তাঁর গোল বাড়াতে ইউনাইটেডকে কী করতে হবে, সুলশারকে বললেন রোনালদো
৫ ম্যাচ। ৫ গোল। এর মধ্যে দুই ম্যাচেই দলের জয়ে মূল ভূমিকা রেখেছে তাঁর গোল। অন্য দুই ম্যাচে দল না জিতলেও এক ম্যাচে দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন, অন্য ম্যাচে ফিরিয়েছেন সমতায়। এখন পর্যন্ত শুধু একটি ম্যাচে গোল পাননি।
কিন্তু খেলোয়াড়ের নাম যে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো! এতটুকুতেই তাঁর মন ভরবে কেন! হোক না তাঁর বয়স ৩৬!
জুভেন্টাস থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ফেরার পর ম্যাচপ্রতি গড়ে ১টি গোল করে চলেছেন, কিন্তু রোনালদোর আরও বেশি গোল চাই। সে জন্য কী করতে হবে, সেই বুদ্ধিও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কোচ উলে গুনার সুলশারকে নাকি সরাসরি বলে দিয়েছেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড।
ফুটবলবিষয়ক ওয়েবসাইট ইসপিএনে বিখ্যাত সাংবাদিক মার্ক ওগডেনের প্রতিবেদন, সুলশারকে রোনালদো একেবারে নির্দিষ্ট করে বলে দিয়েছেন, তাঁর গোল বাড়ানোর জন্য ইউনাইটেডের উচিত প্রতিপক্ষের অর্ধে বল আরও দ্রুত পাস দেওয়া।
১২ বছর পর ম্যান ইউনাইটেডে ফেরার পর থেকে ক্লাবটার সব ভালো কিছুতেই জড়িয়ে রোনালদো। তিনি যখন আলো ছড়িয়েছেন, ইউনাইটেড ভালো কিছু পেয়েছে। রোনালদো একাদশে ছিলেন, সব টুর্নামেন্ট মিলিয়ে মৌসুমে এখন পর্যন্ত এমন পাঁচ ম্যাচের তিনটিতে জিতেছে ইউনাইটেড, এর মধ্যে দুটিতে দলকে জেতাতে বড় ভূমিকা রোনালদোর গোলের।
নিউক্যাসলের বিপক্ষে ইউনাইটেডের জার্সিতে তাঁর পুনরাভিষেকের ম্যাচে ইউনাইটেডের ৪-১ গোলের জয়ে প্রথম দুই গোলই ছিল রোনালদোর। প্রথম গোলটি ইউনাইটেডকে ১-০ গোলে এগিয়ে দেয়, নিউক্যাসল সমতায় ফেরার পর আসে দ্বিতীয় গোলটি (২-১)। আর সর্বশেষ গত বুধবার চ্যাম্পিয়নস লিগে ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে রোনালদো খুব একটা ভালো না খেললেও যোগ করা সময়ে তাঁর গোলেই জিতেছে ইউনাইটেড।
এর বাইরে চ্যাম্পিয়নস লিগে গ্রুপে প্রথম ম্যাচে ইয়াং বয়েজের বিপক্ষে রোনালদোর গোল ইউনাইটেডকে এগিয়ে দিয়েছিল, কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে রোনালদোকে তুলে নেন সুলশার। ইউনাইটেড দ্বিতীয়ার্ধে দুই গোল খেয়ে ম্যাচটা ২-১ গোলে হারে। এরপর লিগে ওয়েস্ট হামের বিপক্ষে প্রথমে পিছিয়ে পড়া ইউনাইটেডকে সমতায় ফেরান রোনালদো, সে ম্যাচে পরে লিনগার্ডের গোল আর দে হেয়ার পেনাল্টি সেভে ২-১ গোলে জেতে ইউনাইটেড।
কিন্তু রোনালদোর আরও গোল চাই। সে কারণে প্রতিপক্ষের রক্ষণ গুছিয়ে ওঠার আগেই যাতে তিনি আঘাত হানতে পারেন, সে লক্ষ্যে সুলশারকে রোনালদো বলছেন, প্রতিপক্ষের অর্ধে আরও দ্রুত বল পাস দেওয়ার মতো কৌশলে ইউনাইটেডকে খেলাতে—দলের ভেতরের সূত্রের মাধ্যমে এমনটাই জানতে পেরেছে বলে দাবি ইএসপিএনের।
রোনালদোর হিসাবটা একদিক থেকে সহজই। ইউনাইটেড প্রতিপক্ষের অর্ধে, প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের সামনে যদি বল পাস দিতে বেশি সময় নেয়, তাহলে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডাররা নিজেদের গুছিয়ে নিতে এবং জায়গামতো চলে যাওয়ার ক্ষেত্রে সময় বেশি পাবেন। গত কয়েক বছরে ডি বক্সে দারুণ শিকারি বনে যাওয়া রোনালদোর জন্য তাতে গোল করা কঠিনই হয়ে পড়বে।
রোনালদো ইউনাইটেডে ফেরার পর থেকে তাঁকে মূল স্ট্রাইকার হিসেবেই খেলাচ্ছেন সুলশার। তাঁর পেছনে দুই উইঙ্গার হিসেবে খেলানো হচ্ছে তরুণ ম্যাসন গ্রিনউড ও জ্যাডন সাঞ্চোকে। দুজনই উইং থেকে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকতে পছন্দ করেন। এ দুজনের পেছনে মিডফিল্ড থেকে খেলা গড়ে দেওয়া এবং আক্রমণভাগে বলের জোগান দেওয়ার দায়িত্বটা পল পগবা ও ব্রুনো ফার্নান্দেজের। এখানে দুই উইংব্যাক অ্যারন ওয়ান-বিসাকা ও লুক শর ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ।
ইএসপিএন লিখেছে, ম্যান ইউনাইটেডের কোচদের বিশ্বাস, এই মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে ইউনাইটেডে যাওয়া ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারানের উপস্থিতি রক্ষণ থেকেই ইউনাইটেডের আক্রমণে ওঠার গতি বাড়িয়েছে। রক্ষণ থেকে মাঝমাঠ বা আক্রমণে পাস বাড়ানোর ক্ষেত্রে ভারানের দক্ষতা ও গতি হ্যারি ম্যাগুয়ার, ভিক্তর লিন্দেলফ ও এরিক বাইয়ির চেয়ে বেশি বলেই মনে হচ্ছে ইউনাইটেডের কোচদের।
তবে ইএসপিএন জানাচ্ছে, রোনালদোর দাবি মেনে আক্রমণভাগে গতি বাড়াতে, বক্সে রোনালদোর কাছে বল আরও দ্রুত পাঠানো নিশ্চিত করতে অনুশীলন মাঠে কাজ করে চলেছে ইউনাইটেড।