জিদান না গালতিয়ের—পিএসজিই দ্বিধায়
কী এক ঝামেলায়ই না পড়েছে পিএসজি!
মরিসিও পচেত্তিনোকে তারা কোচ হিসেবে চায় না, সে তো বহু পুরোনো খবর। দেড় মৌসুমে পিএসজিতে শুধু এবারের ফরাসি লিগ জেতা আর্জেন্টাইন কোচকে বিদায় করে দিতে দুই পক্ষের সমঝোতা হয়ে গেছে, পচেত্তিনোকে বরখাস্ত করার সব প্রক্রিয়াও শেষ বলে জানাচ্ছে ফুটবলবিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন। কিন্তু পচেত্তিনোর জায়গায় কে বসবেন, সেটিই যেন ঠিক করে উঠতে পারছে না পিএসজি!
জিনেদিন জিদানকে পিএসজি নতুন কোচ হিসেবে চায়, সে-ও অনেক পুরোনো খবর। কিন্তু জিদান অতটা চান না। এদিকে পিএসজির নতুন ফুটবল উপদেষ্টা লুইস কাম্পোস চান জিদান নন, লিলের কোচ ক্রিস্তোফ গালতিয়েরই হোন পিএসজির নতুন কোচ। এ নিয়ে এখন পিএসজির ভেতরেই টানাটানি চলছে বলে জানাচ্ছে ফরাসি সংবাদমাধ্যম লে’কিপ।
ইএসপিএন আজই জানিয়েছে, পিএসজি আর পচেত্তিনোর মধ্যে ছাড়াছাড়ির ব্যাপারে সমঝোতা হয়ে গেছে। পিএসজির সঙ্গে চুক্তিতে এক বছর বাকি পচেত্তিনোর, এ অবস্থায় বরখাস্ত করার কারণে তাঁকে কী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে সেটি ঠিকঠাক হয়ে গেছে। গতকাল বুধবারই এ নিয়ে সমঝোতা হয়ে গেছে বলে জানাচ্ছে ইএসপিএন।
পচেত্তিনোর বিদায় তো চূড়ান্ত হয়ে গেছে গত মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোতে পিএসজির বিদায়ের পরই। কিন্তু তাঁর বদলে এখন কাকে আনবে পিএসজি, সেটি যেন আরও জটিল রূপ নিচ্ছে।
গত মৌসুমের শেষ দিকে কিলিয়ান এমবাপ্পের চুক্তি নবায়নের সময় ফরাসি তারকার শর্ত মেনে পিএসজি সে সময়ের ক্রীড়া পরিচালক লিওনার্দোকে বরখাস্ত করেছে। সে জায়গায় দায়িত্ব পেয়েছেন এমবাপ্পে মোনাকোতে থাকার সময়ে ক্লাবটির ক্রীড়া পরিচালক হিসেবে কাজ করা লুইস কাম্পোস।
মূলত তরুণ প্রতিভা তুলে আনা, তাঁদের চড়া দামে বিক্রি করায় খ্যাতি কাম্পোসের। তাঁর সময়ে এমবাপ্পে, বের্নার্দো সিলভাদের মোনাকো অবশ্য ফরাসি লিগও জিতেছিল ২০১৭ সালে। এরপর লিলে যান কাম্পোস, সেখানেও ২০১৯ সালে লিল লিগ জেতে।
কাম্পোস থাকার সময়ে লিলে যে কোচ ক্লাবটিকে লিগ শিরোপা এনে দেন, সেই গালতিয়েরকেই এখন পিএসজির কোচ হিসেবে চান কাম্পোস। কিন্তু এ নিয়ে যেন পিএসজিতে দ্বিধার সৃষ্টি হয়েছে। পিএসজির কাতারি মালিকপক্ষ জিদানকেই চান।
রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে দুই দফায় অবিশ্বাস্য সাফল্যের দেখা পাওয়া ফরাসি কিংবদন্তি ২০২০ সালের পর থেকে কোচিং থেকে দূরেই আছেন। কিন্তু পিএসজির কোচ হওয়ার চেয়ে কাতার বিশ্বকাপের পর ফ্রান্স জাতীয় দলের কোচ হওয়ার দিকেই বেশি মনোযোগ জিদানের।
এদিকে ফরাসি সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, কাম্পোসও জিদানকে চাইছেন না। এর পেছনে অবশ্য একটা ভিন্ন উদ্দেশ্যও দেখে ফরাসি সংবাদমাধ্যম লে’কিপ। তাদের বিশ্লেষণ, জিদানের তারকাখ্যাতি আর প্রভাবের কারণে পিএসজিতে নিজের ক্ষমতা হ্রাস পাবে বলে শঙ্কায় আছেন কাম্পোস।
নাম না প্রকাশের শর্তে পিএসজির নবনিযুক্ত ফুটবল উপদেষ্টার ঘনিষ্ঠ এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে লে’কিপ লিখেছে, ‘যে কোচের ক্যারিশমা অনেক বেশি, যিনি ক্লাব সভাপতির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখার ক্ষমতা রাখেন, এমন কোচদের পছন্দ নয় কাম্পোসের। তাঁর পছন্দ জিদানের বিপরীত কেউ, কারণ জিদানের বিশ্বজোড়া সুনাম আছে, কাতারের সঙ্গে যোগাযোগও আছে।’