টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের কাঠগড়ায় সালাউদ্দিন
বিভিন্ন অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনকে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বাফুফে সভাপতিসহ দেশের সর্বোচ্চ ফুটবল সংস্থার আরও দুই শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও এই অনুসন্ধান চলছে। তাঁরা হলেন বাফুফের নির্বাহী সদস্য ও মহিলা কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ এবং প্রধান হিসাব কর্মকর্তা আবু হোসেন।
সম্প্রতি বাফুফে সভাপতি বরাবর পাঠানো চিঠিতে চলতি মাসের ৭ তারিখের মধ্যেই দুদকের কাছে আনুষঙ্গিক রেকর্ডপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ দুদকের চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
বাফুফের কাছে মোট ১১টি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নথিপত্র চেয়েছে দুদক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাফুফে সভাপতি হিসেবে সালাউদ্দিনের দায়িত্ব পালনকালে বাফুফের ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোর বিবরণ, সিলেট বিকেএসপিতে ফুটবল একাডেমি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ফিফা থেকে প্রাপ্ত অর্থ ও ব্যয়ের বিবরণ, ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বার্ষিক ও বিশেষ অডিট রিপোর্ট।
এ ছাড়া অন্য বিষয়গুলো হলো: এএফসি সলিডারিটি কাপ থেকে বাংলাদেশ নাম প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের রেকর্ডপত্র ও অংশগ্রহণ না করায় ২০ হাজার ডলার পরিশোধের সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র, ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের চ্যাম্পিয়ন প্রাইজমানি বাবদ নেপালকে ৫০ হাজার ডলার পরিশোধের রেকর্ড, একই বছরে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের প্রচার স্বত্ব নিয়ে চ্যানেল নাইনের সঙ্গে চুক্তি ও প্রচারের যন্ত্রপাতি ক্রয়ের বিল, বাফুফের টেকনিক্যাল ও স্ট্র্যাটেজিক ডিরেক্টর পল স্মলির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি ও বেতন-ভাতা পরিশোধের বিল, বাফুফের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের বিপরীতে ওভার ড্রাফটের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন ও ব্যয়ের রেকর্ডপত্র, জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক প্রধান কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফ ও সহকারী রেনে কোস্টারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি ও বেতন-ভাতা পরিশোধের রেকর্ডপত্র, ফিফা সভাপতির বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে ব্যয়ের রেকর্ডপত্র। এগুলোর সঙ্গে ফুটবল ফেডারেশনের গঠনতন্ত্রও চেয়েছে দুদক।
সূত্র জানায়, গত বছরের মাঝামাঝি কাজী সালাউদ্দিন ও অন্য দুজনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। দুদকের উপপরিচালক আহমারুজ্জামান অনুসন্ধান শুরু করেন। পুলিশের এই কর্মকর্তা নিজ বাহিনীতে ফেরত গেলে অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান আরেক উপপরিচালক নাসির উদ্দিন। তিনিই বাফুফে সভাপতি বরাবর চিঠিটি পাঠিয়েছেন। চিঠির বিষয়বস্তুতেই মূল অভিযোগের কথা উল্লেখ রয়েছে। সেখানে বলা হয়, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র চাওয়া হচ্ছে।