দল তো নয় যেন পাঁচমিশালি তরকারি!
সুইজারল্যান্ড দল দেখলে মনে হতে পারে, কেউ বুঝি বিশ্ব একাদশ সাজানোর ছোটখাটো চেষ্টা চালিয়েছিলেন, কিন্তু ঠিকঠাক গোছাতে পারেননি। বিদেশি খেলোয়াড়দের ভিড়ে সুইজারল্যান্ডের মূল খেলোয়াড়দের চেনাই মুশকিল হয়ে পড়েছে এবার।
বেশির ভাগ ফুটবল দলে দু-একজন বিদেশি খেলোয়াড় থাকেন। অনেকেই হয়তো জন্ম নেন এক দেশে কিন্তু খেলার জন্য বেছে নেন অন্য কোনো দেশকে। ফলে অনেক দেশেই দেখা যায় অন্য দেশের খেলোয়াড়। স্পেনের তিন স্ট্রাইকারের দুজনই যেমন ব্রাজিলে জন্ম নিয়েছেন। এটি অস্বাভাবিক কিছু নয়, কিন্তু সুইজারল্যান্ড যেন সব সীমাই ছাড়িয়ে গেছে।
সুইজারল্যান্ড দলে তো দেশি খেলোয়াড়দের চেয়ে বিদেশি খেলোয়াড়দের সংখ্যাই বেশি। গোলবার, ডিফেন্স, মিডফিল্ড, অ্যাটাক—কোথায় নেই বিদেশি খেলোয়াড়? সবখানেই আছেন বিদেশি খেলোয়াড়। জেরদান শাকিরি, ভালোন বেহরামিসহ দলের তারকা খেলোয়াড়দের অনেকেই নিখাদ সুইস নন।
কোচ ভ্লাদিমির পেতকোভিচের একদিক দিয়ে সুবিধাই হয়েছে। অন্যান্য দেশের তুলনায় সুইজারল্যান্ড দলে যুগোস্লাভিয়ান খেলোয়াড়ের সংখ্যাই বেশি। পেতকোভিচ নিজেও যুগোস্লাভিয়ান। তাই যুগোস্লাভিয়ান খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথোপকথনে সুবিধাই হয়েছে কোচের। সমস্যাও রয়েছে, যুগোস্লাভিয়ার পর দলে ক্যামেরুনের লোকজনই বেশি। এ ছাড়া দলে আফ্রিকার আরও কয়েকজন আছেন। আর সুইস খেলোয়াড় তো আছেনই। রণকৌশল সাজানোর চেয়ে সম্ভবত যোগাযোগ রক্ষা করতেই সময় বেশি গেছে পেতকোভিচের।
এত সব বাধা পেরিয়েও খেলোয়াড়দের সঙ্গে কোচ যে খুব ভালোই মানিয়ে নিয়েছেন, তা বিশ্বকাপ দেখেই বোঝা যাচ্ছে। যে ব্রাজিলকে এবারের টপ ফেবারিট মানা হচ্ছে, সেই ব্রাজিলের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে সুইজারল্যান্ড। আর দ্বিতীয় ম্যাচে সার্বিয়াকে হারিয়ে রীতিমতো গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখছে তারা।
দেখা যাক, এই পাঁচমিশালি দল নিয়ে সুইজারল্যান্ড আর কত দূর যেতে পারে!