ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও লিওনেল মেসির যুগের শেষের দেখা মিলছে। ফুটবলে আগামী দশকে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইটা এমবাপ্পে আর হরলান্ডের মধ্যেই হবে—এ নিয়ে বাজি ধরার লোকই বেশি। এরই মধ্যে স্বপ্নের এ দ্বৈরথের স্বপ্ন দেখছেন সবাই। এমবাপ্পেকে তো বহুদিন ধরেই রিয়াল মাদ্রিদ পেতে চাইছে। ওদিকে হরলান্ডের প্রতি বার্সেলোনার আগ্রহটাও আর লুকিয়ে রাখার বিষয় নয়।
বার্সেলোনা ও রিয়াল সমর্থকদের মধ্যে তাই দুই তারকা নিয়ে আলোচনায় কোন পক্ষ কার স্তুতি গায়, সেটাও জানা এখন। কিন্তু বার্সেলোনার দানি আলভেজ নিজের পছন্দের কথা জানাতে গিয়ে ক্লাবের উল্টো পথে হাঁটছেন। এ দুই তারকাকে পেতে অনেক ক্লাবই আগ্রহী। অনেক ক্লাবই ওড়াতে চাচ্ছে টাকা। আলভেজের কথা, টাকা ওড়াতে চাইলে এমবাপ্পের জন্য ওড়ানো উচিত, হরলান্ডের পেছনে নয়।
কিলিয়ান এমবাপ্পে না আর্লিং হরলান্ড? এই প্রশ্নে বিভক্ত এখন ফুটবল। সে দ্বৈরথকে চিরস্থায়ী করে নেওয়ার দায়িত্বটা তাদের। কিন্তু একটি দ্বৈরথকে মোক্ষম করে তোলার উপযুক্ত পরিবেশও তো দরকার। মেসি-রোনালদো দ্বৈরথকে যেমন পূর্ণতা দিয়েছিল বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যকার শতাব্দী প্রাচীন লড়াই। সে লড়াইটা হরলান্ড-এমবাপ্পে তর্কেও ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা আছে। ২০১৭ সাল থেকেই এমবাপ্পেকে পেতে চাইছে রিয়াল মাদ্রিদ। বাজারে গুঞ্জন আছে সঙ্গে হরলান্ডকেও চাই ক্লাব সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের।
ওদিকে বার্সেলোনাও চাইছে হরলান্ডকে। ক্লাব সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা মৌসুমের শুরু থেকে ইঙ্গিতটা দিচ্ছিলেন। যদিও কদিন আগে আবার সমর্থকদের আশার বেলুন ফুটো করে বলেছেন, ক্লাবের আর্থিক অবস্থা আরও দুর্বল হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে কাউকে পেতে রাজি নন। তবু হরলান্ড ও বার্সেলোনাকে জড়িয়ে খবর সৃষ্টি হওয়া আটকাচ্ছে না। আর্থিক দিকটা সামাল দিতে পারলে হরলান্ডকে ক্লাবে টানতে যে দুবার ভাববে না বার্সা, সেটাও কারও অজানা নয়। আলভেজ অবশ্য হরলান্ড নয়, নিজের ক্লাবে এমবাপ্পেকেই চাইছেন।
২০১৭ সাল থেকে দুই বছর নেইমার ও এমবাপ্পের সঙ্গে পিএসজিতে খেলা ব্রাজিলিয়ান রাইটব্যাক এই জানুয়ারিতেই আবার বার্সেলোনায় ফিরেছেন। ক্লাবের পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় অবদান রাখতে এসেছেন, চাইছেন সোনালি দিনে ক্লাবকে ফেরাতে। কিন্তু সোনালি দিনের বার্সেলোনায় একজন মেসি ছিলেন। এই বার্সেলোনায়ও তো এমন একজনকে দরকার। তো, পুনর্গঠন প্রকল্পে এমবাপ্পে না হরলান্ড—কাকে তাঁর পছন্দ, স্পোর্তের এমন প্রশ্নে নিজের পছন্দ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘খেলার সবদিক মিলিয়ে হরলান্ডের চেয়ে এমবাপ্পে বেশি পরিপূর্ণ খেলোয়াড়।’
শোনা যাচ্ছে, হরলান্ডকে নিতে চাইলে পাঁচ বছরের জন্য দলবদল, বেতন ও বোনাস মিলিয়ে একটি ক্লাবকে ৩০ কোটি ইউরোর মতো খরচ করতে হবে। ওদিকে এমবাপ্পের জন্য রিয়াল যে প্রস্তাব দিচ্ছে, সেটাও প্রায় এমন অঙ্কের। পিএসজি তো তাঁকে দুই বছরের জন্য ধরে রাখতেই চোখ কপালে তোলা অর্থ সাধছে। আলভেজ বলছেন, এমন পাগলামি করতে হলে তিনি এমবাপ্পের জন্যই করবেন।
বার্সেলোনার দায়িত্বে থাকলে কাকে কিনতেন সেটাও জানিয়েছেন আলভেজ, ‘আমি হরলান্ডের জন্য কোনো পাগলামি করব না। সত্যি বলছি, ওর জন্য আমি অনেক অর্থ ব্যয় করতে আগ্রহী নই। আমি এমবাপ্পের জন্য অনেক অর্থ ব্যয় করব, কিন্তু হরলান্ডের জন্য নয়। আপনি যদি বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে চান, তাহলে সেটা সম্ভাব্য সেরা উপায়েই করতে হবে। আমার ওপর দায়িত্ব থাকলে আমি এমবাপ্পের ওপরই বাজি ধরতাম।’
এ মৌসুমে লিগ ও চ্যাম্পিয়নস লিগে ৩৫ ম্যাচে ২৩ গোল করেছেন এমবাপ্পে, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন আরও ১৯ গোল। ওদিকে ২২ ম্যাচে ১৯ গোল হরলান্ডের, ৭ গোলে করেছেন সহায়তা।