ্গে কথা বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে, এটা বেশ ভীতিকর। ফুটবলের জন্য যা অত্যন্ত ক্ষতিকর।’
এ ব্যাপারে উয়েফার সঙ্গে থাকার কথা জানিয়ে দিয়েছেন রুবিয়ালেস, ‘এ ব্যাপারে উয়েফার সঙ্গেই আছি আমরা। আমার মনে হয়, আমাদের চার বছর পরপর হওয়া বিশ্বকাপের প্রক্রিয়াকে সমর্থন জানানোই উচিত। কারণটা পরিষ্কার। আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে। ভবিষ্যতে কেউ যাতে কষ্ট না পায়, সেটাও দেখতে হবে আমাদের। স্প্যানিশ ফেডারেশন চার বছর পরপর বিশ্বকাপ হওয়ার প্রক্রিয়াকেই সমর্থন জানাচ্ছে।’
রুবিয়ালেস তা–ও ঠান্ডা মাথাতেই ফিফার এ পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন। আরি লাহতি অবশ্য ওসব সৌজন্যবোধের ধারকাছ দিয়ে যাননি। নর্ডিক দেশগুলোর (ফিনল্যান্ড, সুইডেন, ডেনমার্ক, নরওয়ে, আইসল্যান্ড, ফারো আইল্যান্ড) অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র ফিনল্যান্ডের এই প্রতিনিধি সরাসরি হুমকি দিয়েছেন।
ফিফা দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ আয়োজন করলে ফিফা থেকে পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন লাহতি, ‘গত সপ্তাহে ফিফার এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছেন আমাদের মধ্যে। এ অসম্ভব।বর্তমান যে মডেলের ওপর ভিত্তি করে আমরা প্রতিযোগিতা আয়োজন করি, দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ আয়োজন করলে সেটা অনুসরণ করা সম্ভব হবে না। ফিফা যদি এ সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলে, তাহলে নর্ডিক ফুটবল ফিফা থেকে পদত্যাগ করবে। আমরা অন্যান্য পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারেও চিন্তা করব।’
এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে নরওয়ের আর্লিং হরলান্ড, মার্টিন ওডেগার্ড, ডেনমার্কের ডামসগার্ড, সুইডেনের আলেকজান্ডার আইজাকদের মতো খেলোয়াড়দের আর ফিফার প্রতিযোগিতায় দেখা যাবে না।